পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কিশোরগঞ্জের চলন্ত বাসে গণধর্ষণে নার্সকে হত্যার ঘটনায় আটক পাঁচ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। জেলার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আল মামুন গতকাল দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে আসামিদের উপস্থিতিতে এ আদেশ প্রদান করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাজিতপুর থানার ওসি (তদন্ত) সারোয়ার জাহান আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। আসামিরা হচ্ছে বাস চালক নূরুজ্জামান, চালকের সহকারী লালন মিয়া, রফিকুল ইসলাম রফিক, খোকন মিয়া ও বকুল মিয়া।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে নিহত নার্স শাহিনুর আক্তার তানিয়ার বাবা মো. গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বাজিতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। স্বর্ণলতা বাসের চালক গাজীপুরের কাপসিয়ার নূরুজ্জামান, হেলপার লালন মিয়া, আল আমিন ও আব্দুল্লাহ আল-মামুনসহ চারজনকে এ মামলার এজহারভুক্ত আসামি করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে এ মামলায় আসামি করা হয়। এজহারভুক্ত আসামি আল আমিন ও আব্দুল্লহ আল-মামুন পলাতক রয়েছে। এদিকে তানিয়াকে গণধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। সংগ্রহ করা আলামত বিশ্লেষণ করে কিশোরগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে গঠিত মেডিকেল দল প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে, মৃত্যুর কিছু সময় আগে শাহিনুর গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। জানতে চাইলে জেলা সিভিল সার্জন হাবিবুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা নিশ্চিত মেয়েটি গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার আরও কিছু ধাপ বাকি আছে। বাকি পরীক্ষাগুলো দ্রুত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তখন চ‚ড়ান্তভাবে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে ধর্ষণের প্রাথমিক আলামত পাওয়ার কথা উল্লেখ করে পুলিশের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।’
তানিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় শোকে স্তব্ধ এবং হতভম্ব এলাকার লোকজন। বাড়ির কাছে নিজের এলাকায় মেয়েটি এমন ঘটনার শিকার হবে তা ভাবতে পারছেন না কেউই। যে মেয়েটি শক্ত হাতে পরিবারের হাল ধরেছিলেন তাকে হারিয়ে এখন দিশেহারা স্বজনরা। কারও সান্ত¡নায় থামছে না তাদের কান্না আর হাহাকার।
চার ভাই ও দুই বোনের সংসারে তানিয়া ছিলেন সবার ছোট। তিনি ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে নার্সের চাকরি করতেন। তার বড় ভাই কফিল উদ্দিন সুমন পিজি হাসপাতালের ব্রাদার। তারা দুজনে মিলেই পরিবারটি টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন। মাত্র তিন মাস আগে দীর্ঘদিন ক্যানসারে ভুগে তাদের মা মারা যান। বাবা গিয়াসউদ্দিন একা হয়ে যাওয়ায় তাকে সঙ্গ দিতে ছুটিছাটা নিয়ে প্রায়ই গ্রামে যেতেন তানিয়া। বাবাকে সান্ত¡না দিতেন, স্বপ্ন দেখাতেন।
রোজা উপলক্ষে বাবা ও ভাইদের সঙ্গে ইফতার করতে বাড়ি আসছিলেন তিনি। কিন্তু পরিবারটির সব স্বপ্ন, সব আনন্দ চুরমার করে দিয়েছে সোমবার রাতের ওই নৃশংস ঘটনা। এসব কথা বলতে বলতে অঝোরে কাঁদছিলেন তানিয়ার দুই ভাই। বারবার বোনের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাইছিলেন তারা।
উল্লেখ্য, সোমবার রাতে ঢাকার বিমানবন্দর থেকে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের পিরিজপুর রুটে চলাচলকারী ‘স্বর্ণলতা’ পরিবহনের বাসে নার্স শাহীনুর আক্তার তানিয়াকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বাজিতপুর উপজেলায় কিশোরগঞ্জ-ভৈরব আঞ্চলিক মহাসড়কের বিলপাড় গজারিয়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। তানিয়া কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরি ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের মো. গিয়াসউদ্দিনের মেয়ে। সোমবার রাতে ঢাকা থেকে কটিয়াদী ও বাজিতপুরের পিরিজপুর হয়ে নিজ গ্রামে ফিরছিলেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।