দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পৃথিবীতে মানব জাতিকে সৃ্ষ্িট করে তাদের সঠিক পথ প্রদর্শণের জন্য সহীহ কিতাবসহ নবী ও রাসূল প্রেরণ করেছেন। এবং নবী রাসূলের আগমনের স্পষ্ট প্রমাণের জন্য তাঁদের মাধ্যমে কিছু কাজ সম্পন্ন করেছেন যা কেয়ামত পর্যন্ত স্মৃতি বহন করে চলবে। তার মধ্যে বাইতুল্লাহ বা আল্লাহর ঘর অন্যতম। এটিকে আলাহ নিজের ঘর হিসাবে ঘোষণা দিয়েছেন। “ইত্তাখাযাল্লাহু বাইতান ফিদ্দুনিয়া” এটি মুসলিম জাতির জন্য এক অপূর্ব নেয়ামত। অন্য ধর্মের কেউ ইচ্ছা করলে কোরানের সাথে এসব নিদর্শণ প্রমাণ করে মিলিয়ে দেখে তারপর শ্রেষ্ঠ ধর্ম হিসাবে ইসলাম ধর্ম বুঝে শুনে জীবন বিধান হিসাবে গ্রহণ করতে পারবে।
যারা বাপ দাদার ধর্ম হিসাবে জন্ম সূত্রে ইসলাম পেয়েছেন এবং যুগ যুগ ধরে মেনে চলছেন অথচ বাইতুল্লাহ দেখেননি, তারাও যদি বাইতুল্লাহ এক নজর দেখার সৌভাগ্য হয় তাহলে বুঝবেন আপনি প্রকৃত পক্ষেই একজন শ্রেষ্ঠ ধর্মের অনুসারী। আল্লাহ সূরা আলে ইমরানের ৯৬ নং আয়াতে বলেছেন- “নিঃসন্দেহে সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্যে নির্ধারিত হয়েছে, সেটাই হচ্ছে এই ঘর, যা বাক্কা (মক্কা)য় অবস্থিত এবং সারা জাহানের মানুষের জন্য হেদায়েত ও বরকতময়।” এ ঘরটিকে গুরুত্ব দেয়ার জন্য কোরানের শুরুতে যেমন “লা-রাইবা” শব্দ দিয়ে কোন সন্দেহ নেই বলে চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন তেমনি এখানেও নিঃসন্দেহে শব্দটি ব্যবহার করেছেন।
আরো স্মৃতি স্বরণীয় ও গুরুত্ব প্রমাণ করার জন্য আল্লাহ তায়ালা সূরা আলে ইমরানের ৯৭ নং আয়াতে বলেছেন - এতে রয়েছে মাকামে ইব্রাহীমের মত প্রকৃষ্ট নিদর্শন। আর যে, লোক এর ভেতরে প্রবেশ করেছে, সে নিরাপত্তা লাভ করেছে। আর এ ঘরের হজ্ব করা হলো মানুষের উপর আল্লাহর প্রাপ্য; যে লোকের সামর্থ রয়েছে এ পর্যন্ত পৌছার। আর যে লোক তা মানে না। আল্লাহ সারা বিশ্বের কোন কিছুরই পরোয়া করেন না।
এছাড়াও কোরাইশ বংশের উদ্দেশ্যে সূরা কোরাইশের ৩ ও ৪ নং আয়াতে বলা হয়েছে- “অতএব তারা যেন এবাদত করে এই ঘরের পালনকর্তার।” “যিনি তাদেরকে ক্ষুধায় আহার দিয়েছেন এবং ভীতি থেকে তাদেরকে নিরাপদ করেছেন।” আরবি অক্ষর কাফ- আইন ও বা এই তিনটি অক্ষর নিয়ে গঠিত হয়েছে কাবা বা মুকাআব শব্দ, যার অর্থ চার কোণ বিশিষ্ট। যেহেতু কাবাগৃহ চার কোণ বিশিষ্ট সেহেতু এর নাম করণ এখানে এভাবেই এসেছে। অন্য আর একটি ব্যাখ্যা অনুযায়ী আরবিতে সুউচ্চ গৃহকে কাবা বলা হয়। কাবা ঘর উঁচু বলে নামকরণ করা হয়েছে কাবা।
পবিত্র কোরআনের সূরা আল মায়েদাহ-এর দুই জায়গায় এই পবিত্র গৃহকে কাবা নামে সম্বোধন করেছেন। পবিত্র এই গৃহের আরো চারটি নাম রয়েছে। এগুলো হচ্ছে : (১) আল বাইত (২) বাইতুল আতীক (৩) মসজিদুল হারাম ও (৪) বাইতুল মুহাররাম।
আমি এ ঘরটিকে আমাদের জন্য “নেয়ামত” বলছি এ জন্য যে এ ঘরের সাথে স্মৃতিতে জড়িত প্রথম মানব এবং নবী হযরত আদম আঃ থেকে শুরু করে শেষ নবী হযরত মুহম্মদ সঃ পর্যন্ত দুই লাখ চব্বিশ হাজার পয়গম্বরের স্মৃতি। এবং কিছু জান্নাতি বস্তু এখানে আল্লাহ নিদর্শণ হিসাবে রেখেছেন। এ ছাড়া কিছু স্থানকে খাছ করে দোয়া কবুলের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ঘর পৃথিবীর মধ্যখানে অবস্থিত। এই ঘর বরাবর উপরে অবস্থিত বাইতুল মামুর। সেখানে প্রতিদিন সত্তর হাজার ফেরেস্তা তাওয়াফ করেন। যারা একবার তাওয়াফ করেন তাঁরা কেয়ামত পর্যন্ত দ্বিতীয় বার সুযোগ পাবেন না কিন্তু মানুষ ইচ্ছা করলে জীবনের প্রতিদিন কাবা তাওয়াফ করতে পারবেন। (চলবে)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।