পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
করপোরেট কর কমানোর সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, আগামী বাজেটে করপোরেট কর হার কমানো হবে না।
গতকাল বৃহস্পতিবার এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক রিরপোটারদের সংগঠন ‘ইকোনমিক রিপোর্টার ফোরাম’ (ইআরএফ)-এর সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি এই তথ্য জানান। এসময় ইআরএফ-এর পক্ষ থেকে এনবিআরের কাছে করসেবা সহজীকরণসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।
মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, করপোরেট কর হারে ছাড় দিলে যদি ব্যবসা বাড়বে, এমন নিশ্চিয়তা দিলে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হবে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আগামী অর্থবছরের বাজেট কার্যকরের দিন থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হবে। তিনি তিনি আরও বলেন, ভ্যাটের হার কেমন হবে, তা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে নির্ধারণ করেছেন অর্থমন্ত্রী। ব্যবসায়ীরা তা মেনেও নিয়েছেন।
মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বরের (টিআইএন) ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হবে। কারণ, অনেকেই অনৈতিকভাবে টিআইএন নেয়।
কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মোশাররফ হোসেন বলেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানি ২৫ শতাংশ কর দেয়। কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে করের হার কমে আসবে। তালিকাভুক্ত হলে কোম্পানিগুলোকে স্বচ্ছতার সঙ্গে চলতে হয়। এ কারণে অনেক কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয় না।
শেয়ারবাজারে ক্ষতিগ্রস্তরা বিশেষ সুবিধা পাবেন: আগামী বাজেটে শেয়ারবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে বলে জানান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা সে বিষয়ে কাজ করছি। কোন সময়ের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা বিশেষ সুবিধা পাবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, টাইম ফ্রেমটা স্টক এক্সচেঞ্জ ও আইসিবিসহ স্টেকহোল্ডাররা নির্ধারণ করবেন। বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যেসব কোম্পানির অস্তিত্ব নেই, সেসব কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করবেন না।
আলোচনা সভায় ইআরএফ-এর পক্ষ থেকে এনবিআরের কাছে ১১ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো-করদাতাদের সুবিধার্থে করসেবা সহজীকরণ, রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইট আপগ্রেড করা, এনবিআরের সক্ষমতা বাড়ানো, কর সচেতনতা তৈরি বা কর প্রদানে সচেতনতা বাড়াতে এসএমএস-এর মাধ্যমে প্রচারণা চালানো, প্রত্যক্ষ কর আদায়ে সংস্কার করা, করদাতাদের বিরোধ নিষ্পত্তি বা মামলা জট কমানোর জন্য বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) ব্যবস্থাকে অধিকতর কার্যকর করা, ভ্যাট আদায়ে আরও স্বচ্ছতা আনা, রাজস্ব বোর্ড বিভিন্ন এসআরও জারি করে কর ছাড় দিয়ে থাকে। এতে কর ছাড়ের কারণ এবং সম্ভাব্য কর ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ থাকা, ট্রান্সফার প্রাইসিং সেলকে আরও কার্যকর করা এবং এর কার্যক্রম সম্পর্কে করদাতাদের কাছে সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা, ইআরএফ সদস্যদের জন্য ঢাকার বাইরে বিভিন্ন কাস্টমস হাউজ, আয়কর ও ভ্যাট অফিস পরিদর্শনের সুযোগ করে দেওয়া। এবং সংবাদকর্মীদের সুবিধার্থে ভারতের মতো বাজেট অধিবেশন বিকেলের পরিবর্তে সকালে শুরু করা।
প্রাক-বাজেট আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনবিআরের সদস্য ফিরোজ শাহ আলম, কানন কুমার রায়, ইআরএফ-এর সভাপতি সাইফ ইসলাম দুলাল সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।