পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মোস্তফা শফিক, কয়রা (খুলনা) থেকে : জলবায়ু পরিবর্তনে সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলগুলো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। গত কয়েক দশকে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবন উপকূলীয় জনপদ ল- ভ- করে দিয়েছে। গ্রীন হাউস প্রতিক্রিয়ার বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে একদিকে যেমন সমুদ্র পৃষ্ঠের তলদেশ উচু হচ্ছে, অন্যদিকে নদ-নদীর নাব্যতা হারিয়ে গতি পথে পরিবর্তন এসেছে। ফলে জলবায়ু পরিবর্তনজণিত কারণে সুমুদ্রের পানি উপকূলীয় এলাকার উপরে প্রভাব পড়েছে। এ কারণে ঘন ঘন প্রাকৃতিক দূর্যোগ উপকূলীয় এলাকা কয়রার মানুষ সহায় সম্বল হারিয়ে সর্বশান্ত হচ্ছে। এ অবস্থার কারণে এখন দুর্যোগ ঝুঁকিতে রয়েছে সুন্দরবন ঘেষা এ উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ।
সূত্র মতে, ১৯৮৮ সালের ২৯ নভেম্বর সুন্দরবন উপকূলে প্রলয়ঙ্কারী সামুদ্রিক ঘূণিঝড়, ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল খুলনা চট্টগ্রাম কক্সবাজার অঞ্চলে স্মরণকালের সামুদ্রিক ঝড়, ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর বাগেরহাট, বরগুনা, পটুয়াখালী ও খুলনা উপকূলে সিডরের তা-ব এবং ২০০৯ সালের ২৫ মে খুলনা, সাতক্ষীরা উপকূলে আইলার ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসে গোটা উপকূলীয় এলাকার প্রাকৃতিক দৃশ্যপট পাল্টে দিয়েছে। এর সাথে নতুনমাত্রায় বেঁড়িবাধ ভাঙন যোগ হয়ে ল- ভ- করে দিচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা। ফলে কয়রা উপজেলায় প্রতিনিয়ত বেঁড়িবাধ ভেঙে নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে। উপর্যুপরী নদী ভাঙন কেড়ে নিচ্ছে কৃষি জমি, বসত ভিটা, চিংড়ি ঘের ও রাস্তাঘাট। দিন যতই পার হচ্ছে উপকূলীয় এলাকার মানুষ জলবায়ূর বিরূপ প্রভাবে ততই ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে। অনেকে জমি ও বসত ভিটা ছেড়ে অন্যত্র পাড়ি জমিয়েছেন। আজও তারা নিজের ভিটায় ফিরতে পারিনি।
জানা গেছে, সরকারের পাশাপাশি দাতা সংস্থাগুলো এনজিওদের মাধ্যমে বাঁধসংস্কার, কাঁচারাস্তা নির্মাণ, ঝড় ও সহনশীল ঘর তৈরি পয়োঃনিষ্কাশণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন, গভীর, অগভীর নলকূপ স্থাপন, রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং প্রকল্প বাস্তবায়নের মত গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ক্রেল ইসলামী রিলিফ, সুশীন, জেজেএস, রূপান্তর, প্রদীপন, উত্তরণ, সেভ দা চিলড্রেন, কারিতাস দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে অবকাটামোগত প্রকল্প বাস্তাবায়ন করছে। প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে সমগ্র উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ ঝড়, জলোচ্ছ্বাস জণিত প্রাকৃতিক দূর্যোগের কবল থেকে কিছুটা রেহাই পাবে।
সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীর কিনার ড্যাম্পিং করে বেড়ি বাঁধে ব্লক বসানোর কারণে নদী ভাঙন কিছুটা কমেছে। উপকূলীয় এলাকার ভেড়ীবাঁধ রক্ষায় বিশ্বব্যাংকের বাস্তবায়নাধীন চলমান প্রকল্প চালু থাকলে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের ক্ষয়ক্ষতি থেকে এ অঞ্চলের মানুষের জানমাল রক্ষা করা অনেকটা সম্ভব হবে। বিশেষ করে খুলনা জেলার সর্বদক্ষিণে কয়রা উপজেলার উত্তরে শিবসা নদী, দক্ষিণে আড়পাঙ্গাসিয়া নদী, পূর্বে শাকবাড়িয়া ও পশ্চিমে মাইকেল কপোতাক্ষ নদের মধ্যস্থলে দ্বীপ অঞ্চলে বসবাস করছে কয়রার তিন লক্ষ গৃহহীন মানুষেরা। এ ব্যাপারে কয়রা উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার এ সংবাদদাতাকে বলেন, জলবাযু পরিবর্তনের ফলে উপকূলীয় এলাকার পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ সরকার ও উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক ক্ষতির দিকটি বিবেচনায় এনে টেকসই প্রকল্প হাতে নিয়ে তা বাস্তবায়নে সচেষ্ট রয়েছে। তিনি আরো বলেন, কয়রা উপজেলার ১৪/১ ও ১৩/১৪-২ এ দুটি পোল্ডারে বেড়িবাঁধগুলো নিচু থাকায় যত্র তত্র জোয়ার ভাটায় উপচে পড়ে লোকালয়ে নোনা পানি ঢুকে প্লাবিত অব্যাহত রয়েছে। ফলে স্বাভাবিক বেড়িবাঁধ থেকে ৪ থেকে ৫ ফুট উচু করা না হলে এ এলাকার মানুষ যে কোন মুহূর্তে নোনা পানিতে ডুবে মরবে- গৃহ হারা হবে প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।