Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

মুসল্লিদের ভিড় তারাবিতে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০১৯, ১২:০৪ এএম | আপডেট : ১২:১১ এএম, ৮ মে, ২০১৯

পবিত্র মাহে রমজানের চাঁদ দেখার পর থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লীদের মনে আনন্দের বন্যা বয়ে চলেছে। তাই সবাই যে যার মতো কাজ সেরে রোজা রাখার নিয়তে এশার আজান শোনা মাত্র তারাবি নামাজের জন্য মসজিদে ভিড় করেছেন। প্রথম তারাবিতে দেশের মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন :
স্টাফ রিপোর্টার মাগুরা থেকে জানান: প্রথম রমজানকে সামনে রেখে মাগুরা জেলার ওলামা মাসয়েখসহ ধর্মপ্রাণ দীনদার মমিন মুসলমানরা পবিত্র মাহে রমজান পালনের উদ্দেশ্যে তারাবি নামাজের জামাতে শরিক হন। মাগুরা জেলায় এক যোগে ১৪৯২টি মসজিদে তারাবির জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে মাগুরা সদর উপজেলায় ৬৪০ টি, শ্রীপুর উপজেলায় ২৪৯টি, মহম্মাদপুর উপজেলায় ৩৪৩টি এবং শালিখা উপজেলায় ২৬০টি। এ তথ্য ইসলামীক ফাউন্ডেশনের। এর বাইরেও মসজিদ রয়েছে বলে কয়েকজন ইমাম জানান। জেলার বৃহত্তম জামাত অনুষ্ঠিত হয় মাগুরা শহর জামে মসজিদে। এখানে ইমামতি করেন মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি রইস উদ্দিন। মাগুরা সরকারি কলেজ জামে মসজিদ, হাজী সাহেব মাদরাসা জামে মসজিদ, পিটিআই জামে মসজিদ, জজ কোর্ট জামে মসজিদ,পুলিশ লাইন জামে মসজিদ, নতুন বাজার জামে মসজিদ, স্টেডিয়ামপাড়া জামে মসজিদ, পানি ভবন জামে মসজিদ, পারনান্দুয়ালী ব্যাপরীপাড়া জামে মসজিদ, পারনান্দুয়ালী মোল্লাপাড়া বাইতুন নূর জামে মসজিদ, বাস টার্মিনাল জামে মসজিদসহ মাগুরা জেলার ৪ উপজেলার ১৪৯২ টি মসজিদে একযোগে হাজার হাজার মুসল্লী সিয়াম সাধনার উদ্দেশ্যে তারাবির নামাজে শরিক হন।
চান্দিনা (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদাতা জানায় : কুমিল্লার পাড়ায় পাড়ায় খতমে তারাবির নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা। সন্ধ্যার পর কুমিল্লার পাড়ার মসজিদে মসজিদে মধুর কণ্ঠে তারাবি নামাজে কোরআন তেলাওয়াত করছেন হাফেজ সাহেবগণ। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কুমিল্লার পাড়া-মহল্লার কোনো মসজিদেই তিলধারণের জায়গা নেই। বেশ কিছু মসজিদে বাইরে সামিয়ানা টাঙিয়ে তারাবির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোনো কোনো মসজিদের আঙিনা ছাড়িয়ে রাস্তায় জায়নামাজ, চাঁদর ও পাটিবিছিয়ে মুসল্লিদের তারাবির নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে। কুমিল্লার রাণীর বাজারের ব্যবসায়ী আলমগীর জানান, রোজায় খতমে তারাবির নামাজ আদায়ের জন্য তিনি বিকেলে ব্যবসায়িক কাজকর্ম গুটিয়ে ফেলেন। সন্ধ্যার আগেই তিনি ঢুকে পড়েন মসজিদে। জামাতে মাগরিবের নামাজ আদায়ের পর তিনি আর মসজিদ থেকে বের হননা। সেখানে বসেই নফল নামাজ আদায় ও কোরআন পাঠসহ নানা ইবাদত করেন। মসজিদ থেকে বের হলে পরে এসে হাফেজ সাহেবের কাছাকাছি কাতারে জায়গা পাওয়া না যায়, এই আশঙ্কায়তার মতো অনেকেই মাগরিবের নামাজ আদায় শেষে মসজিদেই অবস্থান করেন। তারাবির নামাজ ফরজ না হলেও এই নামাজে মুসল্লিদের ভিড় সম্পর্কে চান্দিনা উপজেলা সদরের মসজিদে নামাজ পড়তে আসা সামছুল আরেফিন নামের এক নামাজি জানান, এটি অনেকটা ধর্মীয় আনন্দের অনুষঙ্গে পরিণত হয়েছে। বিশাল কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায়ের মধ্যদিয়ে অনেকেই মানসিক পরিতৃপ্তি খুঁজে পান।
ল²ীপুর জেলা সংবাদদাতা জানায়: পবিত্র মাহে রমজান মাসের প্রথম দিনে জেলার সামগ্রিক দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। ল²ীপুর চকবাজারস্থ কেন্দ্রীয় মসজিদসহ প্রত্যেকটি মসজিদে নামাজ আদায়ে মুসল্লির ঢল নেমেছে। মসজিদ গুলোতে নানা বয়সী মুসল্লিদের উপস্থিতি ছিলো ব্যাপক। আবহাওয়ায় তীব্র গরম থাকায় মুসুল্লিরা এসি সংযুক্ত মসজিদগুলোতে ভিড় জমায়।
পবিত্র রমজানের প্রথম তারাবি নামাজ আদায়ের জন্য অধিকাংশ মসজিদের ছাদে ও বারান্দায় শামিয়ানা টাঙিয়ে বাড়তি মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের জন্য জায়গা করতে হয়েছে।
সোমবার রাত ৮টায় ল²ীপুর চকবাজারস্থ কেন্দ্রীয় মসজিদে এশার নামাজের জামায়াত শুরু হয় এবং এর পরেই খতমে তারাবি অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া ল²ীপুর পৌর শহরের তীতাখাঁ জামে সমজিদ, লিল্লাহ জামে সমজিদ, স্টেশন জামে সমজিদ, কালেক্টরেট ভবন জামে মসজিদ, সামাদ জামে মসজিদসহ বিভিন্ন মসজিদে রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে এশার নামাজের জামায়াত শুরু হয়। এশার নামার ও তারাবির নামাজ শেষে ইমামগণ দেশ-জাতি ও মুসলিম উম্মার কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।
সিরাজগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানায়: সিরাজগঞ্জ জেলা শহরে প্রথম তারাবি নামাজ আদায়ে প্রচুর ধর্মপ্রাণ মানুষের সমাগম ঘটে। স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভিন্ন আমেজে ও আনন্দে উৎসাহে এ জামাতে অংশ নেন মুসল্লীরা। সয়াধানগড়া (ভাঙ্গাবাড়ী) মসজিদ ও বারান্দায় স্থান সঙ্কুুলান না হওয়ায় মসজিদের বাইরে মুসল্লিদের স্থান করে দিতে হয়। ছোট-বড়, বয়স্ক, বৃদ্ধ এমন কি অসুস্থ অনেকেই এই প্রথম তারাবিতে অংশগ্রহণ করে এলাকায় রেকর্ড সৃষ্টি করে। এই জামে মসজিদের পেশ ইমাম চরছোনগাছা ইসলামী ফাজিল মাদরাসার আরবী বিভাগের প্রভাষক মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম নিজেই অভিভূত হয়ে পড়েন। তিনি মনে করেন এভাবে প্রতি ওয়াক্তে যদি এমন জামাত হতো তাহলে দেশে মারামারি, হানাহানি, মামলা-মোকদ্দমা, অন্যায় অপরাধ কমে যেত। কিন্তু রমজান চলে গেলেই মুসল্লি কমে যায়। এটা সত্যিই দুঃখজনক।
লালমনিরহাট জেলা সংবাদদাতা জানায়: লালমনিরহাটে প্রথম রমজানের তারাবিতে মসজিদে মসজিদে মুসল্লীদের উপছে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। সন্ধায় রমজানের চাঁদ দেখার সাথে সাথে রমজানকে স্বাগত জানিয়ে সাধারণ মুসল্লীরা তারাবির নামাজের প্রস্তুতি গ্রহণ করে মসজিদে আসতে থাকে। অল্প সময়ের মধ্যেই মসজিদের বারান্দাসহ মূল মসজিদ মুসল্লীতে ভরে যায়।
ফেনী জেলা সংবাদদাতা জানায়: ফেনীতে পবিত্র মাহে রমজানের চাঁদ দেখার পর থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লীদের মনে আনন্দের বন্যা বয়ে চলেছে। তাই সবাই যে যার মতো কাজ সেরে রোজা রাখার নিয়তে এশার আযান শোনা মাত্র নামাজের পূর্বেই ফেনীর মসজিদ গুলোতে সোমবার মুসল্লিদের উপছে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। সরেজমিনে ফেনীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত কেন্দ্রীয় বড় জামে মসজিদ, জহিরিয়া জামে মসজিদ, কোর্ট মসজিদ, তমিজিয়া মসজিদ ও পাগলা মিয়ার তাকিয়া মসজিদসহ পাড়া মহল্লার মসজিদ গুলোতে গিয়ে এসব দৃশ্য দেখা যায়।
ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা জানায় : ফরিদপুর শহরের প্রাচীন চক বাজার জামে মসজিদে সোমবার দিবাগত রাতে তারাবির নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফরিদপুর শহরে চকবাজার জামে মসজিদে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও বৃহত্তর তারাবির নামাজ আদায় করেছেন শতশত ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা।
পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা জানায়: এবারের প্রথম তারাবির নামাজে পটুয়াখালী বড় জামে মসজিদে শত শত ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা নামাজ আদায় করেন। রাত পৌনে ৯ টায় নামাজ আরম্ভ হওয়ার আগেই সম্পূর্ণ মসজিদ মুসল্লীতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। বয়স্ক মুরব্বীরাসহ ছোট ছোট শিশুরা পর্যন্ত বড়দের হাত ধরে ২০ রাকাত নামাজ পড়তে চলে আসে মসজিদে।
শহরের আদালত পাড়ার বাসিন্দা এইচ এম অনোয়ার হোসেন জানান, মহান আল্লাহর নির্দেশিত রমজান মাস শুরু হয়ে গেছে রমজানের পরিপূর্ণতা অর্জনের নিয়তে তারাবি নামাজ পড়তে এসেছি।
পটুয়াখালী বড় জামে মসজিদের খতিব ও জেলা ইমাম সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মাওলানা আবু সাইদ বলেন, পটুয়াখালী জেলা শহরে ১১৯ টি জামে মসজিদ রয়েছে। রমজান এলেই শহরের অধিকাংশ মসজিদ তারাবিতে মুসল্লীদের দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। এবারে বড় জামে মসজিদে মুসল্লীদের গরমে যাতে নামাজ পড়তে কোন কষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে শীতাতাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাসহ সব ধরনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রমজান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ