Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা সরকারের দুরভিসন্ধিমূলক চক্রান্ত-রিজভী

নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রে আগের মতোই তান্ডব চলছে

প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহম্মেদ বলেছেন, দেশনেত্রীর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের সরকারের অনেক আগেরই দুরভিসন্ধিমূলক চক্রান্ত। কিন্তু কোনো লাভ হবে না। উনার (খালেদা জিয়া) উপস্থিতি দেশে লাখ লাখ মানুষকে অনুপ্রাণিত করে। কোনো কারাগারেই উনাকে বন্দি করে
রাখতে পারবে না। নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রে আগের মতোই তা-ব চলছে দাবি করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন সরকারের খাঁচাবন্দি পাখি হয়ে আছে।
গতকাল বুধবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই মন্তব্য করেন।
রিজভী আহম্মেদ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের মতোই পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের তা-ব অব্যাহত আছেই। সেই তা-বের পরও নির্বাচন কমিশনের নির্বিকার ভূমিকা আমরা বিভিন্ন এলাকা থেকে পাচ্ছি।
ভোট চুরি, ভোট ডাকাতির এতসব মহাযজ্ঞের পরেও কোনো রকম গণতান্ত্রিক সৌজন্যের  তোয়াক্কা না করেই আজকেও হয়তো নির্বাচন কমিশন বলবে, আগের নির্বাচনগুলোর চেয়ে আজকের নির্বাচন আরো সুষ্ঠু হয়েছে। যেমন তারা প্রতিবার বলে থাকে। নির্বাচন কমিশন যেন সরকারের খাঁচাবন্দি পাখি। তার যেন কিছুই করার নেই, শুধু সরকারের নির্দেশ মান্য করা ছাড়া।
পৌরসভা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোট বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা চলবে।
তৃতীয় ধাপের এ ভোটে নরসিংদীর ঘোড়াশাল ও রায়পুরা, লক্ষ্মীপুরের সদর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা, নোয়াখালীর সদর ও সেনবাগ, ফেনীর ছাগলনাইয়া, কক্সবাজারের টেকনাফ ও খাগড়াছড়ির রামগড়  পৌরসভায় নির্বাচন হচ্ছে। নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সকাল থেকে শুরু হওয়া নোয়াখালীর সদর, ফেনীর ছাগলনাইয়া, ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার কসবা পৌরসভার বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোট দখল ও ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে সিল মারা নানা ঘটনা তুলে ধরেন রিজভী।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে বিভিন্ন জায়গা থেকে খবর আসছে বিভিন্ন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা দখল করে ব্যালট পেপারে সিল মারছে। বিরোধী দলের প্রার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। ভোটকেন্দ্রগুলো বহিরাগত দ্বারা ঘেরাও হয়ে আছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের প্রশাসনকে জানালেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এই যে জেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেট তাদের মধ্যে চমৎকার হানিমুন নির্বাচনকে  কেন্দ্রে করে আমরা দেখেছি।  
অভিযোগ করে রিজভী বলেন, নির্বাচন কমিশন শুধু সরকারের সমস্ত উস্কানি, প্ররোচনা, অসভ্যতা, রক্তারক্তি, খুনোখুনি, প্রাণহানি, জখম করে পঙ্গু করার ঘটনাগুলোকে সমর্থন দিচ্ছে, প্রশ্রয় দিচ্ছে। কমিশনের এই নির্লজ্জ ভূমিকা নিয়ে বিরোধী দলগুলোতেই কেবল নয়, অধিকার গ্রুপ, ইলেকশন মনিটরিং গ্রুপ, সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী, কলামিস্টরা নির্বাচন কমিশনের আজ্ঞাবাহী ভূমিকা নিয়ে অসংখ্য অভিযোগ, আপত্তি ও নিন্দা জানালেও কমিশন বেহায়ার মতো তা দেখেও না দেখার ভান করছে।
মনে হয় কমিশনের স্নায়ু শিথিল হয়ে গেছে, মস্তিষ্ক অলস হয়ে গেছে, হৃদয় দুর্বল হয়ে গেছে। এই লক্ষ্যভ্রষ্ট নির্বাচন কমিশন যেন, এদেশের লাশে পরিণত হওয়া নির্বাচন ব্যবস্থা সাক্ষাৎ হাড় হিম করা প্রেতাত্মা।
তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের যে নির্বাচনগুলো হচ্ছে, তাতে সন্ত্রাস, সহিংসতা, জীবনহানি, রক্তপাত ও পঙ্গুত্ব¡বরণ, আক্রমণ অব্যাহতভাবে চলছে, এই ধারা থামছে না। যদিও নির্বাচন কমিশন বারবার বলেন, আগের চেয়ে এবার সহিংসতা কম হয়েছে। সরকারের সারাদেশে সরকারদলীয় ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীদের জোর করে জিতিয়ে দেয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে তৃণমূলে একদলীয় শাসনকে দৃঢ় করা। এই উদ্দেশ্য নিয়ে ১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠন করা হয়েছিলো। সেটি ব্যর্থ হওয়ায় এবার গণতন্ত্রের আলখেল্লায় দুর্বিনীত সন্ত্রাসের আশ্রয়ে নব্য বাকশাল ব্যবস্থা কায়েম করে চলেছে। তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত একদলীয় নিষ্ঠুর শাসনের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ হলো এসব স্থানীয় সরকার নির্বাচন।
যাত্রাবাড়ীতে নাশকতার মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে মামলায় দায়ের সরকারের দুরভিসন্ধিমূলক চক্রান্ত। অনেক দিন ধরে সরকার এটা করে আসছে।
এই সরকার গণবিচ্ছিন্ন সরকার বলেই দেশনেত্রী, যিনি হারানো গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার জন্য লড়াই করছেন, তাকে ভয় পেয়ে এই বেআইনি, দুর্বিনীত কাজগুলো করছে। যাতে তিনি (খালেদা জিয়া) মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু এটি তাদের ভুল ধারণা।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হারুন অর রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মাহবুবুর রহমান শামীম, আব্দুুল আউয়াল খান, তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা সরকারের দুরভিসন্ধিমূলক চক্রান্ত-রিজভী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ