পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
প্রভিশন সংরক্ষণ পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে ১৫টি ব্যাংক প্রভিশন ঘাটতিতে পড়েছে। আগের বছরের ডিসেম্বর শেষে ঘাটতি ছিল নয়টি ব্যাংকে। আর তিন মাস আগে গত সেপ্টেম্বরে ঘাটতিতে ছিল ১৩ ব্যাংক। প্রভিশন ঘাটতি রেখে সাধারণভাবে কোনো ব্যাংক তার শেয়ারহোল্ডারদের মুনাফা দিতে পারে না।
আমানতকারীদের সুরক্ষা দিতে সব ধরনের ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে নির্ধারিত হারে প্রভিশন রাখতে হয়। সাধারণ ঋণের বিপরীতে দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে শুরু করে ৫ শতাংশ পর্যন্ত প্রভিশন রাখার নিয়ম রয়েছে। আর যথাসময়ে আদায় না হওয়া নিম্নমান, সন্দেহজনক এবং মন্দ বা ক্ষতিমানে শ্রেণীকৃত খেলাপি ঋণের বিপরীতে যথাক্রমে ২০, ৫০ ও ১০০ ভাগ প্রভিশন রাখতে হয়। ব্যাংকগুলোর অর্জিত মুনাফা থেকে এ অর্থ রাখতে হয়। প্রভিশন ঘাটতি থাকলে সাধারণভাবে লভ্যাংশ দেওয়ার সুযোগ না থাকলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বিশেষ অনুমোদন নিয়ে অনেক ব্যাংক ধাপে ধাপে প্রভিশন রাখার শর্তে কেউ কেউ লভ্যাংশ দেয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোর সার্বিকভাবে ৫৭ হাজার ৪৩ কোটি টাকা প্রভিশন সংরক্ষণের প্রয়োজন ছিল। তবে সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে ৫০ হাজার ৪২৯ কোটি টাকা। এতে করে ঘাটতি দেখা দিয়েছে ৬ হাজার ৬১৪ কেটি টাকা। ১৫টি ব্যাংক ঘাটতিতে থাকলেও বেশ কয়েকটি ব্যাংকে এক টাকাও প্রভিশন উদ্বৃত্ত নেই। এসব ব্যাংক প্রভিশন ঘাটতির ঝুঁকিতে রয়েছে। এর বাইরে কিছু ব্যাংক প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য হলেও বেশি প্রভিশন রাখতে পেরেছে। আর ঘাটতিতে থাকা ১৫ ব্যাংক প্রয়োজনের তুলনায় নয় হাজার ৫২৩ কোটি টাকা কম রাখতে সক্ষম হয়েছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানার চার ব্যাংকের ঘাটতি সাত হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা। বেসরকারি ১১ ব্যাংকে এক হাজার ৬৪০ কোটি টাকা।
ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ঘাটতি রয়েছে ঋণ কেলেঙ্কারির কারণে আলোচিত বেসিক ব্যাংকে। ব্যাংকটির ঘাটতির পরিমাণ তিন হাজার ৮৮ কোটি টাকা। সোনালী ব্যাংকের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৮৮ কোটি টাকা। রূপালী ব্যাংকে ৮৩৪ কোটি টাকা এবং অগ্রণী ব্যাংকে ঘাটতি ৫৯৩ কোটি টাকা। প্রভিশন ঘাটতির তালিকায় প্রথমবারের মতো যুক্ত হয়েছে নতুন প্রজন্মের সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক। ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটি ২৩ কোটি টাকার ঘাটতিতে পড়েছে।
বাকি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ঢাকা ব্যাংকে ৩০৯ কোটি টাকা, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ২৭৭ কোটি টাকা, ট্রাস্ট ব্যাংকে ২৭০ কোটি টাকা, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকে ২২০ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংকে ১৯০ কোটি টাকা, এবি ব্যাংকে ১১২ কোটি টাকা, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকে ৯৭ কোটি টাকা, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে ৮৫ কোটি টাকা, প্রিমিয়ার ব্যাংকে ৩৪ কোটি টাকা ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে ২৩ কোটি টাকা ঘাটতি রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, তিন মাস আগের তুলনায় গত ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ কমে ৯৪ হাজার কোটি টাকা হয়েছে। ব্যাংকগুলোর মোট ঋণের যা ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ। তিন মাস আগে ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ বা ৯৯ হাজার ৩৭১ কোটি টাকার ঋণ ছিল খেলাপি। এক বছরের ব্যবধানে, অর্থাৎ ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় খেলাপি ঋণ ১৯ হাজার ৬০৮ কোটি টাকা বেড়েছে। অবলোপন করা ঋণ যোগ করলে ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ দাঁড়ায় এক লাখ ৩৩ হাজার ২৩২ কোটি টাকা। ডিসেম্বর শেষে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা। তিন মাস আগে যা ৪৮ হাজার ৮০ কোটি টাকা ছিল। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ কমে ৩৮ হাজার ১৪০ কোটি টাকা হয়েছে। তিন মাস আগে ছিল ৪৩ হাজার ৬৬৭ কোটি টাকা। ডিসেম্বর শেষে বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ২৮৮ কোটি টাকা। গত সেপ্টেম্বর শেষে ছিল দুই হাজার ৩৮২ কোটি টাকা। আর বিশেষায়িত ব্যাংকে খেলাপি ঋণ কমে চার হাজার ৭৮৮ কোটি টাকায় নেমেছে। গত সেপ্টেম্বর শেষে ছিল পাঁচ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।