পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের সভাপতি ও হেফাজত আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেছেন, সরকার ইসলামবিরোধী শিক্ষানীতির আলোকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকসহ শিক্ষার বিভিন্ন স্তর থেকে ইসলামী শিক্ষা ও মুসলিম সংস্কৃতির প্রতি উদ্দীপনামূলক বিষয়াবলী বাদ দিয়ে হিন্দুত্ববাদ ও নাস্তিক্যবাদের বিষয়াবলী যুক্ত করেই থেমে থাকেনি, প্রস্তাবিত শিক্ষা আইন-২০১৬-এর মাধ্যমে সরকার কওমি মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকেও ধ্বংস করতে ও শিকল পরাতে চাচ্ছে এখন। এই লক্ষ্যে কিছু অপতৎপরতা ইতোমধ্যেই লক্ষ করা যাচ্ছে। কয়েকটি সংস্থার লোকজন সরলমনা কওমি আলেমদের নেতৃস্থানীয় কারো কারো কাছে কওমি শিক্ষাকে সরকারী স্বীকৃতি দেওয়ার টোপ দিয়ে আলেমদের পায়ে শেকল পরাতে চাচ্ছে। আমাদের সকলকেই এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। যারা সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ইসলাম ও মুসলিম সংস্কৃতির প্রতি উদ্দীপনামূলক বিষয়গুলো বাদ দিয়ে নাস্তিক্য ও হিন্দুত্ববাদের বিষয় সন্নিবেশিত করে এ দেশের ৯২ ভাগ মুসলমানের ধর্মীয় বিশ্বাস ও আদর্শবিরোধী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করে চলেছে, তাদের কাছ থেকে কিসের স্বীকৃতি নেব আমরা! মূলত স্বীকৃতির নাম দিয়ে তারা কওমি মাদরাসা শিক্ষার স্বকীয়তা ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য উচ্ছেদ করে এই দেশে ইসলামী শিক্ষার সর্বশেষ এই অবলম্বনটাকেও ধ্বংস করে দিতে চায়।
তিনি বলেন, তাদের এই অপতৎপরতা উলামা-মাশায়েখ, মাদরাসার শিক্ষক-ছাত্র ও তৌহিদি জনতা কখনোই সফল হতে দিবে না। মনে রাখতে হবে, কওমি মাদরাসার অর্থই হচ্ছে, জনগণের মাদরাসা। এই মাদরাসাসমূহ কোষাগারের অর্থে চলে না, সরাসরি জনগণই এসব মাদরাসা চালায়। গতকাল (বুধবার) বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের শীর্ষ কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে বোর্ডের সভাপতি ও হেফাজত আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফী এই বক্তব্য রাখেন। বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী, বেফাক মহাসচিব মাওলানা আব্দুল জাব্বার জাহানাবাদী, মাওলানা মুফতী জসীম উদ্দীন, মাওলানা মুহাম্মদ ওমর, বোর্ডের কেন্দ্রীয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মুফতী আবু ইউসুফ, মাওলানা মুনির আহমদ, মাওলানা শফিউল আলম প্রমুখ।
বেফাক সভাপতি ও হেফাজত আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সভাপতিত্বে দারুল উলূম হাটহাজারী মাদরাসা মহাপরিচালকের কার্যালয়ে বিকেল ৫টা থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত দেড় ঘণ্টা স্থায়ী বৈঠকে জাতীয় শিক্ষা নীতি-২০১০ ও প্রস্তাবিত শিক্ষা আইন- ২০১৬, জাতীয় ও কওমি মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থার নানা দিক এবং কওমি সনদের স্বীকৃতি বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়। বৈঠকে বিদ্যমান স্কুল পাঠ্যবইয়ে নাস্তিক্য ও হিন্দুত্ববাদের বিষয়াবলী সংযোজনসহ ধর্মহীন শিক্ষানীতি ও প্রস্তাবিত শিক্ষা আইনের বিভিন্ন ধারা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বেফাক কর্মকর্তাগণ বক্তব্য রাখেন।
বৈঠকে হেফাজত আমীর আল্লামা শাহ আহমদ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আজ শুধু স্কুল পাঠ্যবই বা সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থা নয়, নাস্তিক্যবাদী চক্র খাঁটি ইসলামী শিক্ষার কেন্দ্র কওমি মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থার উপরও শকুনি নজর দিয়েছে। কওমি সনদের স্বীকৃতির নামে তারা বিভিন্নভাবে সরলমনা আলেমদেরকে প্ররোচিত করতে চাইছে। তারা নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিভ্রান্ত করে উলামায়ে কেরামের পায়ে শেকল পরাতে চাচ্ছে। তিনি বলেন, তৎকালীন ব্রিটিশ আমলেও যখন আমাদের শাসন ব্যবস্থা স্বাধীন ছিল না, তখনও দারুল উলুম দেওবন্দসহ গোটা ভারতীয় উপমহাদেশের হাজার হাজার কওমি মাদরাসা স্বাধীনভাবে নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রেখে পরিচালিত হয়েছিল। এমনকি বর্তমানে আমাদের বিশাল প্রতিবেশী দেশ ভারতেও কট্টর হিন্দুত্ববাদি বিজেপি শাসনামলে সেই দেশের কওমি মাদরাসাসমূহ সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে ইসলামী শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে। স্বীকৃতি নিয়ে দেওবন্দের আলেমগণও কোন দেন-দরবার বা প্রস্তাব আলোচনা তুলছেন না। এ নিয়ে বিজেপি সরকারও কোন প্রশ্ন তুলেনি। অথচ ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে আজ ইসলাম, মুসলমান ও ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থা সবচেয়ে বেশি হুমকির শিকার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।