পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কারাবন্দি হওয়ার আগে অসুস্থ হলে ইউনাইটেড হাসপাতালে যেসব ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিয়েছেন তাদের কাছেই এখন চিকিৎসা করানোর কথা জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। কারণ উনি (খালেদা জিয়া) ওই হাসপাতালে (ইউনাইটেড হাসপাতাল) চিকিৎসা নিয়ে থাকেন এবং ওখানেই উনার নিজস্ব বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, যারা সারাজীবন উনাকে চিকিৎসা দিয়েছেন তারা আছেন। এজন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নয়, বেসরকারি হাসপাতাল ইউনাইটেডে চিকিৎসা নিতে চান তিনি।
কারাগারে অসুস্থ বেগম জিয়াকে কারা কর্তৃপক্ষ গতকাল (রোববার) চিকিৎসার জন্য বিএসএমএমইউ হাসপাতালে নিতে চাইলে তিনি আসতে রাজি হননি। তার হাসপাতালে আসতে না চাওয়ার বিষয়ে বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাবের আহ্বায়ক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার এসব তথ্য জানান। তিনি জানান, আমার কাছে যে তথ্য আছে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। এমনকি হুইল চেয়ারের যে পাদানি সেখানেও উনি ঠিকমতো পা তুলতে পারেন না। উনার (খালেদা জিয়া) ইচ্ছা এবং কয়েকদিন আগে কারাগারে উনাকে দেখতে যাওয়া প্রফেসর এএফএম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ টিমও স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, উনাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করতে। বেগম খালেদা জিয়াও জানিয়েছেন তিনি বিএসএমএমইউতে নয়, দীর্ঘদিন ধরে যে হাসপাতালে এবং যেসব চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করিয়েছেন সেখানেই চিকিৎসা করাতে চান। খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে আসবেন না এই খবর নিশ্চিত হওয়ার পর কেবিন ব্লকের সামনে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান ফরহাদ হালিম ডোনার।
এর আগে সকাল থেকেই বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে বিএসএমএমইউতে স্থানান্তরের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। সকাল থেকেই কারা ফটকে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি প্রস্তুত রাখতে দেখা যায়। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের কেবিন ব্লকের ৬২১ ও ৬২২ নম্বর কেবিন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে গুছিয়ে রাখা হয়। ওই ভবনের সামনে অবস্থান নেন বিপুল সংখ্যক পুলিশ। বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসার জন্য আদালতের নির্দেশে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের দুই সদস্যকে নিয়ে সকাল পৌনে ১০টার দিকে ছয় তলায় ওই কেবিন ঘুরে যান হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হারুন। খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে স্থানান্তরের প্রস্তুতির খবরে কারাগারের বাইরে ও বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের সামনে ভিড় করেন সংবাদকর্মী ও বিএনপি নেতাকর্মীরা।
কিন্তু বেলা পৌনে ১২টায় জেলার মাহবুবুল ইসলাম জানিয়ে দেন, খালেদা জিয়া হাসপাতালে যেতে রাজি হননি। কারাগারের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিএনপি চেয়ারপারসনের পছন্দ নয়। উনি চান, উনাকে বিশেষায়িত কোনো হাসপাতালে নেওয়া হোক।
দুপুরে এই খবর জানাজানির পর বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের কেবিন ব্লকে সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাবের আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার। তিনি বলেন, দেশনেত্রী দুই বার এই হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) এসেছিলেন কিন্তু উনি সঠিক চিকিৎসা পান নাই। বিধায় উনি বলছেন যে, আমাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হোক। উনাকে কারাগারে দেখতে যে মেডিকেল টিম গিয়েছিল সেই টিমও বাইরে এসে এই কথা বলেছিল যে, উনাকে (খালেদা জিয়া) ইউনাইটেড হাসপাতালে উনার যে সব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আছে তাদের আন্ডারে চিকিৎসা করানোর জন্য, ওই টিমই প্রস্তাব করেছিল।
খালেদা জিয়া কখনোই বিএসএমএমইউতে আসতে চাননি দাবি করেন ড্যাবের আহ্বায়ক বলেন, দ্বিতীয় দফায় গত অক্টোবরে মাসখানেক এই হাসপাতালে রাখার পর কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়ার সময় চিকিৎসকদের মতামত পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। খালেদার চাওয়া মতো তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়ার দাবি জানিয়ে এর পক্ষে যুক্তি দিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, এদেশে অনেকেই আছেন যারা প্যারোলে দেশের বাইরেও গেছেন, এখনো অনেকে দেশের বাইরে যাচ্ছেন। এই হাসপাতাল থেকে কেউ কেউ দেশের বাইরে যাচ্ছেন। কিন্তু খালেদা জিয়া তো সেরকম কিছু চাচ্ছেন না। দেশের মধ্যেই একটি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা নিতে চান। যেখানে তিনি বিগত দিনগুলোতে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর আগে তার চিকিৎসা করেছেন, তার রোগ সম্পর্কে ধারণা আছে এমন ডাক্তাররা সেখানে আছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রত্যেকটা মানুষের একজন বা একাধিক ডাক্তার থাকে, যার অধীনে তার চিকিৎসা হয়, যে ডাক্তারের ওপর বিশ্বাস থাকে, আস্থা থাকে। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ওই বিশ্বাসটা আছে ইউনাইটেড হাসপাতালে যারা বিশেষজ্ঞ আছেন তাদের দ্বারা উনি চিকিৎসা করাতে চান। অতএব ওখানে চিকিৎসা করা হলে উনি মানসিকভাবে বেটার ফিল করবেন, শারীরিকভাবেও বেটার ফিল করবেন।
খালেদা জিয়া কী কী রোগে ভুগছেন জানতে চাইলে ড্যাবের বিএসএমএমইউ শাখার সভাপতি প্রফেসর ডা. সাইফুল ইসলাম সেলিম বলেন, আমরা দেখেছি যে, উনাকে দুইবার এখানে আনা হয়েছে। রিউমাটোয়েড আর্থ্রাটাইটিসে জয়েন্টগুলো অলরেডি ডিফরমেটিভ হয়ে গেছে, এমন ডিফরমেটিভ যে উনি হুইল চেয়ার ছাড়া চলতে পারছেন না।
এর আগে বিএসএমএমইউ’র পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হারুন সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এখানে আসার কথা ছিল। উনি আজকে (গতকাল) আসবেন না। আমরা যে কোনো সময়ে উনাকে এখানে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। খালেদা জিয়া আসতে না চাওয়ার পেছনে কী যুক্তি দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, উনি (খালেদা জিয়া) আসবেন না। আমাদের এখানে উনার জন্য প্রস্তুত ছিলাম, আমাদের মেডিকেল বোর্ডও প্রস্তুত ছিলেন, কেবিন প্রস্তুত ছিল উনার জন্য। উনি আসলে আমরা যথাযথভাবে চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতাম।
এর আগে গত ৩ মার্চ আদালতে উপস্থিত হয়ে খালেদা জিয়া বলেছিলেন অসুস্থতায় তিনি খুব কষ্ট পাচ্ছেন। একই দিন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। অসুস্থতায় তিনি ভীষণ কষ্টে আছেন। এরপরই তার নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল গত ৫ মার্চ খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দাবি জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সাথে বৈঠক করে। বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুয়ায়ি শীঘ্রই খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেয়া হবে।##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।