Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রেমিট্যান্সে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি

নয় মাসে ১ হাজার ১৮৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স বাড়ছেই। গত অর্থবছরের মতো চলতি অর্থবছরেও ভালো প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিটেন্সের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে অর্থাৎ জুলাই-মার্চ সময়ে ১ হাজার ১৮৬ কোটি ৮২ লাখ (১১ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ে পাঠিয়েছিলেন ১ হাজার ৭৬ কোটি ১০ লাখ (১০ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন) ডলার। এ হিসাবে এই নয় মাসে প্রবাসীরা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১০ দশমিক তিন শতাংশ বেশি রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন।
সর্বশেষ মার্চ মাসে ১৪৫ কোটি ৮০ লাখ ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত বছরের মার্চে পাঠিয়েছিলেন ১৩১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার।এ হিসাবে মার্চ মাসে গত বছরের মার্চের চেয়ে রেমিটেন্স বেড়েছে ১২ দশমিক ১৭ শতাংশ।
টাকার বিপরীতে ডলারের তেজিভাব এবং হুন্ডি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের কারণে গত অর্থবছরের মতো চলতি অর্থবছরেও রেমিটেন্সে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে বলে মনে করছেন অর্থনীতির গবেষক ও ব্যাংকাররা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, রেমিটেন্স প্রবাহ খুবই ভালো। প্রতি মাসেই বাড়ছে। প্রবাসীদের বৈধ্য পথে রেমিটেন্স পাঠাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তারই ফল পাওয়া যাচ্ছে এখন।
অর্থবছরের বাকি মাসগুলোতেও রেমিটেন্সের এই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম। ২০১৯ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ১৫৯ কোটি ডলারের রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা ছিল এক মাসের হিসেবে রেকর্ড। এর আগে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স এসেছিল ১৫০ কোটি ৫০ লাখ ডলার; গত বছরের মে মাসে।
বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান সূচক রেমিটেন্সে সুখবর দিয়ে শেষ হয়েছিল ২০১৮ সাল। গত বছরে এক হাজার ৫৫৩ কোটি ৭৮ লাখ (১৫.৫৪ বিলিয়ন) ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন তারা। ওই অংক ছিল ২০১৭ সালের চেয়ে প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি।
রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে অর্থনীতির গবেষক জায়েদ বখত বলেন, বেশ কিছদিন ধরেই আমাদের রেমিটেন্স প্রবাহ ভালো। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যে ভালো প্রবৃদ্ধি হচ্ছে তাতে অবদান রাখছে রেমিটেন্স। এভাবে বলা যায়, আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বড় ভ‚মিকা রাখছেন প্রবাসীরা। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিছু ভালো পদক্ষেপ নিয়েছে। একদিকে অবৈধ পথে রেমিটেন্স আসা ঠেকাতে হুন্ডির বিরুদ্ধে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। অন্যদিকে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়ানোরও কৌশল নিয়েছে।
এ সবই রেমিটেন্স বাড়াতে অবদান রাখছে বলে মনে করেন রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জায়েদ বখত।
হুন্ডি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের কারণে গত অর্থবছর রেমিটেন্স বাড়ে। খরা কাটিয়ে বাংলাদেশ ২০১৭-১৮ অর্থবছর শেষ করেছিল ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে।
বর্তমানে এক কোটির বেশি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। তাদের পাঠানো অর্থ বাংলাদেশে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। বাংলাদেশের জিডিপিতে রেমিটেন্সের অবদান ১২ শতাংশের মত।
রিজার্ভ ৩১ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার: এদিকে রেমিটেন্স বাড়ায় বাংলাদেশের বিদেশী মুদ্রার ভান্ডারও (রিজার্ভ) সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে। গত সোমবার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩১ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার। প্রতি মাসে চার বিলিয়ন ডলার আমদানি খরচ হিসেবে এই রিজার্ভ দিয়ে প্রায় আট মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। ২০১৬ সালের পর রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলারের নীচে নামেনি।
দুই বিলিয়ন ডলার বিক্রি: মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে ডলার বিক্রি অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সোমবারও ৮৪ টাকা ২৫ পয়সা দরে ২ কোটি (২০ মিলিয়ন) ডলার বিক্রি করা হয়েছে। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ১ এপ্রিল পর্যন্ত (নয় মাসে) সবমিলিয়ে ২০০ কোটি (দুই বিলিয়ন) ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর বেশিরভাগই রাষ্টায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কাছে বিক্রি করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রেমিট্যান্স

২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ