পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নূরুল ইসলাম : ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের আয়তন বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। দুটিতেই ৮টি করে ইউনিয়ন যুক্ত হয়েছে। বেড়েছে জনসংখ্যাও। বিশেষজ্ঞদের মতে, সিটি করপোরেশনের বর্তমান কাঠামো ও ক্ষমতা বজায় রেখে আধুনিক নগর ব্যবস্থাপনার কাজটি কিছুটা হলেও অসম্ভব হবে। ঢাকা শহর ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সেবামূলক সংস্থাগুলোর সমন্বয় না থাকায় বাড়তি এই আয়তন নিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে দুই মেয়রকে। বর্তমান আয়তন ও জনসংখ্যা নিয়েই যেখানে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে আয়তন দ্বিগুণ করে দুই সিটির নাগরিকদের ভোগান্তি বাড়বে বলে অনেকেরই আশঙ্কা।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে নতুন করে ১৬ ইউনিয়ন যুক্ত করেছে সরকার। যার মধ্য দিয়ে দুই সিটির মিলিত আয়তন বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। নতুন করে ১৬ ইউনিয়ন যুক্ত হওয়ায় ঢাকা সিটি করপোরেশনের এলাকার আয়তন ১২৯ বর্গকিলোমিটার থেকে বেড়ে ২৭০ বর্গকিলোমিটারে গিয়ে দাঁড়াল। দক্ষিণের চেয়ে উত্তর সিটি করপোরেশনের আয়তন বেড়েছে বেশি। আয়তন বৃদ্ধির ফলে ঢাকা উত্তরের জনসংখ্যা দাঁড়াবে ১ কোটি ৬ লাখ ২৭ হাজার ১৭ জনে আর দক্ষিণের জনসংখ্যা হবে ৭৫ লাখ ৫৮ হাজার ২৫ জন। ২ সিটি করপোরেশন মিলে ঢাকার জনসংখ্যা দাঁড়াবে ১ কোটি ৮১ লাখ ৮৪ হাজার ৪১। তবে জনসংখ্যার এই হিসাব ২০১১ সালের আদমশুমারির ভিত্তিতে করা। এরপর ৫ বছরেরও বেশি সময় কেটে গেছে। অনেকেরই ধারণা ইতোমধ্যে এই সংখ্যা ২ কোটি ছাড়িয়ে গেছে।
গত ৯ মে সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) সভায় এ প্রস্তাব অনুমোদন পায়। ১৬ ইউনিয়ন সিটি করপোরেশনের আওতায় আসায় এখানকার প্রায় ১০ লাখেরও বেশি মানুষ এ দুটি সিটি করপোরেশনের আওতায় এলো। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে যুক্ত হওয়া ৮ ইউনিয়ন হলোÑ বেরাইদ, বাড্ডা, ভাটারা, সাঁতারকূল, হরিরামপুর, উত্তরখান, দক্ষিণখান ও ডুমনি (খিলক্ষেত)। আর ঢাকা দক্ষিণে যুক্ত হওয়া ৮ ইউনিয়ন হলো- শ্যামপুর, দনিয়া, মাতুয়াইল, সারুলিয়া, ডেমরা, মান্ডা, দক্ষিণগাঁও ও নাসিরাবাদ। এই ১৬টি ইউনিয়ন বহু সমস্যায় জর্জরিত। কোনো কোনো ইউনিয়নে নাগরিক সুবিধা বলতে কিছুই নেই। বর্ষা এলেই পানিতে তলিয়ে যায় রাস্তাসহ বাড়ি-ঘর। কোনো কোনো ইউনিয়নে গ্যাস নেই, পানি নেই। নেই চলাচলের মতো রাস্তাও।
বাড্ডার রাস্তার বেহাল অবস্থা
বাড্ডা ইউনিয়নের সবগুলো সড়কই খানাখন্দে ভরা, কর্দমাক্ত। বর্ষাকালে থই থই করে পানি। হাঁটু সমান কাদাপানি মাড়িয়ে চলাচল করে পথচারীরা। বড় গর্তগুলোয় আটকে যায় গাড়ির চাকা। বাড্ডা-সাঁতারকুল প্রধান সড়কের বেহাল অবস্থার জন্য ওই অঞ্চলের বাসিন্দারা খুবই বিরক্ত। সিটি করপোরেশন ঘোষণার পর তারা খুশি। তবে কতোটুকু নাগরিক সেবা মিলবে তা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। জানা গেছে, ১৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বাড্ডা ইউনিয়নের মোট সড়কের পরিমাণ ২৫ কিলোমিটার। এরমধ্যে পাকা সড়ক ১০ কিলোমিটার, আধাপাকা সড়ক ৫ কিলোমিটার এবং কাঁচা সড়ক ১০ কিলোমিটার। বাড্ডা ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যমতে, বাড্ডা এলাকার শতভাগ সড়কেরই বেহালদশা। ভাঙ্গাচোরা, খানাখন্দে ভরা সড়কে চলাচল করতে রীতিমতো নাকাল ভবিষ্যতের গুলশান-৩ এলাকা বলে খ্যাত বাড্ডা এলাকার সাত লাখ মানুষ। বাড্ডা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বাড্ডা ইউনিয়নের প্রধান সমস্যা ভাঙ্গাচোরা সড়ক। বেহাল সড়কের কারণে আমাদের এলাকার বাসিন্দারা সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বাড্ডার অবস্থান অভিজাত গুলশান সংলগ্ন হলেও ওই এলাকার বাসিন্দারা এখনো ন্যূনতম নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এখনো ওই এলাকার আবর্জনা সংগ্রহ করা হয় না। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আবর্জনা সংগ্রহ করে এলাকার ডোবা-নালা, বড়দিয়া ও সুতিভোলা খালসহ প্রগতি সরণী সড়কে সিটি কর্পোরেশনের ডাস্টবিনে ফেলে। তবে বেশিরভাগ আবর্জনা যত্রতত্র খোলা জায়গায় ফেলা হয়। বেশিরভাগ সড়কে সড়কবাতি নেই। মশা-মাছি, বেওয়ারিশ কুকুর নিয়ন্ত্রণে বাড্ডা এলাকায় কোনো কার্যক্রম নেই। বাড্ডা এলাকায় বিশাল জনগোষ্ঠীর বসবাস হলেও নেই কোনো খেলার মাঠ, পার্ক। দুটি খাল থাকলেও তা ময়লা-আবর্জনায় ভরাট হয়ে যাচ্ছে। শতাধিক পয়োবর্জ্যরে সংযোগ রয়েছে ওই দুটি খালে। এতে ওই খালের পানিতে উৎকট দুর্গন্ধ। আশপাশের বাসিন্দারা খালের পানির দুর্গন্ধে রীতিমতো নাকাল।
কাঁচা সড়ক ও বাঁশের সাঁকোর বেরাইদ
বালু নদী বেষ্টিত বেরাইদকে বলা হয় আদর্শ এলাকা। ‘আদর্শ’ শব্দ ব্যতীত বেরাইদ এলাকার বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ উল্টো। মৌলিক নাগরিক সেবাবঞ্চিত মানুষের মাঝে রয়েছে চাপা কষ্ট। জানা গেছে, বেরাইদ ইউনিয়নের সড়কের পরিমাণ প্রায় ২০ কিলোমিটার। এরমধ্যে ১০ কিলোমিটার পাঁকা সড়ক। বাকি ১০ কিলোমিটারের অর্ধেক আধা পাকা, অর্ধেক কাঁচা সড়ক। এছাড়া মেঠে পথ রয়েছে প্রায় ৫ কিলোমিটার। বর্ষার সময় এ ইউনিয়নের কয়েকটি মহল্লার মানুষের একমাত্র ভরসা নৌকা যোগাযোগ। নানা সমস্যার বেরাইদ ইউনিয়নের প্রধান কয়েকটি সড়ক ব্যতিত অন্য সড়কগুলো খুবই সরু। একত্রে দুটি মাইক্রোবাস-টেম্পু-সিএনজি চলাচল করতে পারে না। এমনও সড়ক রয়েছে যে সড়ককে একত্রে দুটি রিকশাও চলতে পারে না। ২০ ভাগ সড়কে সরু, ড্রেনেজ লাইন থাকলেও সেসব ড্রেনে সরাসরি পয়োবর্জ্য সংযোগ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও এলাকার নদী-খাল-ডোবা-নালায় পয়োবর্জ্যরে সংযোগ রয়েছে। এ পদ্ধতি পরিবেশকে মারাত্মকভাবে দূষিত করছে। এলাকাবাসী জানান, প্রায় ১৮ হাজার জন-বসতির বেরাইদে এখনো আবর্জনা পরিষ্কারের কোনো সিস্টেম গড়ে উঠেনি। যে যেভাবে পারছেন যত্রতত্র আবর্জনা ফেলছেন। খাল-ডোবা-সড়ক এবং বাড়ির আশপাশের খালি জায়গা আবর্জনায় ভরাট করা হচ্ছে। বেরাইদের কোনো সড়কেই বাতি নেই। সন্ধ্যার পর পুরো এলাকা ঘুটঘুটে অন্ধকারে ছেয়ে যায়। ওয়াসার পানির লাইন এখনো যায়নি এই ইউনিয়নে। কিছু এলাকায় বৈধ গ্যাস সংযোগ থাকলেও বেশিরভাগ এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়েছেন বলে অভিযোগ মিলেছে। এতোকিছুর পরেও বেরাইদের নামের সাথে আদর্শ এলাকা কেনো লাগানো হয়েছে সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।
দক্ষিণখান : আলোর পাশে অন্ধকার
অভিজাত উত্তরা আদর্শ এলাকা ঘেঁষে অবস্থি’ত রাজধানীর দক্ষিণখান ইউনিয়ন। কাগজে-কলমে আদর্শ ইউনিয়ন দক্ষিণখানের বাসিন্দাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। সড়কগুলো ভেঙ্গে চুরে একাকার। বর্ষার মৌসুম শুরু না হলেও হাঁটু সমান পানি-কাদা সড়কগুলোয়। যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে আবর্জনা। সড়ক দখল করে গড়ে উঠেছে বহুতল ভবন। পানিবদ্ধতা এবং পানি-গ্যাস সংকটে নাকাল হচ্ছে মানুষ। পরিকল্পিত উত্তরার পাশে অপরিকল্পিত দক্ষিণখান আলোর পাশে এক ঘুটঘুটে অন্ধকার জনপদ। ২২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ ইউনিয়নে রয়েছে প্রায় ৬ লাখ লোকের বসবাস। আবাসিক এলাকা হিসেবে পরিচিত হলেও এখানে ১৬০টি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এসব শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালবাহী গাড়ি চলাচলের কারণে সড়কগুলো টেকসই হচ্ছে না।
দক্ষিণখানের সড়কগুলো বেহাল অবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই। সেকান্দার মার্কেট হতে দক্ষিণখান, আজমপুর হতে শাহকবির মাজার রোড, আব্দুল্লাহপুর হতে আটিপাড়া, আশকোনো হজ্জ্বক্যাম্প হতে দক্ষিণখান, কাওলার-শিয়ালখাল হয়ে দক্ষিণখান, দক্ষিণখান বাজার-শাহকবির মাজার হয়ে আটিপাড়া এবং দক্ষিণখান-বরুয়া সড়কে ওই এলাকার প্রধান গণপরিবহন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, দক্ষিণখান ইউনিয়নের মোট সড়কের পরিমাণ ৩৫০ কিলোমিটার। এরমধ্যে আড়াইশ’ কিলোমিটার পাকা এবং ১০০ কিলোমিটার কাঁচা। পাকা সড়কগুলোর ৯০ ভাগেরই পিচ ঢালাই উঠে গেছে। ইট-খোয়া উঠে বেরিয়ে এসেছে মাটি। কাঁচা এবং পাকা সব সড়কের চিত্র এখন একই রকম। কোনো কোনো এলাকার কাঁচা সড়ক পাকা সড়কের চেয়ে ভালো বলে এলাকাবাসীর অনেকের অভিমত।
উত্তরখানে নেই পয়োবর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা
বালু-তুরাগনদী বেষ্টিত উত্তরখান ইউনিয়নের প্রধান সমস্যা পানি ও পয়োনিষ্কাশন ড্রেনেজ সিস্টেম। গ্রামপ্রধান এ এলাকায় ১০ বছর আগেও এটা কোন সমস্যা ছিল না। দিন দিন গড়ে উঠছে বহুতল ভবন, নতুন নতুন আবাসিক এলাকা। স্থানীয় জনবসতির পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের রাজধানীতে কর্মব্যস্ত মানুষগুলো ওই এলাকায় জমি কিনে বাড়ি তৈরি করছেন। কম খরচের কারণে ওই এলাকায় অনেকে ভাড়াও থাকছেন। জানা গেছে, পানি নিষ্কাশন ড্রেনেজ লাইনে ছাড়া সড়ক তৈরি করায় সামান্য বৃষ্টিতে সড়কে পানি জমে যায়। পানিবদ্ধ সড়কে ভারি যানবাহন চলাচল করায় সড়কগুলোয় ফিটনেস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ইট-খোয়া, বালু-পাথর উঠে সড়কগুলোয় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। ওই সব সড়কে চলাচল করা এলাকাবাসীর জন্য খুবই দূরহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে কোনো স্যুয়ারেজ লাইন গড়ে উঠেনি উত্তরখান এলাকায়। পুরনো পদ্ধতিতে মানুষের সৃষ্ট পয়োবর্জ্য অপসারণ করছে এলাকাবাসী। অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠা উত্তরখানের পরিবেশবান্ধবহীনভাবে পয়োবর্জ্য নিষ্কাশনের ফলে ওই এলাকার পরিবেশষ দূষণ হচ্ছে। এ কারণে রোগ-ব্যাধি ছড়াচ্ছে বলেও সংশ্লিষ্টদের অভিমত।
অব্যবস্থাপনার নাম ভাটারা
ঢাকার গুলশান-বারিধারা সংলগ্ন ভাটারা এলাকা এখনো চরম অবহেলিতই। কিছু এলাকায় এখনো অজপাড়া গ্রামের চিত্র। রয়েছে কাঁচা সড়ক, গড়ে উঠেনি ড্রেনেজ সিস্টেম, দখল-ভরাট হয়ে যাচ্ছে সড়ক-ফুটপাত। অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠা এ এলাকায় নেই কোনো পার্ক বা খেলার মাঠ। ফলে শিশু-কিশোরেরা বিনোদন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, অপরিকল্পিত নগরায়নের একটি চমৎকার উদাহরণ হয়ে উঠেছে ভাটারা ইউনিয়ন। ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যমতে, ভাটারা ইউনিয়নে প্রায় ১০০ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। এরমধ্যে পাকা সড়ক রয়েছে ৪০ কিলোমিটার। আধা-পাকা সড়ক রয়েছে ৪০ কিলোমিটার। বাকি ২০ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক। ১০০ কিলোমিটার সড়কের ৮০ কিলোমিটার এলাকায় এখনো পানি ও পয়োবর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। ফলে সামান্য বৃষ্টিতে ভাটারা ইউনিয়নের সড়কগুলোয় পানিবদ্ধতা তৈরি করে। ভারিবর্ষণের সময় এসব সড়কে হাঁটু সমান পানিও জমে থাকে।
দখলদারদের কবলে সাতারকুল
রাজধানীর বাড্ডা থানার উত্তরপূর্ব অংশে অবস্থিত সাতারকুল এলাকা। অভিজাত গুলশান-বারিধারার খুবই কাছে অবস্থিত হলেও এখনো ওই এলাকার অবকাঠামো ও নাগরিক সেবার অবস্থা মফস্বল জেলার যে কোনো ইউনিয়েন চেয়ে অত্যন্ত খারাপ। এলাকাবাসীর মতে, রাক্ষসের মতো ভয়ালরূপে সাতারকুলে আবির্ভূত হয়েছে কয়েকটি আবাসান কোম্পানী। তারা গত কয়েক বছর ধরে ওই এলাকায় কৃষিজমি, জলাধার, ডোবা-নালা ভরাট করে প্রায় জলাধার শূন্য করে ফেলেছেন। ওই এলাকার পানি নিষ্কাশনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম তিনটি খাল প্রায় গিলে ফেলেছে দখলদাররা। জানা যায়, প্রগতি সরণি বাড্ডা থেকে বেরাইদ পর্যন্ত সড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় ১০ কিলোমিটার। এই সড়কে সাতারকুল-বেরাইদ-বাড্ডা এলাকার কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষের চলাচল। ওই এলাকায় চলাচলের প্রধান সড়কটি গত প্রায় তিন বছর ধরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে আছে। সড়কের ৯৫ ভাগ অংশেরই পিচ ঢালাই নেই। ইট, খোয়া উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি করেছে।
রাজউকের ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে হরিরামপুর
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে হরিরামপুর ইউনিয়ন। অবহেলিত জনপদ, গ্রাম প্রধান এই এলাকায় বেশ আগ থেকেই পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। আর সেটা হয়েছে মূলত: এ ইউনিয়নে রাজউক উত্তরা মডেল আবাসিক এলাকা প্রকল্প হাতে নেয়ার কারণে। এরপর উত্তরা তৃতীয় প্রকল্প, রাজউক এ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্প হরিরামপুর ইউনিয়নকে ধাপে ধাপে বদলে দিয়েছে। উত্তরা মডেল আবাসিক এলাকার-১১, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮ নম্বর সেক্টর হরিরামপুর ইউনিয়নভুক্ত এলাকা। তবে হরিরামপুরের ওই এলাকার বাসিন্দাদের মাঝে সবুজ প্রকৃতি, কৃষিজমি এবং কারো কারো পৈত্রিকভিটা হারানোর বেদনাও রয়েছে। জানা গেছে, রাজউক হরিরামপুর এলাকার ওই অংশে পরিকল্পিতভাবে সড়ক নির্মাণ করেছে। নিচু জমি ভরাট করে প্লট তৈরি করেছে। দৃষ্টি নন্দন একাধিক ব্রিজ ও লেক তৈরি করেছে। ওই প্রকল্পের ১৮ নম্বর সেক্টরে বহুতল শতাধিক ভবন তৈরি করছে রাজউক। ওইসব ভবনের ফ্ল্যাটগুলো বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এরপরেও হরিরামপুর ইউনিয়নে এখনো বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। কিছু সড়ক এখনো সরু। গড়ে উঠেনি পানি ও পয়:নিষ্কাশন ড্রেনেজ সিস্টেম। ফলে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে কয়েক বছরে সড়ক উন্নয়নে অনেক কাজ করা হলেও তার ছোঁয়া তেমন একটি নেই।
ন্যূনতম নাগরিক সুবিধা নেই ডুমনিতে
রাজধানীর ডুমনি ইউনিয়নের মোট সড়কের পরিমাণ ২৫ কিলোমিটার। এরমধ্যে ১৫ কিলোমিটার পাকা-আধা পাকা সড়ক। বাকি ১০ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক। ডুমনির সব ধরনের সড়কেরই এখন বেহালদশা। বালু নদী বেষ্টিত ডুমনি ইউনিয়নে এখনো পানি ও পয়োনিষ্কাশন সিস্টেম গড়ে উঠেনি। পৌঁছেনি গ্যাস ও পানি সরবরাহ লাইন। ২০ ভাগ এলাকার বাসিন্দারা বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ডুমনি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চার গ্রামের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার একমাত্র মাধ্যম বাঁশের সাঁকো। সড়ক যোগাযোগ গড়ে উঠেনি এমন এলাকাও রয়েছে ডুমনি ইউনিয়নে। আবর্জনা ব্যবস্থাপনা চলছে সনাতনী পদ্ধতিতে। বাড়ির আশপাশের ডোবা-নালা বা খালি জায়গায় যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে এসব আবর্জনা। রাজধানীর অতিকাছের এই ইউনিয়নের বাসিন্দারা ন্যূনতম নাগরিক সুবিধাটুকুও পাচ্ছেন না।
দনিয়ার ড্রেনেজ ব্যবস্থা নাজুক
দনিয়া ইউনিয়নের মোট সড়কের ২০ ভাগ এখনো কাঁচা। খাল-নিচু জায়গা ভরাট করে চলছে স্থাপনা তৈরির প্রতিযোগিতা। পুরো এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে পানি নিষ্কাশন নালা ভরাট করে স্থাপনা গড়ে তোলায় পুরো এলাকার পানি নিষ্কাশন সিস্টেম অনেটাই অকেজো। শুষ্ক মৌসুমেও বিভিন্ন সড়কে পানি জমে থাকতে দেখা যায়। আর ভরা বর্ষার মৌসুমে পানির নিচে থাকে দনিয়া ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা। অলিগলি-প্রধান সড়ক-ফুটপাত এবং বাসাবাড়িতেও পানি ঢুকে যায়। রাজধানীর গুলিস্তান থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরের দনিয়া ইউনিয়নের অবস্থা বহুদিন ধরেই নাজুক। তবে বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: জুম্মন মিয়া বলেন, বিগত পাঁচ বছরে স্থানীয় এমপি আলহাজ হাবিবুর রহমান মোল্লার সহযোগিতায় এলাকার ৮০ শতাংশ উন্নয়নের কাজ সম্পন্ন করেছি। এর মধ্যে দেড়শ’ রাস্তা, কালভার্ট ও ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে। এতে করে ড্রেনেজ ব্যবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়েছে। তিনি বলেন, দনিয়া এলাকার বহু স্থানে এখনও অতি পুরাতন পানি ও গ্যাস লাইন বিদ্যমান। এ কারণে কোনো কোনো এলাকায় গ্যাস ও পানি সমস্যা রয়েছে। নতুন করে লাইন স্থাপন করা ছাড়া এসব সমস্যা থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। চেয়ারম্যান হওয়ার আগে জুম্মন মিয়া বিগত ২৪ বছর একই এলাকার মেম্বার পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। সিটি করপোরেশন হওয়ার পর মানুষ আগের চেয়ে বেশি সেবা পাবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই প্রশ্নের উত্তর তো আমি দিতে পারবো না।
শ্যামপুরবাসীর যন্ত্রণা যত্রতত্র কল-কারখানা
ঢাকা শহরের অতি কাছের ইউনিয়ন শ্যামপুর। রাজধানী শহরের এত কাছে অবস্থানের পরও শ্যামপুরের উন্নয়নের চিত্র খুবই নাজুক। ন্যূনতম নাগরিক সেবাও পাচ্ছেন না ওই এলাকার বাসিন্দারা। জানা যায়, শ্যামপুর ইউনিয়নের আয়তন ২০২ কিলোমিটার। এরমধ্যে ১৩০ কিলোমিটার পাকা-আধপাকা সড়ক রয়েছে। এই সড়কগুলো কবে সংস্কার হয়েছে তা ভুলে গেছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। পাকা-আধপাকা সড়কগুলোর ইট-পাথর-বালু উঠে মাটি বেরিয়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় গর্তও তৈরি হয়েছে। কোনো কোনো সড়ক এখনো কর্দমাক্ত অবস্থায় রয়েছে। এসব সড়কে চলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয় এলাকাবাসীকে।
এখনো শ্যামপুর ইউনিয়নে কাঁচা সড়ক রয়েছে প্রায় ৫০ কিলোমিটার। বর্ষার মৌসুমে কাদা এবং শুষ্ক মৌসুমে তীব্র ধূলোর সৃষ্টি হয় ওইসব সড়কে। কোনো ধরনের সড়ক যোগাযোগ নেই ২২ কিলোমিটারের বেশি এলাকার। এসব এলাকার মানুষ বাঁশের সাঁকো; কেউবা নৌকায় চড়ে প্রধান সড়কের সঙ্গে নিজ নিজ বাড়ির যোগাযোগ রক্ষা করেন। জানা গেছে, পৌনে দুই লাখ লোকের বসবাসের শ্যামপুরে ভোটারের সংখ্যা ৬৪ হাজার। কোনো নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে, অপরিকল্পিতভাবে হচ্ছে নগরায়ন। বুড়িগঙ্গার তীরবর্তী এই এলাকায় যত্রতত্র কারখানা শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। অনুমোদন ছাড়াই গড়ে উঠছে ভবন। ফলে প্রায়শ দুর্ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি শিল্প মালিকদের তৈরিকৃত ম্যানহোলের ঢাকনা খোলা থাকায় শিশু নীরব খেলার সময় বেখেয়ালে ম্যানহোলে পড়ে মারা যায়। প্রতিবছর শিল্প-মালিকদের অবস্থাপনায় জনজীবনে মারাত্মক ক্ষতিসাধন করলেও তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন নির্বিকার থাকেন।
সারুলিয়ায় আবর্জনার ছড়াছড়ি
সারুলিয়ার সড়কগুলো ভাঙ্গাচোরা। আবর্জনার ছড়াছড়ি যত্রতত্র। সড়কে বাতি নেই। পানি ও পয়োনিষ্কাশন নালাগুলো হয়ে যাচ্ছে ভরাট। সরকারি খাসজমি-সড়ক-খাল দখল করে গড়ে উঠছে স্থাপনা। সড়কে চলছে অবৈধ ট্রাক, সিএনজি, অটোরিকশা। প্রকাশ্যে চলে মাদক ও যৌন ব্যবসা। ফ্রি স্টাইলে এসব অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা চললেও এসব দেখার কেউ নেই। সেবা বঞ্চিত, অবহেলিত এলাকার বাসিন্দারা। এলাকাবাসীর সঙ্গে বলে জানা যায়, রানিমহল, ডগাইর, ডেমরা চৌরাস্তা, বড় ভাঙ্গা এলাকার সড়কের ইট, বালু, খোয়া উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি করেছে। দুইশত কিলোমিটার সড়কের দেড়শ’ কিলোমিটার সড়কেরই বেহালদশা। এসব সড়কের দু’পাশ দখল করে বিভিন্ন দোকানপাট গড়ে তোলায় সড়কগুলো সরু হয়ে পড়েছে। এরপরও ওইসব সড়কের দু’পাশে গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়। এ কারণে নিত্যদিনই সারুলিয়া ইউনিয়নের প্রধান সড়কগুলোতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ওই এলাকার বাসিন্দা ওসব সড়কে চলাচলে দুর্ভোগে নাকাল হচ্ছে মানুষ।
জানা গেছে, সারুলিয়া ইউনিয়নের পানি নিষ্কাশনের কোনো ড্রেন লাইন নেই। প্রাকৃতিক নিয়মে ডিএনডি এবং সারুলিয়া আভ্যন্তরীণ খাল দিয়ে পানি ও পয়োবর্জ্য নিষ্কাশন করা হয়ে থাকে। এসব খালের সঙ্গে সংযোগ কিছু ড্রেন তৈরি করা হলেও সেগুলো পলিথিন ও বিভিন্ন আবর্জনায় ভরাট হয়ে গেছে। খাল দুটিরও খুবই করুণ অবস্থা। সারুলিয়া ইউনিয়নের ৬০ ফুটের খালটি কোনো কোনো জায়গা ৬ ফুটের নালায় পরিণত হয়েছে। আর ওই খালে দু’পাশের বাসিন্দারা ময়লা-আবর্জনা ফেলে খালটিকে ডাস্টবিনে পরিণত করেছে। খালের এই অংশে দু’পাশে এত বেশি দখল হয়েছে যে, ওই এলাকায় কোনো খাল আছে বলে কারও বিশ্বাস হবে না। এলাকাবাসী জানান, বর্ষার মৌসুমে তলিয়ে যায় পুরো ইউনিয়নের সড়কগুলো। এসব সড়কের ময়লা-আবর্জনা মিশ্রিত পানি ডিঙ্গিয়ে চলাচল করতে হয় ওই এলাকার বাসিন্দাদের। ওই সময় দূষিত পানি ব্যবহারে রোগশোকের সাথে ওই এলাকার মানুষের বসবাস।
দুর্ভোগের জনপদ মাতুয়াইল
চরম অব্যবস্থাপনা রাজধানীর মাতুয়াইল ইউনিয়নে। আবর্জনায় ভরাট হচ্ছে খাল-ডোবা-নালা। দখলবাজরা সড়ক-খাল এবং সরকারি খাসজমি দখল করে গড়ে তুলছে অবৈধ স্থাপনা। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে দুর্বল অবকাঠামোর ওপর গড়ে উঠছে অট্টালিকা। ফ্রি স্টাইলে এসব অনিয়ম চললেও এসব দেখার যেন, কেউই নেই। সড়কের উপর, ডোবা-নালায় যত্রতত্র আবর্জনা ফেলছে এলাকাবাসী। এবড়ো-খেবড়ো গর্তে ভরা সড়কগুলো। দখলদারবাজরা সড়ক দখল করে গড়ে তুলছে বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙ্গাচোরা-বেদখল সড়কে চলাচলে নাকাল হচ্ছে মানুষ। সড়কগুলোতে নেই সড়কবাতি নেই; এ কারণে রাতের মাতুয়াইল এক ভূতুড়ে পরিবেশ ধারণ করে। মশা-মাছির উপদ্রবে অতিষ্ঠ ওই এলাকার বাসিন্দারা। নগরায়নের নামে চলছে যথেচ্ছচার। যে যার খুশি মতো দালান-কোঠা গড়ে তুলছে। মাতুয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের আশপাশের সড়ক, মোল্লা ব্রিজ সড়ক, মেহেন্দি বাড়ি সড়ক, মুক্তিযোদ্ধা বাড়ি সড়ক, কাঠের পুল এলাকার ভেতরের গলিপথগুলো এখন চলাচলের অনুপযোগী। মাতুয়াইল স্কুলের পূর্বপাড়া, ইউনিয়ন পট্টি, খুইরা পাড়া, মাতুয়াইল স্কুলের পূর্বপাশ্ব, বটগাছ বাজার, নিমতলী সড়ক, কোণাপাড়া প্রধান সড়কের অবস্থা আরও বেহাল। এসব সড়কে রিকশা, অটোরিকশায়, নারী-শিশুদের চলাচলে অন্তহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
মান্ডায় অলিগলি বেশি
মান্ডা ইউনিয়নের সড়কগুলো অত্যন্ত সরু। একটি-দুটি সড়ক ছাড়া সবগুলোর অবস্থা একই ধরনের। দুটি গাড়ি একত্রে চলাচল করতে পারে না সড়কে। অলিগলিগুলো খুবই সরু। একত্রে দু’জন মানুষও চলাচল করতে পারে না এমন অলিগলির সংখ্যা মান্ডা ইউনিয়নে অহরহ। এলাকাবাসীর মতে, দীর্ঘদিন থেকে মান্ডা এলাকায় নিয়ম না মানার সংস্কৃতি চলে আসছে। সরকারী সংস্থাগুলোও কোনো তদারকি করেনি। যে কারণে মান্ডা এলাকার এই বেহালদশা। অনেকেই মনে করেন, সিটি কর্পোরেশন হলেও বিদ্যমান অবস্থার উত্তোরণ ঘটানো খুবই দূরূহ হবে।
মান্ডা ইউনিয়ন পরিষদের জনগণ ন্যূনতম সেবা থেকেও বঞ্চিত। ইউনিয়নের সর্বমোট সড়কের পরিমাণ ১০ কিলোমিটার। এরমধ্যে এখনো ২ কিলোমিটার কাঁচা। আধাপাকা হবে ৩ কিলোমিটার। বাকি সড়কের অবস্থাও করুণ। সড়কগুলো সংস্কার হয় না কয়েক বছর ধরে। ইউনিয়নের উন্নয়ন বরাদ্দ কোথায় খরচ করে তা নিয়ে এলাকাবাসীর প্রশ্ন রয়েছে। জানা গেছে, গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ সংযোগ পেলেও এসব সেবার তীব্র সংকট রয়েছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থার থাকলেও তার বেহালদশা। দুটি খাল ও জলাধার দখলদারদের কবলে চলে যাচ্ছে।
সেবা বঞ্চিত নাসিরাবাদের জনগণ
রাজধানীর খিলগাঁও থানাধীন নাসিরাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দারা ন্যূনতম নাগরিক সেবা থেকেও বঞ্চিত। ওই এলাকার শতভাগ সড়কেরই বেহালদশা। বছরের পর বছর এই অবস্থা চলমান থাকলেও ওই এলাকার সড়ক সংস্কারে কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো গরজ নেই। গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ সংযোগ সর্বত্র পৌঁছেনি। যেসব এলাকায় পৌঁছেছে ওইসব এলাকায় বছরজুড়ে গ্যাস-পানি-বিদ্যুতের সংকট লক্ষ্য করা যায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, চরম অবহেলিত নাসিরাবাদ ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকায় বছরের অর্ধেক সময় পানিতে তলিয়ে থাকে। দুটি খাল ও একটি নদী বেষ্টিত এই ইউনিয়নের এক গ্রাম থেকে অন্যগ্রামে যেতে নৌকা ব্যবহার করতে হয়। কিছু এলাকায় বাঁশের সাঁকোও তৈরি করে নিয়েছেন এলাকাবাসী।
নাগরিক সেবা বঞ্চিত ডেমরার বাসিন্দারা
বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি সরবরাহ, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, পয়ঃনিষ্কাশন, আবর্জনা ব্যবস্থাপনা, মশক নিধনসহ সব ধরনের মৌলিক নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত ডেমরার বাসিন্দারা। ইউনিয়নের ৭০ ভাগ সড়ক এখনও কাঁচা। ডেমরা ইউনিয়নের মোট ৩৪ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ২৪ কিলোমিটারই কাঁচা। বাকি ১০ কিলোমিটার সড়কের ৬ কিলোমিটার পিচঢালাই এবং ৪ কিলোমিটার আধাপাকা। কিন্তু এসব সড়কের বেশিরভাগই সরু। তার ওপর যত্রতত্র ভাঙ্গাচোরা। দুর্ভোগে নাকাল হতে হয় এলাকার বাসিন্দাদের।
না শহর না গ্রাম : দক্ষিণগাঁও
সুবজাবাগ থানার অন্তর্গত দক্ষিণগাঁও ইউনিয়ন আসলে গ্রাম নাকি শহর বোঝা মুশকিল। এর অবস্থান উত্তরে হাফিজউদ্দিন মাস্টার রোড এবং দক্ষিণ বনশ্রী বেঙ্গল বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত। পূর্বে নাসিরাবাদ ইউনিয়ন-এর শেখের জায়গা গ্রামের পশ্চিম অংশ এবং নেওয়াজ বাগের পূর্বে অংশ থেকে দক্ষিণে গ্রীন মডেল টাউন। পশ্চিম অংশ দক্ষিণ বনশ্রীর পূর্বাংশ এবং রাজার বাগ ২৪ নং ওয়ার্ডের পূর্ব অংশ পর্যন্ত। রাজধানীর সবুজবাগ থানার অন্তর্গত দক্ষিণগাঁও ইউনিনের লোকসংখ্যা দুই লাখেরও বেশি। রাজধানীর পেটের মধ্যে অবস্থান হলেও দক্ষিণগাঁওয়ের বাসিন্দারা ন্যূনতম নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। সিটি কর্পোরেশন ঘোষণার পর এখানকার বাসিন্দারা খুবই আনন্দিত। একজন বাসিন্দা বলেন, আগে আমরা গ্রামে নাকি শহরে বাস করতাম বুঝিনি। এখন বুঝবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।