পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : নতুন মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আইনের সংশোধনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চেয়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের চিঠির সবুজ সংকেত পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংগঠনটির সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ। কিন্তু এ ব্যাপারে এর আগে অর্থমন্ত্রীর কাছে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে দাবি জানানোর পরেও সুফল পায়নি।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই ভবনের কনফারেন্স রুমে কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স অব মেডিসিনাল প্লান্টস অ্যান্ড হারবাল প্রোডাক্টস ইন বাংলাদেশ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ আশাবাদের কথা বলেন। সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ হারবাল প্রোডাক্ট ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যাসোসিয়েশন এবং মেডিসিনাল প্লান্টস অ্যান্ড হারবাল প্রোডাক্টস বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল।
এর আগে গত রোববার প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো চিঠিতে এফবিসিসিআই বলে, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ব্যবস্থাকে আরো ব্যবসাবান্ধব এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারী ব্যবসায়ীদের অধিকতর সহায়ক করার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও এফবিসিসিআইয়ের যৌথ কমিটির সুপারিশের আলোকে প্রয়োজনীয় সংশোধনপূর্বক মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন-২০১২ বাস্তবায়ন করার জন্য এফবিসিসিআই অনুরোধ জানিয়ে আসছে। কিন্তু এই বিষয়ে এ পর্যন্ত কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাইনি।
মাতলুব আহমাদের স্বাক্ষরিত চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, যৌথ কমিটির সর্বসম্মত সুপারিশের আলোকে নতুন মূসক আইন সংশোধন না করে বাস্তবায়ন করা হলে দ্রব্যমূল্যের অনাকাঙ্খিত বৃদ্ধিসহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীবৃন্দ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে আমরা আশঙ্কা করছি; যা দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
এছাড়াও ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের উদ্ভুত অসন্তোষ ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াকে পুঁজি করে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির অপচেষ্টা হতে পারে বলে ব্যবসায়ী মহল অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এর আগে একই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ২৪ এপ্রিল আরেকটি চিঠি দেন এফবিসিসিসিআই সভাপতি।
সেমিনারে আগামী ৫ বছরের জন্য ভ্যাট মওকুফ চায় হারবাল শিল্প সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা। তারা বলেন, ৫ বছরের জন্য এই সেক্টরের উপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার না করলে এ শিল্প বাঁচবে না। সেমিনারে বাংলাদেশ হারবাল প্রোডাক্ট ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যাসোসিয়েশনের জেনারেল সেক্রেটারি হাসিবুল রহমান বলেন, এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) মনে করছে, এই সেক্টরে অনেক বড় বড় কোম্পানি আছে। কিন্তু এখানে কোনো বড় কোম্পানি নেই। আমরা হাঁটি হাঁটি পা পা করে এগিয়ে চলছি। ৫ বছরের জন্য আমাদেরকে ভ্যাটমুক্ত সুবিধা দিলে পরবর্তীতে এ খাত থেকে অনেক রাজস্ব আয় করা সম্ভব।
সেমিনারে বাংলাদেশ আয়ুর্বেদিক মেডিসিন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সেলিম মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, এই সেক্টরে ভ্যাট আরোপ করলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া শুরু হবে। তাই আমরা ভ্যাট থেকে নিস্তার চাই। তিনি বলেন, পুলিশ, ডিবি, সিআইডি এবং পরিবেশ অধিদফতরের লোকজন আমাদেরকে প্রতিনিয়ত হয়রানি করে। এটা থেকে মুক্তি চাই।
বাংলাদেশ হারবাল প্রোডাক্ট ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান তপন চৌধুরী বলেন, হারবাল সেক্টর একটি উদীয়মান সেক্টর। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে এটি মিলিয়ন ডলারের বিজনেস। কিন্তু আমরা পিছিয়ে আছি। কেননা, এখানে সরকারি প্রনোদনার অভাব রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।