Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোয়ানু’র বৃষ্টিতে ঢাকায় দুর্ভোগ

প্রকাশের সময় : ২২ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু’র প্রভাবে কয়েক ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন সড়ক, গলিতে ব্যাপক পানিবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী। রাজধানীর অলি-গলি ছেড়ে পানিবদ্ধতা চলে আসে প্রধান সড়ক সমূহে। এতে করে মাঝপথে গাড়ী নষ্ট, রিক্সা উল্টে প্যাসেঞ্জারদের পানিতে চুবানি, অফিসের পোশাকে বিড়ম্বনাসহ নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে রাজধানীবাসীকে।
জানা গেছে, রোয়ানুর প্রভাবে শুক্রবার থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়। পরে শুক্রবার মধ্যরাত থেকেই দেশের অন্যান্য স্থানের মত নগরজুড়ে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হতে থাকে। বিরামহীন এ বৃষ্টির মাত্রা শনিবার ভোরের দিকে আরও বেড়ে যায়। এতে পানিবদ্ধ হয়ে পড়ে রাজধানীর ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকাও। আবহাওয়া অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী, শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ২১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভারী বর্ষণে রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজার, রামপুরা, মিরপুর, ফকিরাপুল, রাজারবাগ, আরামবাগ, পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোড, জয়নাগ রোড, মগবাজার, শান্তিনগর, বাসাবো, যাত্রাবাড়ী, গেন্ডারিয়া, সূত্রাপুর, ধানমন্ডি, রায়েরবাজারসহ নগরীর সড়ক ও অলিগলিতে পানি থৈ থৈ করছে। এসব এলাকার অধিকাংশ সড়ক পানিতে ডুবে আছে। নিষ্কাশনের সব লাইন আগে থেকেই ময়লা আর আবর্জনায় ভরে থাকায় বৃষ্টিতে জমা পানি দ্রুত নামতে পারছে না।
এদিকে ওয়াসার যত কাজ ভর বর্ষায়! ভোগান্তি দেওয়া তাদের যেন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সিটি করপোরেশনের কাজেও অনেক সময় ওয়াসার বাধা হয়ে দাঁড়ানোর প্রশ্ন ওঠে। এর মধ্যে মালিবাগ-শান্তিনগর এলাকায় যুক্ত হয়েছে ফ্লাইওভারের কাজ। সব মিলিয়ে বর্ষায়ও গলদঘর্ম সাধারণ মানুষ। রাস্তায় নেমে প্রতি মুহূর্তে তাদের পড়তে হচ্ছে বেকায়দায়। বিশেষ করে রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভোগান্তির শেষ নেই। অফিস কিংবা কাজে বেরিয়ে তাই বৃষ্টির পানি ও ওয়াসার পচা দুর্গন্ধ পানির মধ্যে রিকশা নিয়ে কাত হয়ে পড়ে খেতে হচ্ছে নাকানি-চুবানি।
পানিবদ্ধতায় নগরবাসীকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। অনেকেই সকালে রাস্তায় বেরিয়ে বিপাকে পড়েন। পানি জমে যাওয়ায় বাস, ট্রাক, রিকশা, ট্যাক্সিসহ গণপরিবহনের সংখ্যা ছিল কম। আবার অনেক রাস্তায় খানা খন্দকে রিকশা ভ্যান পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন অনেকে। এলাকার অনেক অলিগলির ড্রেন উপচে পড়ে রাস্তাঘাট, ঘর-বাড়িতে ময়লা পানিতে একাকার। ম্যানহোলের মুখ খোলা থাকায় গর্তে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হন অনেকে। ফলে রাস্তায় জন-সাধারণের ভোগান্তি চোখে পড়ার মতো। এ সুযোগে অতিরিক্ত ভাড়া হাঁকেন রিকশা ও যানবাহন চালকরা।
নগরীর কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টির পানিতে পানিবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় খানাখন্দে ভরে সড়ক সমতল দেখাচ্ছিল। ফলে গর্তে পড়ে যানবাহন ও পথচলা মানুষকে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। পানিমগ্ন সড়ক দিয়েই ঝুঁকিতে চলেছে যানবাহন। অনেকেই আবার যানবাহন না পেয়ে হাঁটু পানি ডিঙ্গিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে হেঁটে হেঁটেই ছুটেছেন গন্তব্যে।
মাঝারি বৃষ্টিতে ঢাকার নিচু এলাকার পথ-ঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। বৃষ্টি থাকায় শনিবার সকাল থেকেই রাজধানীর পথ-ঘাট কিছুটা ফাঁকা। রাস্তায় গাড়ির সংখ্যাও কম।
এদিকে পানিবদ্ধতা নিরসনে সকাল থেকে ডিএনসিসির ৫ অঞ্চলে একটি করে বিশেষজ্ঞ টিম মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। এ তথ্য জানিয়েছেন সংস্থার কর্মকর্তারা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে আমাদের প্রতিটি জোনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে প্রকৌশলীসহ পরিচ্ছন্ন বিভাগে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করছেন। একাধিক টিম নগরের পানিবদ্ধ সম্পন্ন স্থানে রয়েছে। আশা করি খুব দ্রুত বৃষ্টির পানি নেমে যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোয়ানু’র বৃষ্টিতে ঢাকায় দুর্ভোগ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ