পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
উমর ফারুক আলহাদী : এবার সাড়ে ৫ হাজার অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে রাজউকের উচ্ছেদ অভিযান চলবে। সংস্থাটির নিজেদের তালিকা অনুয়ায়ী ওই সাড়ে ৫ হাজার ভবন অনুমোদনবিহীন এবং নকশাবহির্ভূতভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, বিমান উড্ডয়নের জন্য যে সব ভবন বিপজ্জনক সেগুলোও উচ্ছেদ করা হবে। এ তালিকায় রয়েছে ৫৭৬টি ভবন। এসব ভবনের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা পাশাপাশি রাজউকের বেদখল হওয়া প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা মূল্যের জায়গা জমিও উদ্ধারের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে বাস্তবায়ন হবে কি না এ নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। গত কয়েকদিন মহানগরীর উত্তরা, গুলশান ধানমন্ডিসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় রাজউক অভিযান চালিয়েছিল। কিন্ত অভিযান শুরু পর পরেই প্রভাবশালীদের চাপের মুখে পড়ে রাজউক বেকায়দায় পড়ে। এ নিয়ে গত দুইদিন ধরে রাজউক ভবনের কর্মকর্তাদের ওপর চলছে হুমকি-ধমকি। প্রভাবশালীদের প্রচ- চাপে এখন তারা দিশেহারা। রাজনৈতিক প্রভাব কাটিয়ে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করার পাঁয়তারা চালাছে একাধিক প্রভাবশালী মহল। এ অভিযোগ রাজউকের অথারাউজড কর্মকর্তাদের। তারা বলছেন, বাধা বিঘœ অতিক্রম করে আগামী রোববার থেকে আবার শুরু করা হবে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান। সেউ সাথে বেদখলকৃত জমিও উদ্ধার করা হবে বলে তারা জানিয়েছেন।
রাজউকের উত্তরা জোনের অথারাইজড অফিসার মিজানুর রহমান জানান, নানা কারণে এতদিন বেদখকৃত জমি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এবার তা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, রোববার থেকে পুরোদমে অভিযান চলবে। রাজউকের জমি দখল করে কাঁচাবাজার গড়ে তোলায় শুধু উত্তরা এলাকায় কয়েক হাজার কোটি টাকার জমি বেদখল হয়ে গেছে। এ জমি উদ্ধার হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই অবৈধ দখল মুক্ত করা হবে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের বিধি অনুসারে গুলশান এভিনিউ এলাকায় ১৫০ ফুটের উঁচু ভবন নির্মাণ করা যায় না। কর্তৃপক্ষ নির্মাণের ছাড়পত্রও সে অনুসারে দেয়। এ ক্ষেত্রে ১৫ তলার বেশি উঁচু ভবন হতে পারে না। অথচ গুলশান উত্তরাসহ বিমানবন্দরের আশপাশ এলাকায় ২০ তলা থেকে ২২ তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। রাজউক এসব ভবনের তালিকা করে মালিকদের বার বার নোটিশ দেয়ার পরেও তা আমলে নিচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট মালিকেরা।
জানা যায়, রাজউকের নকশা ছাড়াই বা নকশায় পরিবর্তন ঘটিয়ে নির্মিত ভবনের সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার। এগুলোর মধ্যে ৭৩টি ভবনের মালিক প্রভাবশালী ব্যক্তি বা গোষ্ঠী। এদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয় না। তবে ছোটখাটো ত্রুটির জন্য অনেক ভবনের বিরুদ্ধে নানা সময় অভিযান চালায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এমন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা যায়, প্রায় আট মাসে যেসব তালিকাভুক্ত স্থাপনার বিরুদ্ধে রাজউক অভিযান চালায়, সেগুলোর মালিক প্রভাবশালী নন। নকশায় সামান্য পরিবর্তন করে বারান্দা বাড়ানো হয়েছে বা কিছু ত্রুটি ধরা পড়েছে, এমন স্থাপনার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। রাজউক বলছে, জনবলসংকট ও মামলার কারণে তারা বড় স্থাপনার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারে না। তবে আগামী রোববার থেকে আবার উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে।
রাজউকের চেয়ারম্যান জিএম জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া বলেছেন, আইন ও বিধিমালা মোতাবেক এবং আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী রাজউক কাজ করছে। অনেক অননুমোদিত বা অবৈধ স্থাপনার মালিক মামলা করায় সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। তবে রাজউকের অভিযান থেমে আছে, এ অভিযোগ সত্যি নয়। অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে রাজউকের অভিযান অব্যাহত আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নয়তলার অনুমোদন নিয়ে গুলশানে ২২ তলা জব্বার টাওয়ার, ছয়তলার স্থলে উত্তরায় ১৪ তলার নাটোর টাওয়ার, গুলশানে অনুমোদনহীন ২০ তলা প্রিমিয়ার স্কয়ার, পরীবাগে অনুমোদনহীন গার্ডেন টাওয়ারসহ বেশ কয়েকটি বহুতল ভবন রাজধানীতে নির্মিত হয়েছে। কিন্তু নোটিশ করা ছাড়া রাজউকের আর কোনো দৃশ্যমান তৎপরতা নেই।
উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ২ নম্বর সড়কে ‘নাটোর টাওয়ার’ নামে ১৪ তলা ভবনটি করা হয়েছে। ছয়তলা আবাসিক ভবনের অনুমোদন নিয়ে এটি করা হয় ১৪ তলা বাণিজ্যিক ভবন। মূল নকশার ফাইল থেকে নথি সরিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে একই নম্বরে ভুয়া কাগজ ঢুকিয়ে এই কেলেঙ্কারি করা হয়েছে বলে রাজউক সূত্রে জানা যায়।
গুলশান এভিনিউর ১৩৫ নম্বর সড়কের ৪২ নম্বর প্লটে নির্মিত সুউচ্চ জব্বার টাওয়ার। নয়তলার অনুমোদন নিয়ে ২২ তলা করা হয়েছে এটি। ২০০৭ সালে ২২ তলা পর্যন্ত নির্মাণকাজ শেষ করা হয়। রাজউকের নথিপত্র ছাড়াও এলাকায় গিয়ে এসব তথ্য জানা যায়।
এ ছাড়া রাজধানীতে অনুমোদনহীন, অনুমোদিত নকশার বাইরে তলা বাড়ানো এবং ঝুঁকিপূর্ণ যে পাঁচ হাজার ভবনের তালিকা করা হয়েছে, রাজউকের সেই তালিকায়ও জব্বার টাওয়ারের নাম রয়েছে।
রাজউকের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, নকশা বদল করার অপরাধে এবং ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এই বাড়িটি ভাঙার জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এতে বাধা আসে সরকারি দলের একজন প্রবাবশালী নেতার পক্ষ থেকে।
মামলার কারণে গুলশান এভিনিউর ৭৮ নম্বর প্লটে ১৮ তলা প্রিমিয়ার স্কয়ারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে রাজউক। অনুমোদন ছাড়াই ২০ তলা বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করেছেন ভবনের মালিক। রাজউক সূত্র জানায়, রাজউকের কাছে এই বাড়ির কোনো নকশা নেই। রাজউক জানায়, অনেক আগে থেকেই তাঁদের কাছে অনুমোদিত নকশা চাওয়া হলেও তা আমলেই নেয়া হয়নি। পরে রাজউক তিন দফায় নোটিশ দিয়ে নকশা চাইলে তারও কোনো জবাব দেওয়া হয়নি। ভবন ভাঙার চূড়ান্ত নোটিশ দেয়ার পর প্রিমিয়ার স্কয়ারের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। এরপর রাজউকের নোটিশের ওপর স্থগিতাদেশ দেয়া হয়। এরই মধ্যে ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হয়ে যায়।
সিভিল এভিয়েশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বিমান উড্ডয়নে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো উচ্ছেদের জন্য কয়েক দফায় রাজউককে বলা হয়েছে। কিন্ত এখ পর্যন্ত তা কার্যকর করা হয়নি। বিমানবন্দরের পাশে অর্থাৎ ফ্লাইং জোনের ভিতরে সিভিল এভিয়েশনের বেঁধে দেয়া নির্ধারিত উচ্চতার বেশী উচ্চতার ভবন নির্মাণ রোধ করতে হবে। এ ব্যাপারে যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নেয়ার প্রয়োজন বলে কর্মকর্তারা দাবী করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।