Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুদক কর্মকর্তাদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন

দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান

প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তারা উচ্চ নৈতিকতার পরিচয় দেবেন এমন প্রত্যাশা করে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেছেন, দুদককে কার্যকর ভূমিকায় দেখতে চাই। কমিশনের সঙ্গে যারা জড়িত, তারা উচ্চ নৈতিকতার পরিচয় দিতে পারলে জনগণের আস্থা ফিরে আসবে এবং দুর্নীতি প্রতিরোধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরাও কাজ করার সাহস পাবেন। তিনি বলেন, যত বেশি মানুষের মনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি করা যাবে, দুর্নীতির ক্ষেত্র ততটাই সংকুচিত হয়ে আসবে।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে দুদকের পক্ষ থেকে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আনিসুজ্জামান এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, শুধু দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একার পক্ষে দুর্নীতি দমন করা সম্ভব নয়। এর জন্য সর্বস্তরে মূল্যবোধ সৃষ্টি এবং সচেতনতা বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, ‘রোগের চিকিৎসার চেয়ে রোগ প্রতিরোধ করা গেলে সেটা বেশি কাজে দেয়। আমরা যদি আমাদের শুভবুদ্ধি, মূল্যবোধ, দেশপ্রেম দিয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে পারি, তাহলে দুর্নীতি দমন নিয়ে যে নানা প্রশ্ন রয়েছে, তা দ্বিতীয় স্তরে নেমে আসবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘ভয় দিয়ে কোনো কিছু জয় করা যায় না। আমি মনে করি, দুদককে বাঘের সঙ্গে তুলনা করা উচিত নয়। যারা দুর্নীতিবাজ, কেবল তারাই দুদককে ভয় পাবে। আমি বিশ্বাস করি, ভয় দিয়ে নয়, সম্মান ও সততা দিয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে হবে।’ সবাই মিলে একই প্রক্রিয়ায় কাজ না করলে দুর্নীতি স্থায়ীভাবে কমানো যাবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘পানামা পেপারস কেলেঙ্কারির বিষয়টি আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। এজন্য টিম গঠন হয়েছে, সেই টিম অলরেডি কাজ শুরু করেছে। আমরা কিছু নোটিশও দিয়েছি। কয়েকজনকে ডাকাও হয়েছে। তারা আমাদের কাছে সময় চেয়েছেন। আমরা তাদের সময়ও দিয়েছি। তারপর আমরা বুঝতে পারব তারা কী দেয়। এছাড়া আমরা ইতোমধ্যে কিছু তথ্যও পেয়েছি, তবে তদন্তের স্বার্থে কিছু বলা যাচ্ছে না।’
বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর অনুসন্ধানের বিষয়ে বলেন, ‘আপনারা নিজেরাই লিখেছেন, তিনি এত সম্পদ কোথা থেকে পেয়েছেন। সেজন্যই আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ। শুধু আসলাম সম্পর্কে নয়, অনেকের জন্যই একই প্রশ্ন। তাই অভিযোগটি যখাযথ মনে করেই অনুসন্ধানে নেমেছি। আর ব্যাংকে যারা ভুয়া মর্টগেজ দিয়ে টাকা নেয় তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
প্রভাবশালীদের কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না? এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘এমন প্রশ্ন ওঠার কোনো কারণ নেই। আপনারা নিজেরাও জানেন আমরা আইনের বাইরে কোনো কাজ করতে পারব না। কেউ যদি আইনের কাছে আশ্রয় নিয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে আমরা কিছু করতে পারব না। আর আমাদের কাছে কোনো প্রভাবশালী নেই।’
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) এ এফ এম আমিনুল ইসলাম, দুদক সচিব আবু মো: মোস্তফা কামাল, দুদক মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) ড. শামসুল আরেফিন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ঢাকা, সিলেট, ময়মনসিংহ বিভাগের জেলা ও উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির ১১৭ জন সদস্যকে সনদ ও সম্মাননা ক্রেস্ট দেয়া হয়। তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের শ্রেষ্ঠ জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি হিসেবে নরসিংদী কমিটি, ময়মনসিংহ বিভাগে ময়মনসিংহ জেলা কমিটি ও সিলেট বিভাগে সিলেট জেলা কমিটিকে শ্রেষ্ঠ কমিটি হিসেবে পুরস্কৃত করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুদক কর্মকর্তাদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ