পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিতিশীলতায় গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে লেনদেন মন্দায় নিম্নমুখী ছিল পুঁজিবাজার। ডিসেম্বরের পর থেকে টানা উত্থানে ২৬ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক বেড়েছিল ৭৩২ পয়েন্ট। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের মুনাফা তোলার প্রবণতায় ডিএসই’র সার্বিক মূল্যসূচক আবারো ২৩৬ পয়েন্ট কমেছে। ডিএসই’র বাজার পর্যালোচনায় এ তথ্য জানা গেছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে অব্যাহত দর পতন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভয়ের সৃষ্টি করেছে। এ সময় লোকসানি কোম্পানির তালিকচ্যুতি বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পেলেছে। তারা বলেন, এ কারনে বাজারে প্যানিক সেল দেখা গেছে। তাই স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি দর পতন হয়েছে।
পুঁজিবাজারের মাসিক লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ফেব্রুয়ারি মাসের অব্যাহত দর পতনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত ৩৫১টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে দর পতন হয়েছে ২৪৯টি বা ৭১ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের। সর্বাধিক ৩৪ শতাংশ দর পতনের মধ্যে দিয়ে লুজারের শীর্ষে ছিল ইমাম বাটন। এছাড়াও সাভার রিফ্যাক্টরিজ, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, এমারেল্ড অয়েল ও ইউনাইটেড ফাইন্যান্সের শেয়ারদর ২৭ থেকে ৩২ শতাংশ কমেছে।
এদিকে, বাজারের ৭১ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের দর পতন হলেও ফেব্রুয়ারি মাসে ৯৫টি বা ২৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের দর বেড়েছে। এর মধ্যে সর্বাধিক ৫২ শতাংশ দর বেড়েছে সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের। এছাড়াও ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, মুন্নু সিরামিক, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, ফরচুন ও মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ।
বাজার পর্যালোচনায় আরো দেখা যায়, ফেব্রুয়ারি মাসে ব্যাংকিং খাতের ৩০টি কোম্পানির মধ্যে ২৬টির দর কমেছে। এর মধ্যে ১০ থেকে ১২ শতাংশ দরপতন হয়েছে আইএফআইসি, সিটি, মিউচ্যুয়্যাল ট্রাস্ট, ন্যাশনাল ও রূপালী ব্যাংকের।
এদিকে, আর্থিক খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে ২২টির দর কমেছে, বিমা খাতের ৪৭টির মধ্যে ৩৫টির দর কমেছে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ১৯টির মধ্যে ১৩টির দর কমেছে। কিন্তু প্রকৌশল খাতের অবস্থা অন্যান্য খাতের তুলনায় ভাল ছিল। ফেব্রুয়ারি মাস শেষে প্রকৌশল খাতের ৩৭টির মধ্যে ২০টি প্রতিষ্ঠানের দর কমেছে, বেড়েছে ১৭টির। ওষুধ ও রসায়ন খাতের ১৬টি প্রতিষ্ঠানের দর কমেছে।
বস্ত্র খাতের ৫৩টির মধ্যে ৩৭টির দর কমেছে। খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের ১৩টি প্রতিষ্ঠানের দর কমেছে। ডিএসই’র তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর ডিএসই’র সার্বিক মূল্যসূচক ৫ হাজার ২১৮ দশমিক ০১ পয়েন্টে। এর পর থেকে অব্যাহত উত্থানে ২৪ জানুয়ারি ডিএসই’র সার্বিক মূল্যসূচক ৫ হাজার ৯৫০ দশমিক ০১ পয়েন্টে স্থিতি পায়। অর্থাৎ ২৬ কার্যদিবসে মূল্যসূচক বেড়েছে ৭৩২ পয়েন্ট।
কিন্তু ২৭ জানুয়ারি থেকে সামান্য কারেকশনের মধ্যে অব্যাহত দর পতনে ডিএসই’র সার্বিক মূল্যসূচক গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ৫ হাজার ৭১১ দশমিক ৮২ পয়েন্টে স্থিতি পেয়েছে। অর্থাৎ ২৩ কার্যদিবসে ডিএসই’র সার্বিক মূল্যসূচক কমেছে ২৩৮ দশমিক ১৯ পয়েন্ট।
পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আবু আহমেদ বলেন, জানুয়ারির টানা উত্থানের পর ফেব্রুয়ারিতে সামান্য কারেকশন হবে এটা সবারই জানা ছিল। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি দর পতন হয়েছে। তিনি বলেন, বাজারের লোকসানি ও স্বল্পমূলধনী কোম্পানিগুলোকে তালিকাচ্যুতির সিদ্ধান্ত বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পেলেছে। এতে করে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ মানষিকতায় পরিবর্তন দেখা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।