Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভ্যাট নির্ভর বাজেট

নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নই বড় চ্যালেঞ্জ : জিডিপি ৭ দশমিক ২ শতাংশ, মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশ, বাজেট ঘোষণা ২ জুন

প্রকাশের সময় : ২৭ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:২০ পিএম, ২৬ মে, ২০১৬

হাসান সোহেল : ঘোষিত রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়ন ও মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে চায় সরকার। আর তাই দেশের উন্নয়নের সোপান হিসেবে পড়িচিত বড় বড় নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে আসন্ন (২০১৬-১৭) অর্থবছরের জন্য তিন লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রণয়ন করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে পদ্মা সেতুর মতো মেট্রো রেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ অন্য বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি নিশ্চিত করতে চায়। বৃহৎ অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি উচ্চহারে প্রবৃদ্ধি অর্জন, কর্মসংস্থান, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ সহায়ক খাতগুলোতে বিশেষ বরাদ্দ থাকছে নতুন বাজেটে।
যদিও চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে বড় ঘাটতি বিদ্যমান। তারপরও রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ৯২ হাজার কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ধরা হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন বরাদ্দসহ হিসাব করলে এডিপির আকার দাঁড়াবে ১ লাখ ২৩ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা। মোট দেশজ উৎপাদেনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হারের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাজেটে ভর্তুকি বাবদ ব্যয় বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২২ হাজার ৯শ’ ৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে কৃষিতে যাবে ৯ হাজার কোটি। ৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি ধরা হয়েছে পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের জন্য। চলতি অর্থবছরের চেয়ে আগামী অর্থবছরের বাজেটের আকার বাড়ছে প্রায় ১৫ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হচ্ছে ১৬ শতাংশ, এডিপির আকার বাড়ছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং ঘাটতি বাড়ছে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। যদিও সরকার বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখতে চাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার দুই লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দুই লাখ আট হাজার কোটি টাকা।
উচ্চ প্রবৃদ্ধির রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রায় ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ভ্যাট থেকে সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায়ের প্রত্যাশা করা হলেও অর্থনীতিবিদদের মতে, নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হবে এ অর্থ বছরের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদদের মতে, নতুন করের ক্ষেত্র নির্ধারণ, এনবিআরের প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর ফাঁকি রোধে কার্যকর উদ্যোগ না নিলে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেছেন, প্রশাসনিক দক্ষতা বাড়ানো ছাড়া বাজেট বাস্তবায়নের ‘বেহাল দশা’ কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। তিনি বলেছেন, বাস্তবতার সঙ্গে বাজেটের সম্পর্ক ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে। অর্থ বরাদ্দ দিলেই হবে না, সেটা ঠিকমতো খরচ হচ্ছে কি না, কাজ সময়মতো শেষ হচ্ছে কি না- তা নিশ্চিত করতে হবে।
গত পাঁচ বছরের মধ্যে এবার এডিপি বাস্তবায়নের হার কম জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু শুধু অসম্ভব টার্গেট নিয়ে লাভ কী; যদি সেটা বাস্তবায়ন করা না যায়? মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, প্রথমেই বাজেটের টার্গেট ঠিক করতে হবে। শুধু শুধু উচ্চাভিলাষী-অসম্ভব টার্গেট নিয়ে বসে থাকলে চলবে না। বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে, বাস্তবসম্মত বাজেট দিতে হবে। একই সঙ্গে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটকে ভিত্তি ধরলে আগামী বাজেটের আকার বাড়বে ২৯ শতাংশের মতো, যা অবাস্তব বৃদ্ধি বলে আমি মনে করি। সে কারণেই বাস্তবতার সঙ্গে বাজেটের সম্পর্ক ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসছে।
নতুন বাজেটে বড় (মেগা) প্রকল্পগুলোর জন্য আলাদা বরাদ্দ রাখার বিষয়ে সরকারকে স্বাগত জানান মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন শুরু করে সাহসের পরিচয় দিয়েছে সরকার। জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়াতে এ ধরনের আরও অনেক বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে আমাদের।
এদিকে করদাতার সংখ্যা বাড়ানো গেলে কর হার কমিয়েও বেশি রাজস্ব আদায় করা সম্ভব; আর সেই পথেই বাজেট বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার পথ দেখছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। তিনি বলেছেন, রাজস্ব আদায় বাড়াতে হলে সরকার ও করদাতা- দু’পক্ষই যাতে লাভবান হয়, সে উপায় বের করতে হবে। একই সঙ্গে যদি সবাই মিলে করদাতার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো যায় তাহলে কর হার কমিয়েও বেশি রাজস্ব আদায় করা সম্ভব।
ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, বাজেটের এই আকার মোটেও বড় নয়। তিন লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার যে বাজেটের কথা বলা হচ্ছে, তা জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। কিন্তু কাক্সিক্ষত বাজেট হতে হবে জিডিপির কমপক্ষে ২০ শতাংশ।
সে হিসেবে আমরা এখনও অনেক পিছিয়ে। তাছাড়া আমরা এখন ৭ শতাংশের উপরে জিপিডি প্রবৃদ্ধি অর্জন করছি। এখন কথা হচ্ছে, বাজেট মানেই চ্যালেঞ্জ। আকাক্সক্ষা থাকতে হবে। সেই আকাক্সক্ষা যাতে পূরণ হয়; বাস্তবায়ন হয়, সেদিকে বেশি নজর দিতে হবে। একই সঙ্গে বাজেটে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বাড়ানো সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন তিনি। যদি রাজস্ব আদায় বাড়ানো না যায়, তাহলে বাজেট বাস্তবায়ন কঠিন হবে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান আগামী বাজেট যাতে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) নির্ভর না হয় সে দিকে গুরুত্বারোপ করেছেন। আগামী জুলাই থেকে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায় নিয়ে দেখা দেয়া বিতর্ক সমাধানের জন্য আগামী দুই থেকে তিন বছরে ক্রমান্বয়ে মূসক আইন বাস্তবায়ন করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের খেয়াল রাখতে হবে আগামী বাজেট যেন ভ্যাটনির্ভর না হয়। আয়করের উপর জোর দিতে হবে। কেননা, আয়কর একটি প্রত্যক্ষ কর। যারা সামর্থ্যবান তারাই শুধু আয়কর দেয়। ভ্যাট হচ্ছে পরোক্ষ কর। যা জনসাধারণ দিয়ে থাকে।
অর্থনীতির আকার বাড়ায় প্রতিবছরই বাড়ছে জাতীয় বাজেটের আকার। এবার বেশ আগেই অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের বাজেট হতে পারে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকার। কয়েক বছর ধরেই বাজেট বাস্তবায়নে রাজস্ব সংগ্রহে ভ্যাটকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে সরকার। নতুন বাজেটে এ নির্ভরতা আরও বাড়ছে। এই বড় বাজেটের ব্যয়ের যোগান দিতে এনবিআরের ওপর পড়ছে ২ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব সংগ্রহের ভার। অথচ চলতি অর্থবছর এনবিআর’কে দেয়া ১ লাখ ৭৬ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে প্রথম নয় মাসে অর্জন মাত্র ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা।
অর্থনীতিবিদদের মতে, কর দাতার সংখ্যা বাড়ানো ও নতুন করের ক্ষেত্র তৈরি করতে না পারলে আগামী অর্থ বছরেও রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না। এনবিআর সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বলেন, ব্যয়ের বাজেট অনুযায়ী প্রবৃদ্ধি ধরতে যেয়ে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বেশি করতেই হচ্ছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য খাত, ক্ষেত্র, করদাতার সংখ্যা বাড়ানো এই কাজগুলো করতে হবে। এর জন্য গবেষণা প্রয়োজন। এছাড়া আগামী অর্থবছরে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকার রাজস্ব বাড়ানোর চিন্তা করলেও ব্যবসায়ীদের বিরোধিতার কারণে এই আইন বাস্তবায়ন বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে মত অর্থনীতিবিদদের। অর্থনীতিবিদ তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন নিয়েও অনেক ধোয়াশা রয়ে গেছে। সার্বিকভাবে ভোক্তা এবং ব্যবসায়ীদের উপর চাপ না ফেলে বাস্তবায়ন করা যাবে কি না, সেদিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো কিভাবে কর আদায়ের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক সক্ষমতা আরো বাড়াতে পারছি। আমাদের কর ফাঁকি দেয়ার যে প্রবণতা রয়েছে সেটা কতখানি কমাতে পারছি।
ব্যবসায়ীদের মতে, সর্বক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই বাজেটে ভ্যাট আইন সংশোধন করে বিভিন্ন স্তরে ভ্যাট প্রদান ও প্যাকেজ ভ্যাট বহাল রাখাসহ টার্নওভার ট্যাক্স কমানোর দাবি। রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে স্বল্পমেয়াদী কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের করের আওতায় আনা, বাজেটে আমদানি শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত পুন:বিবেচনা ও বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থাকে কার্যকর করার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।
যদিও সরকার প্রতি অর্থবছরই বিশাল অংকের বাজেট দিয়ে বড় ধরনের ঝুঁকি নিচ্ছে। এবারও সরকার সে পথেই হাঁটছে। কিন্তু এবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বাজেটকে ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন না। তার মতে, এখন আমাদের এই সক্ষমতা রয়েছে। আমরা বাজেটের আকার জিডিপি ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ঘোষণা করার ক্ষমতা রয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, ২০১৭-১৮ অর্থবছর শেষে অর্থাৎ ২০১৮ সালের শেষ দিকে বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হবে। বাংলাদেশে সাধারণত কোনো সরকারের মেয়াদের শেষ এক-দেড় বছরজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলে। তাই শেষ অর্থবছরে উন্নয়ন কর্মকা- বাস্তবায়ন ব্যাহত হয়। এটি মাথায় রেখেই অবকাঠামো খাতের উন্নয়ন যতটা সম্ভব ২০১৬-১৭ অর্থবছরেই বাস্তবায়ন করতে মনোযোগী সরকার। তিনি বলেন, সরকার আগামী অর্থবছরের অগ্রাধিকার খাতগুলো চিহ্নিত করেছে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্যে নতুন বাজেটে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের উন্নয়নসহ সার্বিকভাবে মানবসম্পদ উন্নয়নে বাড়তি নজর দেয়া হবে। বিদ্যুৎ, গ্যাস, সড়ক, রেলওয়ে ও বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন বিশেষ গুরুত্ব পাবে। এ ছাড়া কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলা, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে বাড়তি বরাদ্দ দেয়া হবে।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে নতুন অর্থবছরের বাজেট সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, আগামী বাজেট আরো কার্যকর করতে বড় প্রকল্প ও ক্যাপিটাল বাজেট নামে দুটি আলাদা বাজেট করার চিন্তা আছে।
নতুন বাজেটে এডিপিতে এক লাখ ১০ হাজার ৭শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আগামী বাজেটের এডিপিতে বরাদ্দের বড় অংশ দৃশ্যমান হবে সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোতে। গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় আগামী বাজেটেও সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব পিপিপিতে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ৩ হাজার কোটি টাকা।
পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, রাস্তাঘাট ও রেলের ক্ষেত্রে আমরা সরকারের গুরুত্বকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। আগামী এক দেড় বছরের মধ্যে বিদ্যুতের সমস্যাও থাকবে না। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ভালো একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, গ্যাস পেট্রোল ও ডিজেল আমদানি করা হোক’।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, আগামী অর্থবছরের এডিপিতে প্রকল্প অন্তর্ভুক্তকরণের ক্ষেত্রে সুষম উন্নয়ন ও উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জন, আয় বৃদ্ধি, দারিদ্র্য নিরসন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানোর ওপর জোর দেয়া হবে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন ও পুষ্টিমান উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সম্প্রসারণ, মানবসম্পদ উন্নয়ন, পানিসম্পদ ও পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন, রপ্তানি প্রসার ও শিল্পায়ন, বিদ্যুৎ-জ্বালানি এবং যোগাযোগ অবকাঠামোর উন্নয়ন, নিরাপদ পানি ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তোলা, লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন এবং জলবায়ু সংবেদনশীল ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন কর্মসূচিকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
আগামী ২ জুন ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট ঘোষণা করা হবে। এটি  দেশের ৪৬তম বাজেট। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ওইদিন বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে এ বাজেট উপস্থাপন করবেন। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের এটি তৃতীয় বাজেট। আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের এটি অষ্টম বাজেট। তবে এছাড়া এরশাদ সরকারের আমলে অর্থমন্ত্রী হিসেবে ১৯৮২-৮৩ এবং ১৯৮৩-৮৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটও ঘোষণা করেন তিনি। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২ জুন সংসদে আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট, চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট ও ২০১৬ সালের অর্থবিল উপস্থাপন করা হবে। অর্থবিল পাস হবে ২৯ জুন এবং মঞ্জুরীসহ অন্যান্য দাবি পাস হবে ৩০ জুন। এর আগে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সমাপনী বক্তব্য রাখবেন।
চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের ওপর আলোচনা শুরু হবে ৬ জুন এবং ৭ জুন এটা পাস হবে। নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হবে ৮ জুন এবং শেষ হবে ২৮ জুন। ছুটির দিন ছাড়া মোট ১৫ কার্যদিবস এ সাধারণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভ্যাট নির্ভর বাজেট
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ