পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বেগম খালেদা জিয়াকে সুপরিকল্পিতভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আজকে এরা (সরকার) এমন রাষ্ট্র, সমাজ তৈরি করেছে
যেখানে কোনো বিচার নেই, ইনসাফ নেই্। কোথাও বিচার পাবেন না। বিচার বলতে সব উঠে গেছে। দুর্ভাগ্য, সর্বোচ্চ আদালত থেকে নিম্ন আদালত পর্যন্ত তথাকথিত দখলদার সরকারের নির্দেশে চলা-ফেরা করে। একই মামলায় সব আসামীদের জামিন পেলেও দেশনেত্রীর জামিন হয় না। গতকাল (বুধবার) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কেরাণীগঞ্জ (দক্ষিণ) বিএনপির অনশন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, মঙ্গলবার আমি আদালতে বেগম খালেদা জিয়ার
সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম। আমি বলে বুঝাতে পারবো না- আমি এই বেগম খালেদা জিয়াকে কখনো দেখিনি। তিনি এতোটা অসুস্থ যে, উনি মাথা সোজা করে বসতে পারছিলেন না। তার সমস্ত শরীরে যন্ত্রনা-ব্যথা, তিনি কোনো কিছু খেতে পারছিলেন না এবং কিছু খেলে সেটা থাকছে না।
বর্তমান সরকার খালেদা জিয়াকে ভয় পাওয়ার কারণ উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, একটিই মাত্র কারণ- বেগম খালেদা জিয়া বেঁচে থাকলে, ভাল থাকলে, সুস্থ্য থাকলে, বাইরে থাকলে তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার জন্য, মানুষের অধিকারগুলোকে ফিরিয়ে আনবার জন্য, বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য নেতৃত্ব দিতেন। তার সেই নেতৃত্বকেই তারা (সরকার) ভয় পায়। তারা জানে যে, বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের সেই বংশীবাদক। একবার বেরিয়ে আসলে গণতন্ত্রের যে বাঁশি তিনি বাজাবেন সমগ্র দেশের কোটি কোটি মানুষ সেই বাঁশির পেছনে ছুটে আসবে। এর মাধ্যমে আজকে যারা জোর করে, জবর-দখল করে, বেআইনিভাবে ক্ষমতা দখল করে আছে তাদের তখতে তাউস ধূলিস্যাৎ হয়ে যাবে।
সরকার দেউলিয়া হয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আজ এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, আপনারা (সরকার) মানুষের মধ্যে নেই। আপনারা দেউলিয়া হয়ে গেছেন। সে কারনে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে, বন্দুক-পিস্তল দিয়ে ভয় দেখিয়ে, হাজার হাজার মিথ্যা-গায়েবী মামলা দিয়ে হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে আপনাদের
ক্ষমতায় থাকতে হচ্ছে। এভাবে ক্ষমতায় কোনোদিন টিকে থাকতে পারবেন না। সময় আছে এখনো বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন যিনি গণতন্ত্রের প্রতীক। তিনি গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে পারবেন, আপনাদেরকেও রক্ষা করতে পারবেন। অন্যথায় এদেশের মানুষ অতীতে যেভাবে উঠেছিলো, সেভাবে জেগে উঠলে আপনারা সময় পাবেন না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে লড়াইটা হচ্ছে আমাদের অস্তিত্বের লড়াই, জাতি হিসেবে অস্তিত্বের লড়াই। এটা শুধু বিএনপির সংকট না। এই সংকট সমগ্র জাতির। সরকার আমাদের সমস্ত অর্জনগুলোকে ধবংস করে দিয়েছে। জাতি হিসেবে যেসব অর্জন করেছিলাম। আমাদের অধিকার, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় বাস করবো, কথা বলার সুযোগ পাবো, লেখবার সুযোগ পাবো। আজকে সমস্ত অধিকারগুলো কেড়ে নেয়া হয়েছে। তাই তিনি দেশের মানুষকে, নেতাকর্মী, ভূক্তভোগীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্বৈরাচারি ফ্যাসিস্ট সরকার আমাদের বুকের ওপর বসে আছে, তাকে সরিয়ে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করি, দেশনেত্রীকে মুক্ত করি। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ নির্মাণ করি।
মির্জা ফখরুল বলেন, সর্বত্র দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে। এমনকি জেলখানায় গিয়েও রক্ষা নেই। সেখানে ওয়ার্ডে থাকতে হলে ৪০০/৫০০ করে টাকা দিতে হয়, ভালো খাবার খেতে হলেও টাকা দিতে হয়। কোথাও নিস্তার নেই। প্রতি জায়গায় দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে।
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বর্তমান সরকার প্রধান ভীত সন্তস্ত্র। বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে রাখাটাই একমাত্র তার কাজ নয়, তিনি কখন খবর পাবেন গণভবনে বসে খালেদা জিয়ার জীবনাবসন ঘটেছে, সেইদিন হয়ত স্বস্তি পাবেন, শান্তি পাবেন। সেই কারনেই সরকার পরিকল্পিতভাবে অন্যান্য সকল প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। খুব সুস্থ মাথায়, স্থির মাথায় তাকে হত্যার করার জন্য আজকে যে নীলনকশা, ওই নীলনকশার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও প্রতিবাদ আমাদের করতে হবে এবং তাদের এই ষড়যন্ত্র ধবংস না করা পর্যন্ত খালেদা জিয়া শুধু নয়, বাংলাদেশের মানুষের কারো জীবন নিরাপদ নয়। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এখন জাতির জন্য অনিবার্য়। এই অনিবার্য় কাজটি আমাদের যেকেনো সংকট মোকাবিলা করে করতে হবে। একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা পাওয়া তার মৌলিক অধিকার সেটিও তিনি পাচ্ছেন না। তিনি শুধু অসুস্থই নয়, উনার জীবন সংকটাপন্ন। তারপরও আদালত তাকে ছাড়ছে না। অর্ধমৃত দেহ নিয়ে আদালতে তাকে হাজিরা দিতে হয় এবং আদালত তার প্রতি ন্যায় বিচারের দৃষ্টান্ত দেখাতে পারছে না। এজন্য নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুতি নেয়ার আহবান জানান গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৫ ঘন্টার এই অনশন সমাপ্তি টানেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। কেরানীগঞ্জ (দক্ষিন) বিএনপির সভাপতি নিপুণ রায় চৌধুরী সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোজাদ্দেদ আলী বাবুর পরিচালনায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, ঢাকা জেলা সাধারণ সম্পাদক আবু আশরাফ খন্দকার এতে বক্তব্য রাখেন।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।