পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া
স্টাফ রিপোর্টার
আওয়ামী লীগ সরকার ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে ‘একলা’ দেশ চালানোর কৌশল নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন খালেদা জিয়া। গতরাতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বৌদ্ধ পূর্নিমা উপলক্ষে দলের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপার্সন এই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক যে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন তাতে আপনারা কী দেখেছেন? এদেশের নির্বাচনের কোনো পরিবেশ আছে বা এটাকে নির্বাচন হওয়া বলবেন? ভোট কেন্দ্রে আমরা অতীতে কখনো দেখি নাই পুলিশ কিংবা সরকারি অফিসিয়ালরা ব্যালট পেপারে সিল মারে। ব্যালট বাক্স ছিনতাই হয়ে যাচ্ছে। আর বিএনপির প্রার্থীদের নমিনেশন পেপার তুলতেও দিচ্ছে না, জমাও দিতে দিচ্ছে না।”
“এখন ওরা (ক্ষমতাসীন) যেমন সকলের সম্পত্তি দখল করে সম্পদের মালিক হচ্ছে, সকলের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েও একলা থাকবে শুধু। কোনো দল থাকবে না। কাউকে থাকতে দিবে না। এভাবে তারা চলছে। এটা হতে পারে না। এটা গণতন্ত্র নয়।”
“এখন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কালকে কী বলছেন, নির্বাচন করতে গেলে ট্যাংক লাগবে। এতদিনে উনি বুঝেছেন ট্যাংক লাগবে। তাহলে বুঝুন। সেজন্যেই তো আমরা বলেছিলাম, এই স্থানীয় সরকার নির্বাচন না হলেও জাতীয় নির্বাচন যেটা হয়, সেটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে। সেখানে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে”- বলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার রকিব উদ্দীন আহমদকে ‘বোবা-কালা’ বলে তার নির্বাচন পরিচালনার ব্যর্থতার কঠোর সমালোচনা করেন খালেদা জিয়া।
“এই নির্বাচন কমিশনার অপদার্থ। শুধু মুখটা চলে যখনই অবস্থা খারাপ মাঝে-মধ্যে মুখটা খুলে। না হলে উনি নীরবে বোবা-কালা হয়ে থাকেন।”
এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সকল সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানান বিএনপি চেয়ারপার্সন।
গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সদস্যদের সংবর্ধনা জানাতে বিএনপি এই অনুষ্ঠানের আযোজন করে। বৌদ্ধ ধর্মের মতে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে এই দিনে গৌতম বৌদ্ধ আবির্ভূত হয়েছিলেন।
খালেদা জিয়া অভিযোগ করে বলেন, “দেশে গণতন্ত্র নেই, মানুষের মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার, কথা বলার অধিকার নেই। কেউ কথা বললেই সে মামলা খাবে, রাজাকার হয়ে যাবে। আর না হলে সন্ত্রাসী বানিয়ে তার উপর অত্যাচার চালাবে।”
সরকার যেসব অপকর্ম ও অপশাসন চালাচ্ছে তা জনগণের কাছে তুলে ধরার জন্য বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের আগত সদস্যদের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।
খালেদা জিয়া বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা হ্যাক নয়, চুরি হয়েছে, লুট করা হয়েছে। ফিলিপাইনে ক্যাসিনোতে সেই টাকা নিয়ে হালাল করেছে।”
প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, “তার ছেলের একাউন্টে যে তিনশ’ মিলিয়ন অর্থ আছে- সে কথাটা সকলে জানেন, এটা সকলকে বলতে হবে তো। এটা কার টাকা? জনগণের টাকা। আর যদি তার টাকা হয়, সে কীভাবে পেলো, তা বলতে হবে তো, হিসাব দিক। জবাব দিক সে কীভাবে সেই টাকা আয় করেছেন, তাহলে সেটা পরিষ্কার হবে।”
“এটা তো ছোট খবর আমরা পেয়েছি। আরো যে বড় বড় কত কী করেছে, একদিন হয়তো জানা যাবে। দেশ তো শেষ হয়ে যাচ্ছে তা বুঝতে হবে। এভাবে সব নিয়ে তারা চলে যাবে। আর আমরা শুধু চেয়ে থাকবো খোলা আকাশের দিকে, তা তো হতে পারে না।”
সম্প্রতি বৌদ্ধভিক্ষু হত্যার কথা উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, “কোনো সম্প্রদায়ের মানুষ আজ নিরাপদ নেই। আগে কখনো ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষ হত্যা হয়নি। এই প্রথমবার তারা এটা শুরু করেছে।”
“এখন পর্যন্ত যত মানুষ হত্যা হয়েছে, তাদের কেউ কী ধরা পড়েছে? একটাও পড়েনি। কারণ হত্যাকারী তাদের দলীয় লোক। সেজন্য ধরা পড়েনি।”
খালেদা জিয়া সকলকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান রেখে দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, “ছাত্রলীগ-য্বুলীগের জন্য এখন কেউ ব্যবসা-বাণিজ্য পর্যন্ত করতে পারে না। এই দেশটাকে যেন তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি হয়ে গেছে। তারা এর মালিক হয়ে গেছে।”
অনুষ্ঠানে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বৌদ্ধ সুমঙ্গল ভিক্ষু, দয়া নন্দ ভিক্ষু, শান্তি রক্ষিত দেরসহ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্যের শুরুতে খালেদা জিয়া বৌদ্ধ পূর্নিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানিয়ে তাদের সাফল্য কামনা করেন। ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে নেতাকর্মীদের দাঁড়ানোর কথাও বলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন।
দলের সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক দীপেন দেওয়ানের সভাপতিত্বে এই শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি ও বুদ্ধিস্ট স্ট্যাডিজ বিভাগের অধ্যাপক সুকোমল বড়–য়া, সাচিং প্রু জেরী, দয়ানন্দ ভিক্ষু, সুশীল বড়ুয়া, প্রথীন চন্দ্র চাকমা, সনথ তালুকদার, চন্দ্রগুপ্ত বড়–য়া প্রমুখ বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা রুহুল আলম চৌধুরী, গোলাম আকবর খন্দকার, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, রবীন্দ্র লাল চাকমা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ান Ñখালেদা জিয়া
দেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাতে মানুষের প্রাণহানিতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে সরকার, দলীয় নেতা-কর্মীসহ সকল শ্রেণীপেশার মানুষের প্রতি তিনি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল এক বার্তায় তিনি এ আহ্বান জানান।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহম্মেদ স্বাক্ষরিত এ বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ আহত, নিখোঁজ এবং হাজার হাজার বাড়িঘর ও ফসলি জমি বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় আমি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
শোকবার্তায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, আজকের (শনিবার) ঘূর্ণিঝড়ে বেশ কিছু মানুষের প্রাণহানিতে দেশবাসীর মতো আমিও গভীরভাবে শোকার্ত ও মর্মাহত হয়েছি। এহেন মর্মান্তিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও হৃদয়বিদারক ঘটনায় দুঃখ প্রকাশের ভাষা আমার জানা নেই। এদেশের কষ্টসহিষ্ণু মানুষ যুগ যুগ ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে নতুন করে সামনের দিকে এগিয়ে গেছে।
বিএনপি প্রধান বলেন, আমি বিশ্বাস করি, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের দুর্যোগ কবলিত মানুষ স্বজন হারানোর বেদনা কাটিয়ে উঠে নব উদ্যমে আবার সবকিছু গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। আমি মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে প্রার্থনা করছি, তিনি যেন ক্ষতিগ্রস্ত ও শোকে ম্রিয়মাণ ঘূর্ণিঝড় কবলিত এলাকার স্বজনহারা মানুষদের এই বিশাল শোক ও কষ্ট সইবার ক্ষমতা দান করেন।
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঘূর্ণিঝড়ে বেশ কিছু সংখ্যক মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় নিহতদের বিদেহী রুহের মাগফিরাত কামনা ও তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন এবং আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন অবিলম্বে নিখোঁজ মানুষদের উদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, আহতদের সুচিকিৎসা এবং ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের বাসস্থান নির্মাণসহ জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণসামগ্রী বিতরণের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
সেইসাথে বিএনপি এবং এর সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে অবিলম্বে বন্যা উপদ্রুত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জোর আহ্বান জানান বিএনপি প্রধান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।