পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পাঁচ মাসের মধ্যে প্রশাসনে সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এ মাসের শেষে অথবা আগামী মাসে এ পদোন্নতি দেয়া হবে। এছাড়া জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে নিয়োগের জন্য কর্মকর্তা বাছাইয়ের (ফিটলিস্ট) প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের সভাপতিত্বে তাঁর অফিস কক্ষে সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি) সভায় সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতি চূড়ান্ত করা হবে।
আগামী ৩১ মে স্থানীয় সরকার বিভাগ সিনিয়র সচিব এস. এম. গোলাম ফারুক অবসরে যাচ্ছেন। অন্যদিকে মন্ত্রিপরিষদের (সমন্বয় ও সংস্কার) বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মো, শামসুল আরেফিন আগামী মাসে অবসরে যাবেন। সে কারণে সচিব পদে পদোন্নতি নিয়ে এসএসবিতে আলোচনা হবে।
এদিকে নানা কারণে পদোন্নতিবঞ্চিতদের মধ্যে লেফটআউট সিনিয়র ব্যাচের কর্মকর্তারা তাদের বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনায় নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও এসএসবি’র সদস্যদের কাছে লিখিত আবেদন দিয়েছেন। যাদের মধ্যে ৮৪ ও ৮৫ ব্যাচের কয়েকজন কর্মকর্তা ইনকিলাবকে বলেন, তাদের চাকরি আছে ৬ মাস থেকে বড়জোর দেড় বছর। বিদায়বেলায় টানা তৃতীয় মেয়াদে থাকা আওয়ামী লীগ সরকার নিশ্চয় কিছু একটা করবে। তারা বলেন, কেন এমন হল, কেন তারা সময়মতো পদোন্নতি পাননি, সে বিতর্ক নিয়ে এখন তাদের কোনো আগ্রহ নেই। তারা শুধু পারিবারিক ও সামাজিক মর্যাদার প্রশ্নে বিদায়বেলায় অন্তত একটি ধাপে পদোন্নতি প্রত্যাশা করছেন।
জানা গেছে, প্রশাসনে পদ না থাকলে ও ইতিবাচক ধারায় পদোন্নতি হবে। সুনির্দিষ্ট ও গ্রহণযোগ্য কারণ ছাড়া কাউকে প্রাপ্য পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করা হবে না। জুনে তিনস্তরে সম্ভাব্য পদোন্নতি দেয়ার সময় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি )। শুধু কোনো সংস্থার নেতিবাচক রিপোর্টের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে না। প্রয়োজনে তা কাউন্টার ইন্টিলিজেন্সের মাধ্যমে যাচাই করা হবে। সেক্ষেত্রে ডিসির মাধ্যমে গোপনীয় প্রতিবেদন সংগ্রহ করা হবে। পাশাপাশি দক্ষ ও জনমুখী প্রশাসন গড়ে তুলতে যোগ্য কর্মকর্তাদের যথাসম্ভব দ্রæত উপরের ধাপে তুলে আনা হবে। এ উদ্দেশ্যে যোগ্যতা অর্জনের ৬ মাসের মাথায় ১১তম ব্যাচকে পদোন্নতি দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর ফলে সরকার চাইলে আগামী ২ বছরের মধ্যে এ ব্যাচ থেকেও সচিব নিয়োগ দিতে পারবে। প্রশাসনে সচিবের খাতায় এবার ৮৬ ব্যাচের কর্মকর্তাদের নাম অন্তর্ভূক্ত করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, ২০১৯ সালে ২০৬ জন এবং ২০২০ সালে ১৮২ জন কর্মকর্তা অবসরে যাবেন। এদের মধ্যে ২০১৯ সালে ১৯৮২ নিয়মিত ব্যাচের ৬ জন, ৮২ বিশেষ ব্যাচের ৭ জন, ৮৪ ব্যাচের ৭০ জন, ৮৫ ব্যাচের ৯৫ জন এবং ৮৬ ব্যাচের রয়েছে ২৮ জন। আগামী বছর ৮২ নিয়মিত ব্যাচের ১ জন, ৮৪ ব্যাচের ৪১ জন, ৮৫ ব্যাচের ১০১ জন এবং ৮৬ ব্যাচ থেকে অবসরে যাবে আরও ৩৯ জন। এর ফলে প্রশাসনে বড় পদশূন্যতা তৈরি হবে। এ কারণে আগামী বছর থেকে ৮৬ ব্যাচ ছাড়াও পর্যাক্রেম ৯ম, ১০ম ও ১১তম ব্যাচ থেকে সচিব পদে পদায়ন করা কঠিন কিছু হবে না। আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে প্রশাসনে বড় তিনটি ব্যাচের বেশির ভাগ কর্মকর্তা অবসরে চলে যাবেন। এর ফলে পিরামিড কাঠামো ভেঙে পড়া প্রশাসনের পুঞ্জীভূত দীর্ঘদিনের সংকটের অবসান হবে। এরপর পদোন্নতিজট এমনিতেই কমে আসবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সুত্রে জানায়, প্রশাসনে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দিতে প্রায় ৪শ’ কর্মকর্তাকে বিবেচনায় নেয়া হবে। এর মধ্যে নিয়মিত ব্যাচ হিসেবে ১১তম ব্যাচকে বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে। এ ব্যাচের ১২৭ জন কর্মকর্তা যুগ্মসচিব হন ২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর। যুগ্মসচিব পদে ২ বছর চাকরি করলে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জিত হয়। ইতিমধ্যে তাদের সে সময়সীমা পার হয়েছে। বর্তমানে অতিরিক্ত পদে কর্মকর্তার সংখ্যা ৪৬৩ জন। এর মধ্যে ৮২ নিয়মিত ব্যাচের ১ জন, বিশেষ ব্যাচের ২ জন, ৮৪ ব্যাচের ৪৮ জন, ৮৫ ব্যাচের ১৫৮ জন, ৮৬ ব্যাচের ১১০ জন, ৯ম ব্যাচের ৪৮ জন এবং ১০তম ব্যাচের ৯৬ জন। কর্মরত ৬২২ জন যুগ্মসচিবের মধ্যে ৮২ বিশেষ ব্যাচের ১ জন, ৮৪ ব্যাচের ৩৪ জন, ৮৫ ব্যাচের ৯৩ জন, ৮৬ ব্যাচের ৫০ জন, ৯ম ব্যাচের ২৫ জন, ১০ম ব্যাচের ৩৮ জন, ১১ ব্যাচের ১৫৮ জন, ১৩তম ব্যাচের ১৬০ জন এবং ১৫ ব্যাচের ৬৩ জন। অপরদিকে প্রশাসনে বর্তমানে উপসচিব আছেন ২ হাজার ২৭ জন। এর মধ্যে ৮৪ ব্যাচের ৭ জন, ৮৫ ব্যাচের ৩০ জন, ৮৬ ব্যাচের ১৮ জন, ৯ম ব্যাচের ৭ জন, ১০ম ব্যাচের ১৬ জন, ১১তম ব্যাচের ১৯ জন, ১৩তম ব্যাচের ২৯ জন, ১৫তম ব্যাচের ৩০ জন, ১৭তম ব্যাচের ৫৩ জন, ১৮তম ব্যাচের ৮৭ জন, ২০তম ব্যাচের ২৬২ জন, ২১তম ১৫৭ জন, ২২তম ২৫৫ জন, ২৪তম ২৯৭ জন এবং ২৫তম ব্যাচের ১৩৮ জন।
এদিকে পদোন্নতিবঞ্চিত দাবিদার কর্মকর্তাদের অনেকে ইনকিলাবকে বলেন, যাদের চাকরি ১-২ বছর আছে তাদের বিষয়টি যেন মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয়। তারা ধারণাগত জ্যিষ্ঠতা ফিরে পেতে জোরালো দাবি জানিয়ে বলেছেন, এটি তাদের অর্জিত অধিকার। আজকে যারা গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে আছেন তাদের অনেকে এ সুবিধা পেয়েছেন। তা সত্তে¡ও অনিবার্য কারণে জ্যেষ্ঠতা ফেরত দিতে না চাইলেও যেন বিশেষ বিবেচনায় সময় প্রমার্জন করা হলেও চাকরির শেষজীবনে এসে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করা না হয়।
তারা বলছেন, বর্তমান সরকারই টানা দ্বিতীয় মেয়াদে থাকাবস্থায় পদোন্নতি বঞ্চিত (লেফটআউট) কর্মকর্তাদের জন্য বিশেষ এসএসবি’র ব্যবস্থা করেছিল। তাই কর্মরতদের মধ্যে সিনিয়র ব্যাচের (৮৪, ৮৫ ও ৮৬) যারা এখনও উপসচিব ও যুগ্মসচিব পদে চাকরি করছেন তাদের জন্য সরকার মানবিক হতে পারে। এজন্য তারা প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ হস্তক্ষেপও কামনা করেন।
অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দিতে ৩৯৩ জন কর্মকর্তাকে বিবেচনায় নেয়া হতে পারে। এর মধ্যে বিবেচনার তালিকায় ১১তম ব্যাচের পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তার সংখ্যা ১২৬ থেকে ১৩০-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়তে পারে। অবশিষ্ট ২৬৭ জন কর্মকর্তার নাম বিবেচ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে লেফটআউট (পূর্বে পদোন্নতি না পাওয়া) হিসেবে। এদের মধ্যে প্রকৃত অর্থে লেফটআউট কর্মকর্তা রয়েছেন ৮২ বিশেষ ব্যাচের ১ জন, ৮৪ ব্যাচের ৩৪ জন, ৮৫ ব্যাচের ৯৩ জন, ৮৬ ব্যাচের ৫০ জন, ৯ম ব্যাচের ২৫ জন এবং ১০ম ব্যাচের ৩৮ জন। এছাড়া ১১ ব্যাচের যুগ্মসচিব আছে ১৫৮ জন। তবে লেফটআউট কর্মকর্তাদের মধ্যে শুধু যাদের যুগ্মসচিব পদে ২ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে কেবল তাদেরই বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে। যদি শেষ পর্যন্ত এই নীতি বহাল থাকে তাহলে প্রায় চারশ’ কর্মকর্তার নাম পর্যালোচনা করে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির সুপারিশ করবে এসএসবি।
পদোন্নতি বঞ্চিত (লেফটআউট) কর্মকর্তাদের মধ্যে যাদের এখনও যুগ্মসচিব পদে ২ বছর পূর্ণ হয়নি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ইনকিলাবকে বলেন, সরকার চাইলে বিশেষ বিবেচনায় তাদের আসন্ন এসএসবিতে বিবেচনায় নিয়ে পদোন্নতি দিতে পারে। মেধা তালিকার ওপরের দিকে থাকা ১৯৮৫ ব্যাচের একজন কর্মকর্তা প্রতিবেদককে বলেন, টানা ৬ বার বঞ্চিত হয়ে তিনি যুগ্মসচিব হয়েছেন ৫ ব্যাচ জুনিয়র ১৩তম ব্যাচের সঙ্গে।
তারা বলেন, প্রশাসনে এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা হল- জুনিয়রের অধীনে সিনিয়র কর্মকর্তাকে কাজ করতে হচ্ছে। বিষয়টি একেবারে নতুন নয়, তবে সংখ্যাটা এখন অনেক বেশি। কেননা ১০ম ব্যাচ পর্যন্ত অতিরিক্ত সচিব হয়ে গেছে। সেখানে যদি ৮৪-৮৫ ব্যাচের কর্মকর্তা যুগ্মসচিব থাকেন তাহলে উভয়ের জন্য খুবই বিব্রতকর। এক সময় যেসব কর্মকর্তা তাদের অধীনে চাকরি করেছেন এখন তাদের অধীনে উল্টো চাকরি করতে হচ্ছে। ফলে পরিস্থিতি সহজে অনুমান করা যায়। তিনি বলেন, তবে আশার কথা হল- বর্তমান জনপ্রশাসন সচিব খুবই প্রফেশনাল। ব্যাচমেট কিংবা সিনিয়র কোনো কর্মকর্তার এ রকম বিড়ম্বনার তথ্য পেলে তিনি তা সম্মানজনক সমাধান দেয়ার চেষ্টা করেন।
লেফটআউটের এক কর্মকর্তা ইনকিলাবকে বলেন, তাদের জন্য নতুন করে বিবেচনায় আসা কর্মকর্তাদের পদোন্নতি সংখ্যা কমানোর পক্ষে তারা নন। বরং তারা মনে করেন, একটি ব্যাচকে পদোন্নতির জন্য বিবেচনা করার সময় শর্তপূরণ থাকলে প্রত্যেককে দেয়া উচিত। এতে প্রশাসনে গতিশীলতা আরও ত্বরান্বিত হবে।
এদিকে গত সপ্তাহে যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার ৩৫ জন কর্মকর্তাকে বার্ষিক গোপন প্রতিবেদন (এসিআর) জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।