পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার গত ১৬ এপ্রিল থেকে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত চট্টগ্রাম সফর করেন। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সামরিক সহযোগিতা এগিয়ে নেওয়া এবং দুদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করা ছিল তার এ সফরের উদ্দেশ্য। গতকাল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
চট্টগ্রামে রাষ্ট্রদূত মিলার যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি জ্বালানি কোম্পানি ‘এক্সিলারেট’ পরিদর্শন করেন। বঙ্গোপসাগরে নির্মিত ‘এক্সিলারেট’ এর ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ) চট্টগ্রামের ৬০ লাখ অধিবাসী ও এর সমগ্র শিল্প এলাকার জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করছে। এফএসআরইউ প্রতিদিন ৫০ কোটি কিউবিক ফুট গ্যাস রিগ্যাসিফিকেশন করতে সক্ষম। এর ফলে বাংলাদেশের নিজস্ব প্রাকৃতিক গ্যাসের ভান্ডার নির্ভরযোগ্যভাবে ব্যবহারের সক্ষমতা বাড়ছে।
রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার স্থানীয় শিল্প সম্পর্কে আরও জানতে ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। এসব শিল্প বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখছে। তিনি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাত করেন এবং দেশের ৯০ শতাংশের বেশি বাণিজ্য পরিচালিত হওয়া বন্দরটির সেবাসমূহ ঘুরে দেখেন। তারা বন্দরের উন্নয়ন ও অন্যান্য নির্মাণ কাজে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের সম্ভাব্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। রাষ্ট্রদূত একটি জাহাজভাঙা ইয়ার্ড ও একটি স্টিল রিরোলিং মিলও পরিদর্শন করেন। তিনি শ্রমিক অধিকার ও তাদের নিরাপত্তার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন এবং শ্রমিক ও পরিবেশের সুরক্ষাদান ও শিশুশ্রমের অবসান ঘটানোর জন্য ব্যবসায়ী নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ স্পেশাল ওয়ারফেয়ার ড্রাইভিং অ্যান্ড স্যালভেজ (এসডব্লিউএডিএস) মহড়ার সমাপনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত দুইদেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সামরিক সম্পর্কের সমর্থনে বক্তব্য দেন। এ মহড়ার মধ্যে ছিল মানবাধিকার, প্রাথমিক চিকিৎসা ও মিশন পরিকল্পনা বিষয়ক মডিউল। রাষ্ট্রদূত মিলার ২০০৫ সালে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা অপারেশনে (পিস্ কিপিং অপারেশনে বা পিকেও) নিহত সীম্যান মোহাম্মদ নুরুল ইসলামের সমাধিতে পুস্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং একটি গাছের চারা রোপন করেন। তিনি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা অপারেশনে নিহত মোট ১৪৬ জন বাংলাদেশির প্রতিও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় মিশনে প্রদত্ত সেনাসংখ্যায় বিশ্বে দ্বিতীয় বাংলাদেশের অবদানের প্রশংসা করেন।
রাষ্ট্রদূত মিলার এছাড়াও চট্টগ্রাম ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটিতে (সিআইইউ) স্থাপিত ‘আমেরিকান কর্নার’ পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি দুইবারের ফুলব্রাইট ফেলো সিআইইউ এর ভিসি ড. মাহফুজুল হক চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন। তিনি বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষে অটিজম নিয়ে সচেতনতা বিষয়ক একটি অনুষ্ঠানে স্থানীয়দের সঙ্গে অংশ নেন। রাষ্ট্রদূত মিলার যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার সুযোগসুবিধা এবং ‘আমেরিকান কর্নার’ এ প্রদত্ত এডুকেশন ইউএসএ তথ্য ও সেবাগুলো তুলে ধরেন। পরে তিনি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এর প্রতিষ্ঠাতা ও ভিসির সঙ্গে দেখা করেন এবং রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীসহ নারীদের শিক্ষা ও নেতৃত্বের দক্ষতার উন্নয়নে অবদানের জন্য তাদের সাধুবাদ জানান।
রাষ্ট্রদূত মিলার চট্টগ্রাম ওয়ার সেমেটারি পরিদর্শন করেন। তিনি দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় ব্রিটিশ রয়্যাল এয়ার ফোর্সের সদস্য হিসেবে লড়াইয়ের সময় নিহত আমেরিকান পাইলট উইলিয়াম বি.রাইসের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। রাষ্ট্রদূত ওই যুদ্ধে নিহত সবার আত্মত্যাগকে সম্মান জানাতে ‘ক্রস অব রিমেমব্রান্স’ এ-ও পুস্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।