Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুর্যোগের শঙ্কায় ফাল্গুন-চৈত্র

বজ্রপাত, শিলাবৃষ্টি, কালবৈশাখী ও আকস্মিক বন্যার পূর্বাভাস ফেব্রুয়ারিতে সারাদেশে ১৬২ ভাগই বেশি বৃষ্টিপাত

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

বৈরী আবহাওয়ায় কয়েক ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ-দুর্বিপাকের ঘনঘটায় কাটতে পারে চলতি মার্চ মাস (ফাল্গুন-চৈত্র)। এ মাসে দেশের অনেক জেলায় শিলাবৃষ্টি, বজ্রপাত, কালবৈশাখী ঝড় বা বজ্রঝড় সংঘটিত হতে পারে। ভারী বৃষ্টিতে কোথাও কোথাও অকাল বন্যার আশঙ্কাও রয়েছে। এ কারণে উঠতি বোরোসহ ফল-ফসলহানির আশঙ্কা থেকেই যায়।
গতকাল রোববার বিকেলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সভায় দেয়া মার্চ মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে একথা জানা গেছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক ও বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন আহমেদ। এতে বাংলাদেশ ও আশপাশ অঞ্চলের এবং বৈশ্বিক আবহাওয়া-জলবায়ু পরিস্থিতির তথ্য-উপাত্তসহ বিভিন্ন উপাদান পর্যালোচনা করা হয়। পূর্বাভাসে আরও জানা গেছে, চলতি মার্চ মাসে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলে ১ থেকে ২ দিন শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি থেকে প্রবল আকারে কালবৈশাখী ঝড় বা বজ্রঝড় সংঘটিত হতে পারে। দেশের অন্যত্র ৩ তেকে ৪ দিন শিলাবৃষ্টি, সেই সাথে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কালবৈশাখী ঝড় বা বজ্রঝড় হতে পারে।
এ মাসে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের (৩৪ থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) চেয়ে বেশি থাকতে পারে। মাসের শেষের দিকে দেশের পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু (৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সে.) থেকে মাঝারি (৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সে.) ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
এ মাসে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে (বৃহত্তর সিলেট ও সংলগ্ন ময়মনসিংহ) ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। অতিবৃষ্টিতে ওই অঞ্চলে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে চলতি মার্চ মাসে দেশে সামগ্রিকভাবে স্বাভাবিক বর্ষণের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। তবে গত ফেব্রুয়ারি (মাঘ-ফাল্গুন) মাসের আবহাওয়া পরিস্থিতির পর্যালোচনায় বিশেষজ্ঞ কমিটি জানায়, ফেব্রুয়ারিতে সারাদেশে সার্বিকভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৬২ শতাংশ বেশিই বৃষ্টিপাত হয়েছে। এরমধ্যে বিভাগওয়ারি হিসাবে খুলনা বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে ২৫৩ দশমিক ২ শতাংশ বেশি হারে বৃষ্টিপাত হয়েছে।
ঢাকা বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে ২৩১ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০৪ শতাংশ বেশি, রংপুর বিভাগে ১৭৭ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি, রাজশাহী বিভাগে ১৪৫ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি, বরিশাল বিভাগে ১৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৮ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি, সিলেট বিভাগে ৩৪.৭ শতাংশ বেশি এবং সারাদেশের গড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৬২ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
পশ্চিমা লঘুচাপের সাথে পূবালী বায়ুর সংযোগ বৃদ্ধি এবং তা ঘন ঘন হওয়ার ফলেই সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হারে বর্ষণ হয়েছে। তাছাড়া গত মাসে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাত এবং কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানে।
আজ সোমবার থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত তিন দিনে দেশের অনেক স্থানে দমকা হাওয়ার সাথে বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা, ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস এবং রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সে. বৃদ্ধি পেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এর পরের ৫ দিনে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।
এদিকে পশ্চিমা লঘুচাপের একটি বর্ধিতাংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। গতকাল দেশের কোথাও বৃষ্টিপাত হয়নি। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সীতাকুন্ডে ৩০.৪ এবং সর্বনিম্ন শ্রীমঙ্গলে ১০.৬ ডিগ্রি সে.।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বৃষ্টি

৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ