Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বাজার মনিটরিং দুর্বলতায় ঠকছেন ভোক্তা

প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মিজানুর রহমান তোতা : বাজার নিয়ন্ত্রণ ও ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণে আইন আছে, বাস্তবে প্রয়োগ নেই। ওই আইন প্রয়োগ ও বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য জেলায় জেলায় মনিটরিং ব্যবস্থা চালু থাকার কথা। বাস্তবে নেই বললেই চলে। যদিও থাকে সেটি কাগজ কলমে নামকাওয়াস্তে। এতে ভোক্তা সাধারণ নানাভাবে ঠকছে প্রতিনিয়ত। কৃষিজাত পণ্য উৎপাদনকারীরাও একইভাবে ঠকছে। বিশেষ করে মাঠপর্যায়ে আইনটির প্রয়োগ কাগজ কলমেই সীমাবদ্ধ বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায় মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা কোন নিয়ম নীতি মানছে না। তারা যেটি মূল্য নির্ধারণ করবে সেটিই যেন আইন।
সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ১৯৬৪ সালের এগ্রিকালচারাল প্রডিউস মার্কেটস রেগুলেশন এ্যাক্ট ও ১৯৮৫ সালের সংশোধিত বাজার নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৬(১) ও ১৬(২) ধারামতে কৃষিজাত ও ভোগ্যপণ্যের ক্রয়মূল্য, বিক্রয়মূল্য ও মজুদ পরিস্থিতির তদারকির ক্ষমতা রয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বাজার কর্মকর্তাদের। কিন্তু বাস্তবে কোথাও আইনটির প্রয়োগ হতে দেখা যায় না। তাছাড়া ১৯৫৩ সালের মজুদবিরোধী আইন ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইনেরও প্রয়োগ নেই। মুক্ত বাজার অর্থনীতির কোপানলে ওইসব আইন কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
সেজন্য ক্রমাগতভাবে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে বাজার। জেলায় জেলায় বাজার নিয়ন্ত্রণ কমিটি ও মনিটরিং সেল আছে। যশোরসহ কয়েকটি জেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোথাও কোন কার্যকারিতা নেই বললেই চলে। ভোগ্যপণ্যের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে হৈ চৈ হলে তখন তড়িঘড়ি বাজারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহড়া দেয়া হয়। রমজানকে সামনে রেখে পিঁয়াজ, রসুন, চিনি, ডালসহ নিত্যপ্যয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বাড়ছেই। কেন বাড়ছে তার জবাবও মিলছে না। যশোর, খুলনা, ঝিনাইদহসহ দক্ষিণ-পশ্চিমে বিভিন্নস্থানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাধারণ ভোক্তাদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে বাজার বিপদ নিয়ে। এই অঞ্চলের বেশ কযেকজন খাদ্য ও বাজার কর্মকর্তা বললেন, রমজানকে সামনে রেখে এখন থেকেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করতে সিন্ডিকেটরা অতিমাত্রায় তৎপর। তাদের কথা বাজার মনিটরিং জোরদার করা হলে মুনাফালোভীরা সুবিধা করতে পারবে না। মোদ্দাকথা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের নির্দেশনা মাঠপর্য়ায়ে মোটেও কার্যকর সাধারণত হয় না। জেলায় জেলায় বাজার নিয়ন্ত্রণে আছে মনিটরিং সেল। মাঝে মধ্যে জোরদার মিটিং হয় ঠিকই। কিন্তু বাস্তবে কার্যকর ভূমিকা নেয়ার বিষয়টি অনুপস্থিত থাকছে। যার জন্য বাজার বিপদ নিয়ে ভোক্তাদের দুশ্চিন্তা সবসময়।
সূত্র জানায়, জেলা বাজার কর্মকর্তারা শুধু কোন জিনিসের কি মূল্য তার তালিকা করে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানোর রুটিনওয়ার্ক করে থাকেন।
এর বাইরে কোন দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় না। কিভাবে এবং কেন মূল্যবৃদ্ধি হলো, তার কারণ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেন না বলে অভিযোগ। উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা যায়, যশোরে সবজি উৎপাদনের রেকর্ড রয়েছে। এখানে মাঠে এক মূল্য আর বাজারে ২/৩ গুণ বেশী মূল্য গুণতে হচ্ছে ভোক্তাদের।
জেলা শহর আশোশের ৮/১০ কিলোমিটারের মধ্যে সবজির সব মাঠ এবং পাইকারী হাট। কেউ কখনো গিয়ে তদারকি করার প্রয়োজনবোধ করেন না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাজার মনিটরিং দুর্বলতায় ঠকছেন ভোক্তা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ