Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে খুন

প্রকাশের সময় : ১৮ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : সহকর্মীর কাছ থেকে এক লাখ টাকা পাওনা চাইতে গিয়ে খুন হলেন চট্টগ্রাম ইপিজেডের পোশাক কারখানা শ্রমিক জাফর মিয়া (৪০)। পরিকল্পিতভাবে চলন্ত অটোরিকশায় নির্মমভাবে খুন করা হয় তাকে। নগরীর পতেঙ্গা থানার বিমানবন্দর সড়কে এ খুনের ঘটনা ঘটে। খুনের এক সপ্তাহ পর খুনী বন্ধুসহ তিনজন ধরা পড়ে পুলিশের হাতে। এরপর তাদের জবানবন্দিতে উদঘাটন হয় খুনের রহস্য। গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে, সহকর্মী মোহাম্মদ জিয়াকে এক লাখ টাকা দিয়েছিলেন জাফর মিয়া। সেই টাকা ফেরত চাওয়ায় জিয়ার পরিকল্পনা অনুসারে খুন করা হয় জাফরকে। গ্রেফতার তিনজন হলো- মোহাম্মদ জিয়া, মোমিনুল হক এবং জাকির হোসেন। এদের মধ্যে মোমিনুল ও জাকির সিএনজি অটোরিকশার চালক।
নিহত জাফর মিয়া চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকার (সিইপিজেড) পোশাক কারখানা ইয়াং ওয়ানের শ্রমিক ছিলেন। তিনি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার বাসিন্দা। নগরীর মাইলের মাথা এলাকায় মেসে থাকতেন জাফর। চাকরির পাশাপাশি তিনি সুদের বিনিময়ে টাকা ধার দিতেন বলে জানায় পুলিশ। পতেঙ্গা থানার এসআই মনিরুল ইসলাম বলেন, ১৫ হাজার টাকা সুদের বিনিময়ে জিয়াকে এক লাখ টাকা ধার দেন জাফর। সম্প্রতি জাফর ওই টাকা ফেরত চান। টাকা ফেরত চাওয়ায় জাফরকে খুনের পরিকল্পনা করে জিয়া।
গ্রেফতারকৃতরা ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন জানিয়ে এসআই মনিরুল বলেন, ৯ মে রাতে নগরীর বড়পোল মোড়ে একটি চা দোকানে বৈঠক করে জিয়া, মোমিনুল ও জাকির। এ কাজের জন্য মোমিনুলকে অগ্রিম এক হাজার টাকাও দেয় জিয়া। ১০ মে রাতে দাওয়াত খাওয়ানো এবং টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলে বাসা থেকে জাফরকে ডেকে বের করে জিয়া। জাফরের বাসার সামনে আগে থেকেই সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল মোমিনুলের বন্ধু জাকির।
পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল বলেন, জাকিরকে চেনে না এমন ভাব করে ওই অটোরিকশায় জাফরকে নিয়ে উঠে পড়ে জিয়া ও মোমিনুল। অটোরিকশাটি বিমানবন্দর সড়কের ওয়েস্ট পয়েন্ট এলাকায় গেলে জাফরের গলা চেপে ধরে জিয়া। মোমিনুল গামছা দিয়ে জাফরের গলা পেঁচিয়ে ধরে। জাফরের মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বিমানবন্দর সড়কে অটোরিকশা চালাতে থাকে জাকির। জাফরের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর লাশ সড়কের পাশে ফেলে দেয় মোমিনুল ও জাকির।
১১ মে সকালে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে জাফরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন নিহতের স্বজনরা এসে লাশ শনাক্ত করে। নিহত জাফরের ফোন নম্বরের কললিস্ট অনুসন্ধান করে জিয়ার সাথে শেষ কথোপকথনের বিষয়টি নিশ্চিত হয় পুলিশ। জাফরের মেসের অন্য সদস্যরা জানান, পাওনা টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলে জিয়া তাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়।
এসআই মনিরুল বলেন, এ দুই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বড়পোল এলাকা থেকে জিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্য দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ সদস্যরা নিহত জাফরের মোবাইল ফোন সেট ও মানিব্যাগের সন্ধানে ঘটনাস্থলের আশপাশে গতকাল তল্লাশি চালায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে খুন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ