পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের অর্থনীতির জন্য ক্রমবর্ধমান বৈষম্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)। একই সঙ্গে কাঙ্খিত হরে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি না হওয়া ও বিনিয়োগ বাড়াতে সহজে ব্যবসা করার প্রতিবন্ধকতেও সন্তোষজনক অগ্রগতি হয়নি।
২০১১ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে সরকার। এই পরিকল্পনা সমাপ্তি মূল্যায়ন প্রতিবেদন এসব চ্যালেঞ্জর কথা জানিয়েছে জিইডি। গতকাল সোমবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনষ্টিটিউশনে পরিকল্পনাটির সমাপ্তি মূল্যায়ন প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন জিইডির সদস্য ড.শামসুল আলম। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) আবুল কালাম আজাদ এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ।
প্রতিবেদনে বলা হয়,আগামী দিনে সামষ্টিক অর্থনীতির বেশকিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম আমদানি ও রফতানির লক্ষ্য পূরণ না হওয়া, জাতীয় সঞ্চয় মোট মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) মাত্র ২৯ শতাংশে আবদ্ধ থাকা, কর-জিডিপির অনুপাত বৃদ্ধির পরিবর্তে উল্টো কমে যাওয়া, শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও দরিদ্র্য মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্ত বেষ্টনী কার্যক্রমে পর্যাপ্ত বরাদ্দ নিশ্চিত করতে না পারা। এর বাইরে দশের অর্থনীতি অনেক দুর এগিয়ে গেলেও আয় বৈষম্য প্রকট আকার ধারণ করছে। কর্মসংস্থান বাড়লে এটি কমানো যেত কিন্তু দেশি বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে সহজে ব্যবসা করার সূচকে সন্তোষজনক অবস্থান অর্জন করা যায় নি। অন্যদিকে প্রতিদ্ব›দ্বী দেশগুলোর তুলনায় উৎপাদনশীলতায় পিছিয়ে থাকাও ভবিষ্যৎ অর্থনীতির জন্য চ্যালেঞ্জ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির জন্য শিক্ষা ক্ষেত্রে মান বাড়াতে হবে। এখন সব কলেজেই অনার্স ও মাস্টার্স করানো হচ্ছে। কিন্তু এসব শিক্ষা কি কাজে আসবে তা বোঝা যাচ্ছে না। শিক্ষার মান বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি বলেন, সামাজিক খাতে আমরা অনেক দুর এগিয়ে গেলেও বৈষম্য সেইভাবে কমাতে পারিনি। আমরা অবকাঠামো খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করছি। পদ্মা সেতু বানাচ্ছি, বন্দর উন্নয়ন করছি, রাস্তাঘাট উন্নয়ন করছি। কিন্তু যদি শিল্প কারখানা না হয় তাহলে কর্মসংস্থান হবে কি করে ? বৈষম্য কমাতে হলে কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে।
তিনি জানান, কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন অনেক বেড়েছে। এজন্য সরকার নানা রকম ভর্তুকি ও সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার বাড়াতে হবে।
প্রফেসরে ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন,এই পরিকল্পনাটির মূল্যায়ন প্রতিবেদনটি উন্নয়নের জীবন্ত দলিল। এতে ইতবাচক ও নেতিবাচক সব দিকই রয়েছে। অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় যথেষ্ট আত্ম বিশ্বাস আসে বলেই এই ধরণের প্রতিবেদন তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, শিক্ষার সঙ্গে দক্ষতার সমন্বয় একটা অন্যতম চ্যালেঞ্জ। জনসংখ্যার বোনাসকালকে কাজে লাগাতে হলে মানব সম্পদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি একটি বড় সমস্যা। জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে কৃষির অবদান কমে আসছে। এটা ভাল লক্ষন। কিন্তু আশংকার বিষয় হচ্ছে শ্রম শক্তির একটি বড় অংশেরই প্রধান পেশা হচ্ছে কৃষি। ফলে আয় বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়েনি বললেই চলে। যেটুকু বেড়েছে সেটুকু ভিত্তিবছর পরিবর্তনের কারণে বেড়েছে মনে হয়।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, উন্নয়নের সঙ্গে আইন শৃঙ্খলা অতোপ্রোতভাবে জড়িত। আইন শৃঙ্খলা ভাল থাকলে উন্নয়ন হয়, সেটি এই প্রতিবেদনেই প্রমানিত হয়েছে। তিনি বলেন ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মেয়াদে অনেক বিষয় পিছিয়ে রয়েছি। কিন্তু সেগুলো তৈরি হতে যাওয়া অষ্টক পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় গুরুত্ব দিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে এম এম মান্নান বলেন, সরকারের অগ্রাধিকার বিষয়গুলোর মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। দেশে বৈষম্য কেন বাড়ছে তা গভীরভাবে মূল্যায়ন করে দেখতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষা, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ এ ধরণের জায়গায় বেশি বেশি বিনিয়োগ করলে তার সুফল একেবারেই নিচের দিকের লোকদের কাছে সহজেই পৌঁছাবে। এতে অতিদরিদ্রদের উপকার হবে। প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেক ক্ষেত্রে সাফল্য থাকলেও মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি ষষ্ঠপঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা। ২০১১ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এ পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করে সরকার। এতে পরিকল্পনার শেষ বছরে এসে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮ শতাংশ। কিন্তু অর্জিত হয়েছে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, নতুন সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন, অনেক বেশি এবং দ্রুত উন্নয়ন ইত্যাদি আকাঙ্খা থেকেই এ ধরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। যেটি বাস্তবতার সঙ্গে মিল ছিল না।
প্রতিবেদন অনুসারে ,কর্মসংস্থানের লক্ষ্যও পুরণ হয়নি। তবে যে পরিমাণ মানুষ কর্মের বাজারে প্রবেশ করেছে তার চেয়ে বিশ কর্মসংস্থান হয়েছে। যেমন পরিকল্পনায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯২ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি করার। কিন্তু এর বিপরীতে কর্মসংস্থান হয়েছে ৭৭ লাখ। অন্যদিকে ওই পাঁচ বছরে কর্মের বাজারে প্রবেশ করেছে ৬২ লাখ মানুষ। সুতরাং লক্ষ্যপূরণ না হলেও এক্ষেত্রে সাফল্য এসেছে। তবে পরিকল্পনার সময়কালে বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে বলে মূল্যায়ন প্রতিবেদনে উলেখ করা হয়েছে। ওই পাঁচ বছর সময়েবিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় ৮ হাজার মেগাওয়াট বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১০ সালে দেশে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ছিলো ৫ হাজার ৮২৩ মেগাওয়াট। ২০১৫ সালে তা ১৩ হাজার ৫৪০ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়। একই সঙ্গে মাথাপিছু জাতীয় আয় বৃদ্ধির সাফল্য তুলে ধরা হয়েছে এতে।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।