দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
প্রশ্ন ঃ ফজরের সময় নামায ফরয করা হল কেন ?
প্রথম উত্তর: হযরত আদম আ. যখন ভূ-পৃষ্ঠে অবতরণ করেন, তখন রাতের তিমির অন্ধকারে খুব ভয় পেয়ে যান এবং সারা রাত কাঁদতে থাকেন। কারণ তিনি তো এর পূর্বে জান্নাতে থাকাকালীন সময়ে রাত আর অন্ধকার দেখেননি। যখন রাতের আঁধার কেটে ভোর হল, তখন তাঁর ভয় কেটে গেল। তিনি শুকরিয়া স্বরূপ দুই রাকাত নামায আদায় করলেন। আল্লাহ তায়ালা রাসূলের মাধ্যমে এই উম্মতের ওপর আদমের সেই নামায ফরয করে দিলেন। যাতে আমরা তা আদায় করি এবং মনে করি যে, আমাদের দুঃখ-দুর্দশা, ভয়ভীতি একমাত্র তিনিই অপসারণ করবেন। হযরত আদম আ. রাতের অন্ধকার থেকে মুক্তি পেয়ে দুই রাকাত নামায পড়েন, তাই ফজরের সময় নামায ফরয করা হয়। আর এই উম্মতও তা আদায়ের মাধ্যমে কবর-হাশরের অন্ধকার আসার পূর্বেই রক্ষা পেয়ে যাচ্ছে।
দ্বিতীয় উত্তর: অলস দুনিয়াদারদের জন্য ফজরের সময়টি হচ্ছে আরাম করার সময়। কারণ তারা রাতে খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকে, তাই ফজরে উঠতে পারে না। এজন্য ফজরের নামায পড়া তাদের জন্য খুব ভারি এবং কঠিন। আল্লাহ তায়ালা নেক বান্দাদেরকে খারাপ ব্যক্তিদের থেকে আলাদা করার জন্য ফজরের নামায ফরয করেছেন। নামাযীরা বে-নামাযীদের ঘুমন্ত অবস্থায় নামায পড়ে আল্লাহর রহমত অর্জন করে নেয়। এখন যেভাবে নামাযীরা বে-নামাযীদের ঘুমন্ত অবস্থায় আল্লাহর হুকুম পালনার্থে মসজিদে চলে যায়, সেভাবে কেয়ামতের দিন তারা বে-নামাযীদেরকে ক্রন্দনরত অবস্থায় রেখে জান্নাতে চলে যাবে।
তৃতীয় উত্তর: ফজরের সময় জান্নাতে আল্লাহকে দেখা যাবে। আর ফজরের সময় যেমন রাতের অন্ধকার আর সূর্য কোনটিই থাকে না, তদ্রুপ জান্নাতেও সর্বদা এমন পরিবেশ থাকবে। না দিন না রাত। জান্নাতে ফযরের সময় আল্লাহর দীদার পেতে ঐ সময় নামায ফরজ করা হল।
অর্থাৎ জান্নাতের সময় এমন নূরানী হবে যেমন পৃথিবীতে ফজরের সময় হয়। এজন্যই ফজরের নামায বিশেষভাবে দীদারে ইলাহী নসীব হওয়ার মাধ্যম হিসেবে অভিহিত হয়। যেহেতু আমরা মুনাজাত এবং আল্লাহর দরবারে হাজিরা দেওয়ার জন্য দীদারের সামঞ্জস্যশীল সময়টাকে পেলাম। তাই তার পরিবর্তে জান্নাতে আসল দীদারও আমাদের নসীব হবে। হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ওহে আমার উম্মত! পরকালে আল্লাহর সাথে তোমাদের সরাসরি সাক্ষাত হবে। যদি পূর্ব থেকে আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চাও! তাহলে ফজরের নামায পড়। (বুখারী শরীফ)
অন্য হাদীসে তিনি বলেন, যে ব্যক্তি ফজরের সময় উঠে নামায পড়তে যায়, সে ঈমানের পতাকা নিয়ে যায়, আর যে উঠে বাজারের দিকে চলে যায়, সে শয়তানের পতাকা নিয়ে যায়। (ইবনে মাজাহ)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।