পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ধীরে ধীরে বাড়ছে চিনি, পেঁয়াজ ও ছোলার দাম। অথচ রয়েছে বাজার মনিটরিং-‘নিবিড় তদারকি’। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে চিনির দাম কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে। পেঁয়াজের দামও বেড়েছে তিন থেকে পাঁচ টাকা। পাইকারি দামের সাথে খুচরা মূল্যের ব্যবধান ১০ টাকারও বেশি।
ছোলার দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী। রমজানে অতি প্রয়োজনীয় এ তিনটি ভোগ্যপণ্যের পর্যাপ্ত আমদানি হয়েছে। এরপরও মূল্যবৃদ্ধির পেছনে ‘সিন্ডিকেটের কারসাজি’ আছে কি না তা খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেছেন কারণ ছাড়া দাম বাড়ালে কঠোর ব্যবস্থা।
গতকাল সোমবার নগরীর কাজির দেউড়ি, রেয়াজুদ্দিন বাজার, স্টিলমিল বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে মানভেদে পেঁয়াজের দাম কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে। দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ ও আছদগঞ্জে দাম না বাড়লেও খুচরা বাজারে দাম বাড়ছে। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজি ২৫ থেকে ২৮টাকা আর দেশি পেঁয়াজ ২৮ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কয়েক দিনের ব্যবধানে চিনির দামও প্রতিকেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা বেড়ে গেছে। বেড়েছে ছোলার দামও। মানভেদে চিনি ৫২ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ছোলা প্রতিকেজি ৭৮ থেকে ৮২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে প্রতি কেজি ছোলার দাম ৬৫-৬৭ টাকা।
সরকারি ভোগ্যপণ্য বিপণন সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ- টিসিবির হিসাবেও এসব পণ্যের দাম বাড়ছে। তাদের হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানিকৃত প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম দুই টাকা আর দেশি পেঁয়াজের দাম তিন থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে। চিনির দাম বেড়েছে কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা।
গতকাল টিসিবির ওয়েবসাইটে দেখা যায়, রাজধানীর বাজারে চিনির দাম ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকা। আগের সপ্তাহে দাম ছিল ৫২ থেকে ৫৫ টাকা। ছোলা মানভেদে প্রতিকেজি ৭৫ থেকে ৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। গেল বছরের এসই সময়ে ছোলার দাম ছিল ৭০ থেকে ৮৫ টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি দাম বাড়ছে তাই বাজারে দাম চড়া।
তবে দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সৈয়দ ছগির আহমদ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, পাইকারি বাজারে এ তিনটি পণ্যের কোন দাম বাড়েনি। গতকালও খাতুনগঞ্জে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ১৭ থেকে ১৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর ছোলার কেজি ছিলো ৬৫ থেকে ৬৭ টাকা। পাইকারি বাজারে চিনির দামও বাড়েনি বলে জানান তিনি। মূল্যবৃদ্ধির জন্য তিনি খুচরা ব্যবসায়ীদের দায়ী করেন।
মাহে রমজানকে সামনে রেখে বাজার মনিটরিং শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, বেশি লাভ করার জন্য পাইকারি মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত বেশি দামে কেউ পণ্য বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে অতিরিক্ত মূল্য আদায় এবং মূল্যতালিকা না থাকায় কয়েকজন ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে। তিনি নিজেও গতকাল ষোলশহর কর্ণফুলী মার্কেটে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পর্যবেক্ষণ করেছেন জানিয়ে বলেন, প্রতিটি দোকানে পণ্যের ক্রয় এবং বিক্রয় মূল্যের তালিকা টাঙ্গানো বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। রোজা সামনে রেখে একসাথে বেশি ভোগ্যপণ্য না কেনারও পরামর্শ দেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক। প্রসঙ্গত রমজান সামনে রেখে মহানগর ও জেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। তবে বাজারে এখনও এর কোন প্রভাব পড়েনি।
এদিকে আমদানিকারকেরা বলছেন, এবার আমদানি বেশি হওয়ায় রমজানে বাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ার যুক্তি নেই। দেশে বছরে প্রায় ১৬ লাখ টন চিনির চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে ১৫ লাখ টন আমদানি করতে হয়। গত আট মাসে চিনি আমদানি হয়েছে ১৫ লাখ ৬৩ হাজার টন। বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত চিনির দাম ৪ শতাংশ ও এক বছরে ২৫ শতাংশ কমেছে। এ অবস্থায় দেশে চিনির দাম বাড়ার কোন কারণ নেই। ট্যারিফ কমিশনের হিসাবে বছরে ছোলার চাহিদা ১ লাখ টন। এরমধ্যে ৮০ হাজার টনের মতো বিক্রি হয় রমজান মাসে। আমদানি বেশি হওয়ায় বাজারে ছোলার পর্যাপ্ত মজুদ আছে।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, রমজান আসন্ন হলেও দক্ষিণাঞ্চলে বহু সমস্যা জনজীবনে বিড়ম্বনা বৃদ্ধি করে চলেছে।
রোজা আসন্ন হলেও টিসিবি এখনো মহানগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলে প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারেনি। এর সাথে ভয়াবহ বিদ্যুৎ সংকট পানি সরবরাহসহ চিকিৎসা ব্যবস্থাকেও বিপন্ন করে তুলছে। চলমান এইচএসসি পরিক্ষার্থীদের চরম বিড়ম্বনায় ফেলছে বিদ্যুৎ সংকট। দক্ষিণাঞ্চলের অনেক এলাকাতেই রাত ১২টার পরেও লোডশেডিং অব্যাহত রয়েছে। সোমবারও সকাল থেকে দফায় দফায় নগরীর কাশিপুর ৩৩কেভি সাব-স্টেশনের আওতাভূক্ত এরাকায় বিদ্যুৎ সংকট অব্যাহত ছিল। সন্ধ্যা ৭টার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হলেও এর পরে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে লোডশেডিং।
সম্প্রতি অত্যাবশ্যকীয় পণ্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। গরুর গোশতের দাম কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে ৫শ টাকায় উঠেছে। ব্রয়লার মুরগীর দামও কেজিতে ২৫ টাকা বেড়ে ২২০ টাকায় ঠেকেছে। এবারে কয়েক দফার কাল বৈশাখীর তান্ডবে সবজি বাগানে পানি জমে ফসল বিনষ্ট হয়েছে। ফলে সরবারহ ঘাটতিতে দামও এখন চড়া। পটল, করলা, ঢেঁড়শ থেকে শুরু করে সব ধরনের সবজি এখন ৫০ টাকা থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে রোজা সামনে রেখে প্রায় ১১ মাস পরে সারা দেশের সাথে দক্ষিণাঞ্চলের বাজারেও কয়েকটি নিত্যপণ্য নিয়ে টিসিবি গতকাল পর্যন্ত শুধু মশুর ডালসহ ৩টি পণ্য নিয়ে ট্রাক নামিয়েছে। সরবরাহ স্বাভাবিক না থাকায় এক-তৃতীয়াংশ ডিলারও পণ্য তুলে বিক্রি করছে না। এখনো ছোলাবুট, খেজুর নেই টিসিবি’র কাছে। চিনির সরবরাহও অপ্রতুল।
এসব বিড়ম্বনা আর দূর্ভোগের মধ্যেই রহমত নিয়ে মাহে রমজান দক্ষিণাঞ্চলবাসীর দরজায় কড়া নাড়ছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রনে কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারি ছাড়াও টিসিবি’র দায়িত্বশীল ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন ওয়াকিবহাল মহল। পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিতরন ও সরবরাহ ব্যবস্থার মত অতি স্পর্শকাতর বিষয়টির কাঙ্খিত উন্নয়নে ওজোপাডিকো’র দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের দায়িত্ববোধ বৃদ্ধিরও তাগিদ দিয়েছেন মহলটি। তবে কাশীপুর সাব-স্টেশনের ট্রান্সফর্মারের সমস্যা সমাধানে আজকালের মধ্যেই সেখান থেকে হাতেম আলী কলেজ ফিডারটি আলাদা করে রূপাতলী থেকে ফিড করার ব্যবস্থা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওজোপাডিকোর কর্মকর্তাগন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।