আজিবুল হক পার্থ: দলীয়ভাবে প্রথমবারের মতো স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর অংশ হিসেবে কেন্দ্রভিত্তিক ভোটার তালিকা পাঠাতে উপজেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি। আগামী ৩১ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ হওয়ার পরে ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সিডি উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে ইসি সচিবালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র ভিত্তি এবারের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে ৪৩ লাখ ৬৮ হাজার ৪৭ জন ভোটার। এরা এবারই তালিকাতে অন্তর্ভুক্ত হবে। যে সব এলাকার ভোট হবে সেই সব এলাকার ভোটাররা পাবেন ভোটাধিকার। এদিকে আইন পরিবর্তন হওয়ার পরে সেই মোতাবেক বিধিমালা তৈরি করেছে ইসি। ইতোমধ্যে কমিশন বৈঠকে তা অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে। আজ মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথা রয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ভোটার তালিকা হালনাগাদ-২০১৫ শেষে ২ জানুয়ারি ইসির খসড়া তালিকায় প্রকাশ করা হয়েছে। হালনাগাদ শেষে এবার নতুন ভোটার হচ্ছেন ৪৩ লাখ ৬৮ হাজার ৪৭ জন। এরা ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনে ভোট না দিতে পারলেও আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সে সুযোগ পাবেন। দেশে বর্তমানে ৯ কোটি ৬২ লাখ ২৬ হাজার ৫৪২ জন ভোটার রয়েছে। ৩১ জানুয়ারি চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করলে ভোটারের সংখ্যা ১০ কোটি ছাড়াবে।
বর্তমানে দেশে ৪ হাজার ৫৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। এ সব  ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্য বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচশ কোটি টাকা।
ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, আইন পরিবর্তিত হওয়ায় এবারই প্রথম স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয়ভাবে নির্বাচন হবে। তবে সাধারণ সদস্য (মেম্বার) ও সংরক্ষিত নারী পদে আগের মতোই নির্দলীয়ভাবে নির্বাচন হবে। খসড়া বিধিমালা চূড়ান্ত হয়েছে। এখন এটি ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে। আচরণবিধিমালা ইসির আগামী বৈঠকে চূড়ান্ত করা হবে।
তিনি  বলেন, নতুন এ বিধিমালায় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বেলায় মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সমর্থকদের স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা জমা দেওয়ার বিধান বাদ দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া বাকিসব নিয়ম পৌরসভার আদলে করা হচ্ছে।
এর আগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে ৪ হাজার ৫৫৩টি ইউনিয়ন পরিষদের তালিকা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী নির্বাচন উপযোগী ইউনিয়ন পরিষদগুলো যাচাই-বাছাই চলছে।
অন্যদিকে, গত নভেম্বরে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন সংশোধন করে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকে এবং সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য পদে নির্দলীয় নির্বাচনের বিধান করা হয়।
স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯-এর ২৯ (৩) ধারা অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তারিখ পাঁচবছর পূর্ণ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিধান রয়েছে। এ হিসাবে গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের জুনের মধ্যে সবগুলো ইউপির নির্বাচন শেষ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
এর আগে দেশে সব মিলিয়ে ১৯৭৩, ১৯৭৭, ১৯৮৩, ১৯৮৮, ১৯৯২, ১৯৯৭, ২০০৩ এবং ২০১১ আটবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হয়েছে।