Inqilab Logo

শনিবার, ০৮ জুন ২০২৪, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

একজন নেত্রী দেশ ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছেন -তোফায়েল আহমেদ

প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : একজন নেত্রী দেশের উন্নয়ন করছেন আর আরেকজন নেত্রী গোলযোগ সৃষ্টি করে দেশকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছেন বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচা শিল্পকলা একাডেমীর ৬নং গ্যালারীতে যুবলীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন। ‘রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম ও বিশ্বে আজ ধ্রুবতারা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা’ গ্রন্থের সপ্তাহব্যাপী সংবাদচিত্র প্রদর্শনীর অংশ হিসেবে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আজ বিস্ময়কর উত্থান হয়েছে। আর এই উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য বেগম খালেদা জিয়া ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। তার এক লোক মোসাদের সঙ্গে বৈঠক করে সরকার উৎখাত করার ষড়যন্ত্র করেছেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) বলেছিলেন, শেখ হাসিনার পতন না হলে আমি ঘরে ফিরে যাবো না। কিন্তু তিনি নিজেই কোর্টে গিয়ে আত্মসমর্পণ করে ঘরে ফিরে গেছেন। ৫ জানুয়ারি নির্বাচন না হলে বাংলাদেশে গণতন্ত্র থাকতো না। শেখ হাসিনা নিজের নেতৃত্বের দৃঢ়তায় ৫ জানুয়ারি নির্বাচন করে দেশে গণতন্ত্র রেখেছেন।
তিনি বলেন, একজন নেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়ন করছেন আর আরেকজন নেত্রী গোলযোগ সৃষ্টি করে দেশকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছেন। যদি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী না হতেন এই বাংলাদেশে কোন দিন বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হতো না। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী না হলে কোন দিন যুদ্ধাপরাধী, মানবতাবিরোধীদের বিচার হতো না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মঙ্গল কামনা করি।
তোফায়েল বলেন, এবার বাজেট হতে যাচ্ছে ৩ লক্ষ ৪০ হাজার কোটি টাকা। এখন খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশ বাংলাদেশ। চাল রফতানীর জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে আমরা ক্রেতা খুঁজবো। ইতোমধ্যেই আমাদের সঙ্গে কিছু আন্তর্জাতিক ক্রেতা সাক্ষাৎ করেছে। আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে দেশে মেট্রোরেল চালু হবে।
তিনি বলেন, এক-এগারোর সময় আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলো। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগের মাধ্যমে নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলো। ২০০৮ সালের নির্বাচনের মধ্যদিয়ে নেত্রী আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় নিলেন।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া স্বাধীনতা বিরোধী, যুদ্ধাপরাধী, মানবতাবিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে আমাদেরকে অপমানিত করেছিলেন। আমাদের নেত্রী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে আমাদেরকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন।
১৯৮১ সালের স্মৃতিচারণ করে তোফায়েল বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আমি ৩৩ মাস কারাগারে কাটিয়েছি। আমি কারাগারে থেকেই সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পেলাম। ১৯৮১ সালের সম্মেলন ঘিরে যে বিভক্তি হয়েছিলো তার ঐক্যের প্রতীক হিসেবে কাজ করেছে শেখ হাসিনা। আমাদের সেদিনের সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিলো তা নেত্রী প্রমাণ করেছেন।
তোফায়েল বলেন, আমরা ১১ জন দিল্লী গেলাম ১৭ মে তারিখ নির্ধারণ করলাম। হাজার হাজার লাখ লাখ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বিমানবন্দরে। আমার মনে হয়েছে আবার ১০ জানুয়ারি ফিরে এসেছে। সেদিন আমার মনে হয়েছে শেখ হাসিনার বেশে বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে ফিরে এসেছে। আমরা শ্লোগান দিয়েছিলাম, ‘ঝড় বৃষ্টির আঁধার রাতে শেখ হাসিনা আমরা আছি তোমার পাশে।’
তিনি বলেন, মানিক মিয়া এভিনিউতে আমরা যখন আসলাম তখন কানায় কানায় পূর্ণ। নেত্রী মঞ্চে উঠলেন। তিনি বললেন, আপনাদের মাঝেই আমি আমার হারানো বাবা-মা-ভাই সবাইকে খুঁজে পাবো। আমরা অনেক দিন মিরপুর রোডে বসে মিলাদ পড়তাম।
সভাপতির বক্তৃতায় যুবলীগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দেশ যখন অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, তখনই বিএনপি-জামায়াত চক্র জঙ্গিদের ব্যবহার করে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরী করতে গুপ্ত হত্যায় মেতেছে। আওয়ামী যুবলীগকে বিএনপি-জামায়াতের এই অপচেষ্টাকে রুখে দাঁড়াতে এবং যেকোন ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করতে সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি বলেন, যুবলীগ হচ্ছে দেশপ্রেমিক-সন্ত্রাসমুক্ত সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার একটি সংগঠন। সুস্থ-সুন্দর সমাজব্যবস্থা গঠনে সবসময় এই সংগঠনটি দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসেছে। এই সংগঠনের নামে কেউ বদনাম করবেন না।
যুবলীগের চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আবার গভীর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একে একে যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন এবং অনেকের ফাঁসি কার্যকর করার মধ্যদিয়ে বিশ্বজুড়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। এছাড়াও বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ সফলভাবে আগামীর পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আজকে বাংলাদেশের দৃশ্যমান উন্নয়নে বিশ্বকেও তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা
ওমর ফারুক বলেন, সেই সময়ে একটি কুচক্রীমহল এসব সফলতাকে মøান করে দিতে দেশ এবং দেশের মানুষের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় একে একে আওয়ামী লীগের পরিবার এবং দলের নেতাকর্মীদের গুপ্ত হত্যার মধ্যদিয়ে দেশে বিশৃঙ্খলা শুরু করেছে জঙ্গীরা।
তিনি বলেন, আমি যুবলীগের প্রতিটি জেলা-উপজেলা এবং ইউনিয়ন পাড়া-মহল্লার নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিচ্ছি এদের (জঙ্গী) যেখানেই পাবেন, সেখানে গণধোলাই দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেবেন।
আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশীদের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন একাত্তর টিভি’র এমডি মোজ্জামেল বাবু, এসএ টিভি’র যুগ্ম বার্তা সম্পাদক জাহিদুর রহমান, গাজী টিভি’র প্রধান বার্তা সম্পাদক ইকবাল কবির নিশান, এটিএন বাংলার প্রধান প্রতিবেদক মনিউর রহমান, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী, আতাউর রহমান, ফারুক হোসেন, বেলাল হোসেন প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: একজন নেত্রী দেশ ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছেন -তোফায়েল আহমেদ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ