Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

তদন্তের পর ব্যবস্থা -শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ১৭ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : স্থানীয় এমপির উপস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে কানে ধরে উঠ-বস করানোর ঘটনায় খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, তদন্ত করে করণীয় ঠিক করা হবে। গতকাল (সোমবার) সবিচালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের ঘটনাটার খবর নিয়েছি, এটা খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়ে আরো তথ্য নেব। প্রয়োজনে আরও তদন্ত করে এই বিষয়ে যা যা করণীয় সম্ভব সেটা করব। শুক্রবার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে পিটিয়ে জখম করে স্থানীয় জনতা। এক পর্যায়ে স্থানীয় এমপি একেএম সেলিম ওসমান তাকে কান ধরে উঠ-বস করতে বাধ্য করেন। ওই শিক্ষকের অভিযোগ, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যদের ‘অনৈতিক আবদার’ না রাখায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এলাকাবাসীকে জড়ো করে তার উপর হামলা চালানো হয়।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যদি তিনি (শিক্ষক) কোনো অপরাধ বা ভুল করে থাকেন, তাহলে নিয়ম-কানুন আছে, রীতি-রেওয়াজ আছে। এটাকে (কান ধরে উঠ-বস) গ্রহণযোগ্য মনে করি না, এটার জন্য আমরা বিব্রত। আমরা এই ধরনের ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি। একজন শিক্ষককে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি করা কিংবা তার প্রতি এই ধরনের আচরণ করা কখনোই কাম্য হতে পারে না। শুক্রবারের বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের কল্যানদী গ্রামের এ ঘটনা তদন্তে এরই মধ্যে একটি কমিটি করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
এদিকে বরিশালে ‘হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা’ বিষয়ে ফল বিপর্যয়ের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী। বরিশালে পরীক্ষকের ভুলের কারণে ফল প্রকাশের আনন্দের মুহূর্ত বিষাদে পরিণত হওয়া এবং এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। সেই জন্যই আমি ফলের সময় বলেছি, যারা কোন কারণে পাস করতে পারেননি, তারা যেন হতাশ না হন, মন খারাপ না করেন। পরীক্ষা যেহেতু, সকলেই পাস করতে পারেন না। কিছু ফেল করে, সেই হারও কমে আসছে। এখন অনেক বেশি পাস করছে। সেইভাবে একটা অগ্রগতি হচ্ছে, সেটাই আমরা আশা করি, আমরা চাই সবাই পাস করুক। সেই জায়গায় কেউ ফেল করবে কেন? ফেল করার জন্য কেউতো আসে নাই। এইগুলোর মধ্যেই নানা ঘটনা ঘটে। এইগুলোকে আমাদের সেইভাবেই সমাধান করতে হবে, যাতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। বরিশাল বোর্ডে অকৃতকার্য হওয়া এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার পর পুনর্মূল্যায়নে জানা যায় পরীক্ষকের ভুলের কারণে ওই শিক্ষার্থী  ফেল করেছিল। এ বিষয়টি সামনে এনে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দায়টা কার সেটা আমি এখন বলে দিতে পারি না। দায়টা কার- সেটা আমরা বের করবো। বোর্ডকে বলা হয়েছে, ইনকোয়ারি করছে, তদন্ত করে রিপোর্ট দিলে তার ভিত্তিতে হবে। আমিতো এখানে বসে একটা রায় দিতে পারি না। আমাদের আইনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে হবে। সেটা করার জন্য আমরা ইতোমধ্যেই শিক্ষা বোর্ডকে বলেছি। বরিশালে এবারের এসএসসির প্রকাশিত ফলে হিন্দু ধর্ম ও  নৈতিক শিক্ষা বিষয়ে বহু শিক্ষার্থী ফেল করলেও পুনর্মূল্যায়নে অন্তত ২ হাজার জনের ফল সংশোধন হয়। সংশোধনের পর বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুণ কুমার গাইন দুই দিন আগে জানান, এ বোর্ডে এ বছর এসএসসিতে হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ে পরীক্ষার্থী ছিল ১০ হাজার ৪৯২ জন। তাদের মধ্যে ৫ হাজার ৮০৯ জনই ফল পুনর্বিবেচনা ও যাচাইয়ের আবেদন করলে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হয়। সংশোধনে এক হাজার ৯৯৪ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। তাদের মধ্যে অকৃতকার্য থেকে কৃতকার্য হয়েছে  এক হাজার ১৪১ জন। প্রথম প্রকাশিত ফল ভুল হওয়া প্রসঙ্গে বোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক বলেন, নৈর্ব্যক্তিক উত্তরপত্র মূল্যায়নের সময় দুই প্রধান পরীক্ষক ‘খ’ ও ‘গ’ সেট গুলিয়ে ফেলেন। তারা ‘খ’ সেট প্রশ্নের মূল্যায়ন করেন ‘গ’ সেটের উত্তরপত্রের মাধ্যমে আর ‘গ’ সেটের মূল্যায়ন করেন ‘খ’ সেটের উত্তরপত্রের মাধ্যমে। ওই দুই পরীক্ষক হলেন বরিশাল নগরীর ব্রজমোহন স্কুলের শিক্ষক জুরানচন্দ্র চক্রবর্তী ও বরগুনার বিবিচিনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিরেন চক্রবর্তী। তদন্তে তাদের কাজে গাফিলতির প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান বোর্ড চেয়ারম্যান। অপরদিকে, ফেল করার খবর শুনে আত্মহত্যা করা শিক্ষার্থী সর্বজিৎ ঘোষের নাম পাসের তালিকায় রয়েছে বলে জানা  গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তদন্তের পর ব্যবস্থা -শিক্ষামন্ত্রী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ