Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

দেশে ফিরে যেসব পরীক্ষার সম্মুখীন হতে পারেন অভিনন্দন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

পাকিস্তানি সেনাদের হাতে আটকের পর প্রায় আটচল্লিশ ঘণ্টা পর দেশে ফিরেছেন বিমানবাহিনীর পাইলট অভিনন্দন বর্তমান। সেই উপলক্ষে ভারত জুড়ে উৎসবের আবহ। অভিনন্দনকে স্বাগত জানাতে ওয়াঘা সীমান্তে অনেক মানুষের ভিড়। কিন্তু দেশে ফিরেই কি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন তিনি? সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, অসীম সাহসের পরিচয় দিয়েছেন অভিনন্দন বর্তমান। ১৯৭০ সালে তৈরি পুরনো মিগ-২১ নিয়ে অত্যাধুনিক পাক যুদ্ধবিমান এফ-১৬কে তাড়া করে সে দেশে ঢুকে পড়েন তিনি। এর জন্য অবশ্যই প্রশংসা প্রাপ্য তাঁর। কিন্তু শত্রুদেশের হেফাজত থেকে ফিরেছেন, দফায় দফায় জেরার মধ্য দিয়ে যেতেই হবে তাঁকে।
বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে যদিও এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে অভিনন্দন কোন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারেন, বিমানবাহিনী আধিকারিকদের কাছ থেকে তার ইঙ্গিত মিলেছে। ওয়াঘা সীমান্ত থেকেই বাড়ি ফিরতে পারবেন না অভিনন্দন। বরং সেখান থেকে সরাসরি বিমানবাহিনীর গোয়েন্দাদের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে তাঁকে। বেশ কিছু ডাক্তারি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে অভিনন্দনকে। দেখা হবে তিনি ফিট কিনা। বন্দিদের শরীরে অনেকসময় মাইক্রোচিপ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, যার মাধ্যমে আড়ি পেতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নেয় শত্রুপক্ষ। অভিনন্দনের শরীরে সেরকম কোনও চিপ বসানো হয়েছে কিনা, তা স্ক্যান করে দেখা হবে। মনোবিদের কাছেও নিয়ে যাওয়া হবে অভিনন্দনকে। বন্দি থাকা অবস্থায় ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংক্রান্ত তথ্য হাতাতে শত্রুপক্ষ তাঁকে অত্যাচার করেছে কিনা তা জানার চেষ্টা করা হবে। পাকিস্তানে কোনও ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে কিনা দেখা হবে তাও।
অভিনন্দনকে জেরা করতে আনা হতে পারে ইনটেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) এবং রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (র) আধিকারিকদেরও। তবে সচরাচর পাইলটদের তাঁদের হাতে তুলে দেয় না বিমানবাহিনী। তাই অভিনন্দনের ক্ষেত্রে তা নাও হতে পারে।
পাকিস্তানে পা রাখা থেকে ওয়াঘা সীমান্ত পার করা, গোয়েন্দাদের প্রতি মুহুর্তের সবিস্তার বর্ণনা দিতে হবে অভিনন্দনকে। বন্দি অবস্থায় তাঁর কাছে কী কী জানতে চাওয়া হয়, তা জানাতে হবে তাঁকে।
গত বুধবার তিনি বিমানে ওঠা থেকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে বিমান ভেঙে পড়া পর্যন্ত গোটা ঘটনার জানতে চাইবেন গোয়েন্দারা।
পাক সেনাবাহিনী তাঁর মিগকে নিশানা করতে করে কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করেছিল, তাও জানার চেষ্টা করা হবে। তাঁর সঙ্গে থাকা কোন কোন নথি তিনি নষ্ট করতে পেরেছিলেন এবং কী কী নথি পাক সেনার হাতে পৌঁছেছে তারও তালিকা তৈরি করা হবে।
শত্রুপক্ষের হাতে বন্দি ছিলেন অভিনন্দন। সেখানে তাঁকে আপসের কোনও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল কি না, তাঁকে ব্যবহার করার কোনও চক্রান্ত কোনও করা হয়েছি কি না সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করবেন গোয়েন্দারা। এই গোটা পদ্ধতিকে সামরিক পরিভাষায় বলা হয় ‘ডিব্রিফিং’।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিমানবাহিনী আধিকারিক জানিয়েছেন, জেরা এবং ডাক্তারি পরীক্ষায় নিজেকে মানসিক ও শারীরিকভাবে সক্ষম প্রমাণ না করতে পারলে, আর কোনও দিনই হয়ত যুদ্ধবিমানে সওয়ার হতে পারবেন না অভিনন্দন। সে ক্ষেত্রে ডেস্কের কাজে বসিয়ে দেওয়া হতে পারে তাঁকে। তবে তাঁর সঙ্গে কোনও রকম বৈষম্যমূলক আচরণ করা হবে না। খেয়াল রাখা হবে, কোনও পরিস্থিতিতেই তাঁকে যেন অসম্মানিত হতে না হয়।



 

Show all comments
  • Md Akinur ২ মার্চ, ২০১৯, ১:৩১ এএম says : 0
    এক লোক নরেন্দ্র মোদীকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করতেছে: “মোদীজী, সামনের সপ্তাহে আমার ছেলের ভূগোল পরীক্ষা। তো, বিশ্ব মানচিত্রে কি পাকিস্তান রেখে শেখাবো নাকি পাকিস্তানকে ভারতের মধ্যে রেখে নতুন মানচিত্র আর্ট করা শেখাবো?”
    Total Reply(0) Reply
  • উত্তম মিত্র (Kolkata) ২ মার্চ, ২০১৯, ১:৩২ এএম says : 0
    গোটা বিশ্বের কাছে কূটনীতিতে আমার দেশের মুখ পুড়লো, শুধু অশিক্ষিত মোদীর জন্য। একটা ভিখারি দেশ শুধু শিক্ষিত রাষ্ট্রনেতা পেয়ে আমাদের হেঁট করে দিল। অশিক্ষা আর মোদী হটাও। জয় হিন্দ! বন্দেমাতরম! (এক্ষুনি বিজেপি আরএসএস অশিক্ষিত দেশদ্রোহীরা এসে খিস্তি করে দেশের নামে নোংরা বার্তা দেবে।)
    Total Reply(0) Reply
  • রাজ টিএমসি সাপোর্ট ২ মার্চ, ২০১৯, ১:৩৬ এএম says : 0
    আমি দুঃখিত,লজ্জিত কারণ,মদি সরকার ব্যর্থ পাকিস্তান ও কাশ্মীর বিষয়ে ।মিথ্যার ছড়াছড়ি,দেশের মান সম্মান ডুবিয়ে দিলো সরকার ও মিডিয়া।দেশের মানুষকে মিথ্যার টুপি পড়ানোর ক্ষমা করবে কি দেশবাসী??নাটক আর কতো হবে??ক্ষমতা না হলে গদি ছেড়ে চুড়ি পড়ুন,দেশের সম্মান আর ডুবাবেন না। বাতেলাবাজ শুধু দেশে দাঙ্গা লাগাতে পারে, আর চীন ও পাকিস্থানের বেলাই ভোটের জন্য মিথ্য ভাষন দিয়ে সারে, কাজের বেলায় কাচ কলা । পদত্যগ চাই । ১। পাকিস্তানের পক্ষে ৩০০ লাশের কথা চেপে যাওয়া কিভাবে সম্ভব? ২। ভারত ছাড়া পৃথিবীর কোনো মিডিয়াতে নিউজ আসল না কেন? ৩। ভারতে ৪০+ সেনার মৃত্যুতে সারা ভারত জুড়ে শোক পালন করল। আর ৩০০ জনের মৃত্যু এত বড় ট্রাজেডি পাকিস্তান মুখ বুঝে সহ্য করল কিভাবে? কোনো নাগরিককে শোক জানাতে দেখা গেল না কেন?? ৪। পাকিস্তানের ডন পত্রিকা সেনা, সরকার সবার বিরুদ্ধে নিউজ করে তারা কি করে ৩০০ লাশের ব্যাপার টা চেপে যেতে পারে? ৫। ইউটিউবে Ary news tv লিখে সার্চ দিলেই ভিডিওতে দেখতে পারবেন ভারতীয় সেনারা যেখানে হামলা করেছে সেখানে কোনো ঘর বাড়ি ছিল না। তাহলে এত বড় মিথ্যাচার করার কারণ কি? ৬। পৃথিবীর সব মিডিয়াই কি পাকিস্তানের পক্ষে কেউই তো ১ জনও মৃত্যুর কথা বলতে পারল না?? কূটনৈতিক জয় বলে ফাটা কাঁসর ঘন্টা মিডিয়া যতই বাজাক নরেন্দ্র মোদীর যুদ্ধ-জিগিরের ঢোলটি ফেঁসে গেছে। গতকালের প্রেস বিবৃতিই বুঝিয়ে দিয়েছিল মোক্ষম অস্ত্রটি আস্তিনের নীচে আছে। আজ সংসদে সেই অস্ত্রটি হানে। তা হলো উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানের মুক্তির কথা ঘোষণা করে। আর সারা সংসদ করতালি দিয়ে ইমরান খানের বক্তব্যকে সমর্থন জানায়। এই ঘটনা থেকে একটা প্রশ্ন মনে আসে, পাকিস্তানে প্রবেশ করে ভারত যদি ৩০০ জন বা ৩৫০ জন জঙ্গীকে ভারত নিকেষ করে থাকতো তাহলে সারা পাক সংসদের সকল সদস্যরা অভিনন্দন বর্তমানের মুক্তিকে সমর্থন জানাতো না। আজ বায়ুসেনার বক্তব্য বেশ রহস্যজনক। আজ আর জঙ্গী নিহতের কথা নেই শুধু জঙ্গী ঘাঁটি ধ্বংসের কথা আছে। আবার এও বলা হয়েছে এই ঘাঁটি ধ্বংসের প্রমাণ তারা দিতে পারেন, যদি সরকার চায়। তাহলে বায়ুসেনার এই অভিযানের সাফল্য নিয়ে যেসব ছবি বা ভি ডি ও, যা দেখে আমরা ভীষণ ভীষণ দেশপ্রেমী হয়ে উঠেছিলাম, সবই মিথ্যে, সোশ্যাল মিডিয়ার ভাষায় ফেক। অভিনন্দন বর্তমানের মুক্তি ও প্রত্যাবর্তনের কথাই বারবার উঠে আসছে কিন্তু এখানে আরেকটা খবর আসছে না, বরঞ্চ চেপে যাওয়াই হচ্ছে। তা হলো, মথুরা বাসিন্দা বায়ুসেনার আরেক পাইলট পঙ্কজ নেহারাও মিগ-২১ নিয়ে পাক সীমান্তে টহলদারিতে ছিলেন। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তা ভেঙ্গে পড়ে এবং পঙ্কজ নেহারার মৃত্যু হয়। তারমানে ত্রুটিপূর্ণ বিমান নিয়ে টহল, আর সেই কারনে চেপে যাওয়া। পুলওয়ামাকে কেন্দ্র করে সব প্রশ্নের উত্তর প্রধানমন্ত্রীকে দিতে হবে। বি জে পি-র যুদ্ধের জিগির তুলে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া চাতুরীকে মানুষের সামনে তুলে ধরতেই হবে।@Shyamal Chatterji
    Total Reply(0) Reply
  • Merazul Islam ২ মার্চ, ২০১৯, ১:৩৬ এএম says : 0
    অভিনন্দন শহীদ হওয়ায় বরং ভালো ছিল। ভারত সরকার কি তাকে স্বাভাবিক জীবন দিতে পারবে? পারবে কি আবার বায়ুসেনার চাকুরীতে বহাল করতে? যে বায়ুসেনার জন্য সে জীবন দিতেও প্রস্তুত ছিল, সে বায়ুসেনাই কি অভিনন্দনকে যোগ্য সম্মান দিতে পারবে? যাইহোক, অন্ততঃ বেঁচে থাকবে তো অভিনন্দন, এটা তার বাবা-মায়ের বড় পাওয়া।
    Total Reply(0) Reply
  • Rakibul Hasan ২ মার্চ, ২০১৯, ১:৩৭ এএম says : 0
    ভারতীয় মিডিয়া প্রথমে বলেছিলো অভি নামে কোন পাইলট আটক হয়নি কোন বিমান পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বিধ্বস্ত হয়নি,,,, যার ছবি দেখানো হচ্ছে তা ভুয়া,,,,, আজ এই ঘটনার মাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে মোদি ও তার মিডিয়া মিথ্যাচার করছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Mj Alam ২ মার্চ, ২০১৯, ১:৩৮ এএম says : 0
    ইমরান খানের বুদ্ধি ও প্রজ্ঞার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি মারকানডে কাটজু। তিনি বলেন, আমি আগে ইমরান খানের সমালোচক ছিলাম। কিন্তু টেলিভিশনে তার (রাজনৈতিক) প্রজ্ঞা ও বুদ্ধিদীপ্ত বক্তব্যের কারণে তার ভক্ত হয়ে গেলাম
    Total Reply(0) Reply
  • Masud Pervez Mishu ২ মার্চ, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
    ভারতের বাহাদুরি শুধু বলিউডের মুভিতে আর বাংলাদেশ এর সীমান্তে। আশাকরি অচিরেই তা বলিউডে সীমাবদ্ধ থাকবে। ৪৭ বছরে অনেক সহ্য করেছি এখন প্রতিরোধ এর সময়। এরা বন্ধু দেশ নামের কলঙ্ক।
    Total Reply(0) Reply
  • Ahasan Titu ২ মার্চ, ২০১৯, ১:৪০ এএম says : 0
    পাকি নয় কাশ্মীরের জনগনের মতামতের পক্ষে কথা বলছি, নিজদেশে পরাধীনতার কষ্ট আমরা ১৯৪৭-৭১ উপলব্ধি করেছি; যা এখনও কাশ্মীরীরা বয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের স্বশাসনের মতামত পেশের জন্য গণভোট দরকার যা ভারত দিচ্ছে না। এখানে পাকি রাজাকার বা ভারতের দালাল এমন চিন্তা অসুস্থ মানসিকতার প্রকাশ।
    Total Reply(0) Reply
  • Tajbir Ahmed ২ মার্চ, ২০১৯, ১:৪০ এএম says : 0
    কিছুদিন আগে ভারতের কারাগারে একজন নীরিহ পাকিস্তানী কে, ভারতের লোকেরা হত্যা করে, আর ভারতের পাইলট পাকিস্তানে হামলা করতে গিয়ে ধরা পরেছে, তার পরেও তাকে যথেষ্ঠ সম্মান করেছে, কিন্তু যদি পাকিস্তানের পাইলট ভারত আক্রমণ করতে এসে ধরা পরতো তাহলে কি সেই পাইলট এখনো জীবিত থাকতো,?? হিন্দু আর মুসলমানের এটাই তফাৎ
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাকিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ