Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে কেন গরমিল

বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১ মে, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

সারা দেশে তাপদাহ চলছে দুই সপ্তাহেরও বেশিদিন যাবৎ। চাতক পাখির মতো দেশবাসীর চোখ আকাশপানে। আকাশকালো মেঘ আর বৃষ্টি-বাদল চাই। চাই একটু শীতল পরশ। তবে বৃষ্টি নেই। ভ্যাপসা গরমে ঘামে জনজীবনে হাঁসফাঁস অবস্থা বিরাজ করছে সর্বত্র।
অন্যদিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর প্রায় শুরু থেকেই ‘আকাশ আংশিক মেঘলাসহ’ বিভিন্ন স্থানে ‘দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়ার সাথে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি’, ‘কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টি’ এবং তাপমাত্রা হ্রাসের সাথে তাপপ্রবাহে উন্নতির কথিত ‘সম্ভাবনা’র পূর্বাভাস প্রদান করে আসছে। ঢাকায়ও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হয় গত ২৭ ও ২৮ এপ্রিল।
অথচ একই সময়ে আন্তর্জাতিক আবহাওয়া-জলবায়ু সম্পর্কিত চ্যানেল, নেটওয়ার্কগুলো বাংলাদেশে তাপমাত্রার পারদ বৃদ্ধির কথাই জানান দিয়ে আসছে তাদের নিয়মিত আবহাওয়া পূর্বাভাসে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, কক্সবাজারসহ বিভিন্ন অঞ্চলের তাপপ্রবাহ সম্পর্কে ঘণ্টায় ঘণ্টায় পূর্বাভাস ও তথ্য-উপাত্ত পরিবেশন করে। যা বাস্তব অবস্থার সাথে হুবহু মিলে যাচ্ছে।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগে বৃষ্টিপাতে তাপদাহ ‘লাঘব’ হতে পারে মর্মে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে অনেক সংবাদপত্র, টিভি চ্যানেল ও অনলাইনে (তবে দৈনিক ইনকিলাব ব্যতিক্রম) ইতোমধ্যে খবরও প্রকাশিত হয়। কিন্তু বৃষ্টিপাত ও তাপপ্রবাহ হ্রাসের সেই পূর্বাভাস শেষ পর্যন্ত বাস্তবে ফলেনি।
অথচ এ কারণে শুধুই বিভ্রান্ত হয়েছেন সাধারণ মানুষ। ক্ষোভ-অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। তাদের প্রশ্ন আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাসে কেন এহেন গরমিল? কেন অসঙ্গতি? তারা কী মান্ধাতা আমলে পড়ে আছে? নাকি আবহাওয়া পূর্বাভাসও প্রদান করা হচ্ছে ‘আদিষ্ট হইয়া’? কী মূল্য এই উদ্ভট পূর্বাভাসের?
এ বিষয়ে আবহাওয়া বিভাগ সূত্র জানায়, সংশ্লিষ্ট তথ্য-উপাত্ত, প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা ও বিভিন্ন উপাদান বিশ্লেষণ করে তার সাহায্যেই আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রদান করা হয়ে থাকে। জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে পূর্বাভাসে কিছুটা অসঙ্গতি হতে পারে।
এদিকে আবহাওয়া-জলবায়ু বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায়, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ বাংলাদেশ এবং ভারতের বিশাল অংশ থেকে মেঘ শুষে নিচ্ছে। এরফলে মেঘ-বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়নি গত কয়েকদিনে। তাহলে বৃষ্টি হবে কীভাবে? বাংলাদেশে ‘ফণি’র কী প্রভাব কিংবা ঘূর্ণিঝড়টি এখানকার উপকূলে আঘাত হানতে পারে কিনা এ সম্পর্কে গতকাল পর্যন্ত আবহাওয়া অধিদপ্তর সুস্পষ্ট কোনো পূর্বাভাসই জনগণের সামনে তুলে ধরতে পারেনি।
গত ২৫ এপ্রিল নিরক্ষীয় ভারত মহাসাগর ও এর সংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট একটি লঘুচাপ ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়। এটি ক্রমেই শক্তি সঞ্চয় করে গত ২৬ এপ্রিল নি¤œচাপ, গভীর নি¤œচাপ এবং গত ২৮ এপ্রিল ঘূর্ণিঝড়ে (ফণি) পরিণত হয়। আর তখন থেকেই বৃষ্টিপাতের প্রতিরোধী অবস্থা তৈরি হয়। তাছাড়া এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বিরাজমান ‘এল নিনো’ অবস্থার কারণেও বৃষ্টির আবহ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। গত ফেব্রæয়ারি থেকে ‘এল নিনো’র প্রভাব শুরু হয়ে তা চলবে আগামী জুন-জুলাই মাস পর্যন্ত।
এরই ধারাবাহিকতায় সমগ্র দেশে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে অসহনীয় মাত্রায়। রাজশাহীতে পারদ উঠে গেছে মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

 



 

Show all comments
  • Kamal Pasha Jafree ১ মে, ২০১৯, ১:৩৬ এএম says : 0
    অনভিজ্ঞতা।
    Total Reply(0) Reply
  • স্বদেশ আমার ১ মে, ২০১৯, ১:৩৭ এএম says : 0
    আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকায় এরকম হতে পারে।
    Total Reply(0) Reply
  • মিরাজ মাহাদী ১ মে, ২০১৯, ১:৩৭ এএম says : 0
    আবহাওয়া কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে, বিদেশ থেকে তাদের ট্রেনিং করিয়ে আনতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • হাসিবুল ইসলাম ১ মে, ২০১৯, ১:৩৮ এএম says : 0
    আবহাওয়া কর্মকর্তারাও কপি পেস্ট করে পূর্বাভাস দেয় কিনা ঠিক আছে...
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আবহাওয়া

২৯ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ