পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : ঘুমের সাথে স্মৃতি-শক্তির খুবই জোরালো একটি সম্পর্ক আছে। বিশেষ করে ঘুমের হালকা পর্বটির সাথে। সাধারণত এই সময়টাতেই আমরা বেশিরভাগ স্বপ্ন দেখে থাকি।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, নতুন করে স্মৃতি তৈরি হওয়ার জন্যে ঘুমের এই পর্বটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ঘুমের এই সময়েই মানুষের সব স্মৃতি তৈরি হয়ে থাকে। এর রহস্য ভেদ করার চেষ্টায় ঘুমন্ত ইঁদুরের মস্তিষ্ক এবং তাদের স্মৃতি-শক্তির ওপর তার প্রভাব নিয়ে পরীক্ষা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা একটি গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করেছেন যার ফলাফল সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী- সায়েন্সে।
ধরুন, ঘুমের বিভিন্ন পর্যায় পার করে আপনি গতকালের রাতটি পার করেছেন। এ সময় কখনো আপনি ছিলেন গভীর ঘুমে আবার কখনো আধো ঘুমে। বিজ্ঞানের পরিভাষায় ঘুমের হালকা এই পর্বটিকে বলা হয় আর ই এম।
এ সময় আপনার চোখ সবচে বেশি নড়তে থাকে আর এ সময়েই আমরা সবচে বেশি স্বপ্ন দেখে থাকি।
আমরা ইতোমধ্যেই জেনেছি যে স্মৃতি জোরালো করতে গভীর ঘুম হওয়া খুবই জরুরি। কারণ এ সময়েই মানুষের স্মৃতি সংহত হয়।
কিন্তু ঘুমের হালকা পর্বটির সময় মস্তিষ্কের ভেতরে কি ঘটে সেটা খুবই রহস্যময়। তখনকার অবস্থা নিয়ে গবেষণা করা কঠিন। কারণ এই পর্বটি হয় ক্ষণস্থায়ী এবং খুবই ভঙুর।
কিন্তু বিজ্ঞানীরা এই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠেছেন ইঁদুরের বেলায়। তারা দেখেছেন, হালকা ঘুমের সময় ইঁদুরের মস্তিষ্কের ভেতরে কিছু কিছু কোষ বা সার্কিট যদি নিষ্ক্রিয় করে দেয়া যায়, তাহলে এই প্রাণীটি আগের দিন যেসব ছোটখাটো জিনিস শিখেছিলো, সেগুলো আর মনে করতে পারে না।
বিবিসির বিজ্ঞান বিষয়ক সংবাদদাতা জনাথন ওয়েব বলছেন, ঘুমের সাথে স্মৃতির সম্পর্ক নিয়ে এ যাবৎকালের মধ্যে এটাই সবচে বড় গবেষণা।
তিনি বলেছেন, ‘সারাদিনে আপনার যেসব অভিজ্ঞতা হয় সেগুলো মস্তিষ্কের ভেতরে খুব অল্প সময়ের জন্যে জমা থাকে। রাতের বেলা আপনি যখন ঘুমিয়ে পড়েন তখন ওই ঘুমের বিভিন্ন পর্যায়ে আপনার মস্তিষ্কের ভেতরে বিভিন্ন প্রক্রিয়া কাজ করতে থাকে। সারাদিনের অভিজ্ঞতা তখন আপনার মাথার ভেতরে সংহত হতে থাকে। অর্থাৎ ঠিক তখনই গঠিত হয় আপনার স্মৃতি। যেসব জিনিস আপনি মনে রাখতে চান শুধুমাত্র সেগুলোই আপনার মস্তিষ্কের সার্কিটের ভেতরে ঢুকে জমা হতে থাকে।’
এই পরীক্ষাটি চালাতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা ঘুমন্ত কিছু ইঁদুরের মস্তিষ্কে ছোট্ট একটি অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করেছেন।
এই ফাইবার দিয়েই তারা নিয়ন্ত্রণ করেছেন ইঁদুরের মাথার ভেতরের কিছু নিউরন।
ওই ইঁদুরটি প্রতিদিনই নানা রকম জিনিস শিখছে- যেমন ধরুন কোথায় খাবার পাওয়া যাবে, ভয় পেলে কি করতে হবে ইত্যাদি।
তারপর ইঁদুরটি যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন হালকা ঘুমের সময় বিজ্ঞানীরা তার মস্তিষ্কের ভেতরে বেশকিছু সার্কিট বন্ধ করে দেন। মাথার ভেতরে আলোর বিচ্ছুরণের সাহায্যেই তারা এই কাজটি করেছেন।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ইঁদুরের মস্তিষ্কে ওই বিশেষ কোষগুলোকে বন্ধ করে দিলে, ওই প্রাণীটির মস্তিষ্কের ভেতরে কিছু কাজও বন্ধ হয়ে যায়।
এছাড়া বাকি সব কিছুই কিন্তু ঠিকঠাক চলতে থাকে। এর ফলে ইঁদুরের ঘুমও ভাঙে না।
পরে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, তাদের স্মৃতিও কিছুটা লোপ পেয়েছে। অর্থাৎ আগের দিন তারা যা কিছু শিখেছিলো এখন তার অনেকটাই আর মনে করতে পারছে না।
হালকা ঘুমের সময় মানুষের মস্তিষ্কের ভেতরে কি ঘটে সে বিষয়ে জানা সম্ভব না হলেও সম্প্রতি কিছু গবেষণা হয়েছে গভীর নিদ্রার সময়ে কি ঘটে তার উপরে।
দেখা গেছে, সে সময় সারাদিনে আমাদের যেসব অভিজ্ঞতা হয়েছে, সেগুলোর রিপ্লে হতে থাকে। তখনই গঠিত হয় আমাদের স্মৃতি।
কিন্তু হালকা ঘুমের সময়, যখন আমাদের চোখ খুব বেশি নড়তে থাকে এবং পেশীগুলোও শিথিল হয়ে বিশ্রাম করতে থাকে, তখন মস্তিষ্কের ভেতরে কি হয়, সেই রহস্য এখনও ভেদ করা যায়নি।
কিন্তু ইঁদুরের ওপর সবশেষ এই গবেষণার পর বিজ্ঞানীরা বলছেন, হালকা ঘুমের সময় যে আমরা শুধু স্বপ্নই দেখি তা নয়, এরচেয়ে আরো বেশি কিছুও হয়তো হতে পারে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষেরা কেন তাদের স্মৃতি-শক্তি হারিয়ে ফেলে এই গবেষণায় ইঁদুরের ওপর চালানো পরীক্ষাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
তারা বলছেন, ঠিক একই ধরনের পরীক্ষা তারা এখন মানুষের ওপরেও চালাতে চান। সূত্র : বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।