পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে ‘ফেইক নিউজ’ প্রচার চলছে। বনানীর অগ্নিকান্ডের পর ‘পাইপ বয় নাঈম ইসলাম’কে শিখিয়ে দেয়া বক্তব্য প্রচার করে বেগম জিয়াকে নামে ফেইক নিউজ প্রচার করা হয়। এবার বেগম জিয়ার সঙ্গে থাকা গৃহকর্মী ফাতেমা বেগমের বাবা রফিকুল ইসলামকে শিখিয়ে দেয়া বক্তব্য প্রচার করে ফেইক নিউজ প্রচার করা হয়েছে। ক্ষমতাসীনদের আজ্ঞাবহ স্যাটেলাইট চ্যানেলে খবর প্রচারের পর বিএনপির পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ করা হয়। পরে গৃহকর্মী ফাতেমার মা রোকেয়া বেগম জানান, তিনি নিয়মিত ফাতেমার মাসিক বেতন পাচ্ছেন। খালেদা জিয়ার গৃহকর্মী ফাতেমার ছেলে-মেয়ে ভালভাবেই লেখাপড়া করছে। ফেইক নিউজের প্রতিবাদ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ফাতেমার বাবা কয়েকদিন আগেও আমার কাছে এসেছিলো, আমি তাকে টাকা দিয়েছি। এছাড়া চেয়ারপারসনের বাসভবনে দায়িত্বপ্রাপ্তরা প্রতিমাসে তার বেতন দিয়ে দেন এবং খোঁজখবর নেন। জানতে চাইলে বিএনপির একাধিত নেতা জানান, বেগম জিয়ার ভাবমূর্তি নস্ট করতেই এক শ্রেণীর মিডিয়া এসব ফেইক নিজউ প্রচার করছে।
ঘটনার সুত্রপাত একাত্তর টিভি’র একটি খবরকে কেন্দ্র করে। ওই চ্যানেল বিএনপির খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারে থাকা গৃহকর্মী ফাতেমা বেগমকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রচার করে। যেখানে ফাতেমার বাবা রফিকুল ইসলামের সাক্ষাৎকার দেখানো হয়। গৃহকর্মী ফাতেমা কারাগারে ঢোকার পর খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে তার পরিবার কোনো টাকা পাচ্ছে না বলে প্রচার করা হয়। টাকার অভাবে ফাতেমার দুই সন্তান এখন স্কুল ছেড়ে মাদরাসায় ভর্তি হওয়ার মতো অবস্থায় পৌঁছেছে বলেও দাবি করা হয়।
ওই টিভির খবরে বলা হয় ভোলায় ফাতেমার বাবার সংসারে থাকা তার দুই শিশু সন্তান জাকিয়া (৭ম শ্রেণি) এবং ছেলে মিজান (৩য় শ্রেণি) এক বছরের বেশি সময় তাদের মায়ের দেখা পায়নি। আর ফাতেমার বেতনের টাকা না পাওয়ায় সংসার চালাতে তাদের দেনা হয়েছে এক লাখ টাকার বেশি। উল্লেখ ১০ বছর আগে স্বামী মারা যাওয়ার পর সংসারের হাল ধরতে এলাকার এক পরিচিতজনের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার গৃহকর্মীর কাজ নেন ফাতেমা। সে সময় বেতন ধরা হয় দুই হাজার টাকা, পরে হয়েছে পাঁচ হাজার টাকা।
‘গৃহকর্মী ফাতেমাকে বেতন দেয়া হচ্ছে না’ খবরের প্রতিবাদ করে বিএনপি নেতারা। তারা বলেছেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারে থাকা গৃহকর্মী ফাতেমা বেগমের বাবাকে মাসিক বেতনের প্রাপ্য টাকা ছাড়াও অগ্রিম টাকা দেওয়া হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, টেলিভিশন চ্যানেলে ফাতেমার বাবার সাক্ষাৎকার দেখেছি। ফাতেমার বাবা অভিযোগ করেছেন, তাঁর মেয়ের বেতন নাকি বকেয়া রয়েছে। খবরটি দেখে আমি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলি। তিনি আমাকে বললেন, এই খবর শতভাগ মিথ্যা। বেচারা গরিব মানুষ, তাকে ম্যানেজ করে এই কথা বলানো হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব জানিয়েছেন, কিছুদিন আগেই ফাতেমার বাবার হাতে তার প্রাপ্য টাকা পৌঁছানো হয়েছে। এ সময় তাকে কিছু অগ্রিম টাকাও দেওয়া হয়। বিএনপির এই নেতা ওই মিডিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণার অভিযোগ করে বলেন, খালেদা জিয়াকে হেয়-প্রতিপন্ন করতে বিশাল চক্রান্ত চলছে। এরই অংশ হিসেবে মিথ্যা মামলায় তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে, যার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা নেই। বিএনপির সিনিয়র মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ফাতেমার বাবাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সরকারের পৃষ্ঠপোষক একটি মিডিয়া সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা-অপপ্রচারমূলক খবরের প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, যারা ফাতেমার পরিবার নিয়ে এতো মাতামাতি করছে তারা সুবর্ণচরের ধর্ষিতা নারীকে নিয়ে কিছু বলছে না কেন? এসব জিনিস তাদের চোখে পড়ে না?
এদিকে খালেদা জিয়ার সাথে স্বেচ্ছায় কারাবন্দি গৃহপরিচারিকা ফাতেমার মা রোকেয়া বেগম বলেছেন, প্রতি মাসের শেষে ৬ হাজার করে টাকা পাঠায়। আমি নিজে অথবা ফাতেমার মেয়ে (জাকিয়া) ভোলা জেলার কাঠিয়া ইউনিয়নের হাটখোলা, পরানগঞ্জ বাজারে গিয়ে টাকা আনি। তবে কে বা কারা টাকা পাঠায় এ ব্যপারে আমি জানি না। ফাতেমার মেয়ে মোসাম্মৎ জাকিয়া ৭ম শ্রেণি এবং ছেলে মোঃ মিজান ৩য় শ্রেণিতে পড়াশুনা করছে। তারা নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে। টাকার অভাবে তাদের পড়াশুনার কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। বিএনপির পক্ষ থেকে ফাতেমার সন্তানদের কোনো খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে রোকেয়া বেগম বলেন, জ্বী নিয়মিতই খোঁজ খবর নেয়। টাকাও দেয়। তিনি জানান, বেসরকারি টিভিতে তাঁর স্বামী রফিকুল ইসলামের সাক্ষাৎকারে ‘অভাবের কারণে সন্তান দুটিকে স্কুল থেকে মাদরাসায় ভর্তি করা হয়েছে’ এমন দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
এর আগে গত ২৮ মার্চ বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাÐের সময় কড়াইল বস্তির ১০ বছরের বালক নাঈম ইসলামের সাহসিকতা দেখে আমেরিকা প্রবাসী ওমর ফারুক সামি নামের এক প্রবাসী তাকে ৫ হাজার ডলার পুরস্কারের ঘোষণা দেন। এ ঘোষণার পর শাহরিয়ার নাজিম জয় নামের এক টিভি উপস্থাপক নাঈমের সাক্ষাৎকার নেন। তিনি জানতে চান নাঈম পুরস্কারের ৫ হাজার ডলার নেবে কিনা? আর নিলেও সেই টাকা কিসে খরচ করবে? উপস্থাপকের এমন প্রশ্নে জবাবে নাঈম ইসলাম জানায়, সেই টাকাগুলো সে এতিমখানার অনাথ শিশুদের জন্য দান করে দিতে চায়। কারণ কয়েক বছর আগে খালেদা জিয়া এতিমের টাকা লুট করে খেয়েছেন। তাই এই টাকা সে এতিমদের দিতে চায়। এই অনুষ্ঠান দেখেই সর্বত্রই প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় বøগ, ফেসবুক, টুইটারে শুরু হয়ে তোলপাড়। অতপর প্রকৃত ঘটনা খুলে বলেন শিশু নাঈম। সে জানায়, উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয় তাকে শিখিয়ে দেয়ায় খালেদা জিয়া এতিমের টাকা মেরে খেয়েছেন এ জন্য এতিমখানায় টাকা দিতে চান বলেছেন। নাঈম ইসলামকে জিজ্ঞেস করা হয়, ‘তোমার মা কষ্ট করে সংসার চালাচ্ছেন, তোমার নিজের টাকা দরকার, তুমি কেন টাকা এতিমদের দিয়ে দিতে চাও? শিশু নাঈমের সোজাসাপ্টা জবাব, ‘না, এটা বলতে তারা শিখিয়ে দিয়েছিল।’ শিশু নাঈমের মা বলেন, ‘নাঈম ছোট মানুষ, তাই না বুঝে এসব বলেছে। আমি গরীব মানুষ, টাকা আমারই দরকার। টাকা অন্যদের দিয়ে দিলে আমার নাঈমকে আমি কীভাবে মানুষ করব! এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়া হয়েছে এতিমের টাকা চুরির জন্য। কিন্তু আপনারা যদি রায় পড়েন, তাহলে দেখবেন সেখানে কোথাও বলা নেই কেউ এতিমের টাকা চুরি করেছে। তবু তাঁর বিরুদ্ধে এতিমের টাকা চুরির অভিযোগ এনে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ওই টিভি চ্যানেলে প্রচারিত সাক্ষাৎকারটিও সেই চক্রান্তেরই অংশ। বিএনপির নেতাদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, দেশনেত্রীর জনপ্রিয়তায় ভয় পেয়ে সরকারের কিছু সুবিধাভোগী বেগম জিয়াকে নিয়ে ‘ফেইক নিউজ’ করছে। সরকারের নীতি নির্ধারকদের খুশি করে কিছু পাওয়ার প্রত্যাশা থেকেই এমন অপসাংবাদিকতা করা হচ্ছে। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।