পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে। মঙ্গলবার পাকিস্তানে ঢুকে কথিত জঙ্গি আস্তানা ধ্বংস করার ভারতীয় দাবির পরদিনই তাদের দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হল। গ্রেফতার হল ভারতীয় বিমান বাহিনীর দুই সদস্য। পাকিস্তানের এ দাবি স্বীকার করে নিয়েছে ভারতও। হামলা-পাল্টা হামলা চলমান থাকার মধ্যেই সঙ্কট নিরসনে ভারতকে আবারও সংলাপের তাগিদ দিয়েছে পাকিস্তান। বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে আলোচনার মধ্য দিয়ে শান্তি স্থাপনের ডাক দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তবে ভারত শান্তির পথে হাঁটতে চাইবে না; এমন আশঙ্কা জানিয়ে ইমরান খান হুঁশিয়ার করেছেন, যে কোনও পদক্ষেপের যথাযথ জবাব দেবে তার দেশ। গতকাল নয়াদিল্লিতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছে ভারত। এরপর ভারতের বিরোধীদরগুলোও আলাদ বৈঠকে বসে।
পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলার পর তার জেরে পাকিস্তানে হামলা চালিয়েছিল ভারত ১২ দিন পর। কিন্তু ভারতের হামলা চালানোর পর একদিনের বেশি দেরি করেনি পাকিস্তান। ভারত যেখানে রাতের আঁধারে হামলা চালিয়েছিল, পাকিস্তান সেখানে দিনের আলোয় হামলা চালিয়ে বলেছে, আত্মরক্ষার অধিকার যে আমাদের আছে তা দেখাতেই এ হামলা। অন্যকিছু নয়। সে রকম কিছু হলে ফলাফলও অন্যরকম হতে পারত। পরবর্তী সময়ে ভারতের পক্ষ থেকে যেসব প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এত তাড়াতাড়ি এ ধরনের প্রতিক্রিয়া তারা আশা করেনি। ফলে এখন তার পরবর্তী করণীয় নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। আর ভারতজুড়ে মঙ্গলবার যে উচ্ছ্বাসের বহিঃপ্রকাশ চলছিল, পাকিস্তানের পাল্টা হামলায় তাতেও ভাটা পড়েছে অনেকখানি। ভারতের বিমানবাহিনী মঙ্গলবার পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে সেখানে ঢুকে পড়ে। পাকিস্তান পক্ষ দাবি করে, সেখানে কোনো প্রকার হামলা চালানোর আগেই পাকিস্তানী বিমানবাহিনীর ধাওয়া খেয়ে তারা নিজ দেশে ফিরে যায়। কিন্তু ভারত সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, পাকিস্তানে তারা বিদ্রোহীদের বেশ কিছু ঘাঁটি ধ্বংস করে দিয়ে এসেছে। পরবর্তীতে তারা কোনো প্রমাণ পেশ না করেও দাবি করে, এ হামলায় পাকিস্তানের বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর ৩৫০ মানুষ নিহত হয়। এ হামলার পর থেকেই পাকিস্তান জানায়, আত্মরক্ষার অধিকার তাদের আছে এবং তারা যথাসময়েই তার জবাব দেবে। বুধবার সকালে পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর চারটি এফ-১৬ বিমান ভারতের অভ্যন্তরে ঢুকে সেনাশিবিরে হামলা চালায়। পাকিস্তান দাবি করে, তাদের যে আত্মরক্ষার অধিকার আছে তা বুঝাতেই তারা এই হামলা চালিয়েছে। অন্য ধরনের চিন্তা থাকলে হামলার ধরনও ভিন্ন হতো। তবে ভারত দাবি করে পাকিস্তান ভারতের আকাশসীমায় প্রবেশ করলেও ভারতের বিমানবাহিনীর ধাওয়া খেয়ে তারা নিজ দেশে ফিরে যায়। এক্ষেত্রে ভারতীয় বাহিনীর হামলায় পাকিস্তানের একটি বিমান ভূপাতিত হয়। তবে পাইলট পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। অন্যদিকে একই দিনে পাকিস্তান দাবি করে, তাদের হামলার পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ভারত আবারো পাকিস্তানে হামলা চালাতে গেলে তারা ভারতের দুটি যুদ্ধবিমানকে গুলি করে ভূপাতিত করেছে। এ সময় একটি বিমান আজাদ কাশ্মিরে পড়ে। অন্যটি নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে গিয়ে পড়ে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এ সময় জানানো হয়, দুইজন পাইলটকে গ্রেফতার করেছে পাকিস্তান।
এদিকে এ হামলার প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বুধবার পাকিস্তানের নিরাপত্তা অথরিটির সাথে বৈঠক করেছেন। ডাকেন পাকিস্তানের পার্লামেন্টের বৈঠকও। ফলে মনে করা হচ্ছে আরো বড় কোনো সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে পাকিস্তান। ভারতের হামলার জবাবে একদিন পার না হতেই পাকিস্তানের এ ধরনের পদক্ষেপে কিছুটা হতভম্ব হয়ে পড়েছে নয়াদিল্লি। মঙ্গলবারের হামলার পর তারা বিশ্বকে বুঝাতে চেয়েছিল, আত্মরক্ষার খাতিরেই তারা এ হামলা চালিয়েছে। ফলে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত সময় পার করছে। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংও বৈঠকের পর বৈঠক করছেন নানা বাহিনীর সাথে। মোদি মঙ্গলবার কয়েক দফা বৈঠক করেন। বুধবার তিনি পূর্ব নির্ধারিত একটি শিক্ষার্থী সমাবেশে হাজির হন। কিন্তু সে সময় প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে একটি চিরকুট আসায় মোদি অনুষ্ঠান সমাপ্ত না করে ফিরে আসেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই জরুরি বৈঠকের ডাক দেন তিনি। ওই অনুষ্ঠানের আগে নিজ বাড়িতেও বৈঠক ডেকেছিলেন তিনি। জরুরি সেই বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখলে এবং বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানরা ছাড়াও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। ইতোমধ্যেই ভারতের বেশ কয়েকটি বিমানবন্দরে বিমান উঠা-নামা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সীমান্ত এলাকার অনেক স্কুলে ছুটি ঘোষণা হয়েছে।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর বলেছেন, তারা ভারতের সঙ্গে কোনো যুদ্ধে যেতে চাচ্ছেন না। নয়াদিল্লির সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। কাশ্মীর সীমান্তে দুটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে বিধ্বস্ত করার কয়েক ঘণ্টা পর তিনি এসব কথা বলেন। ইতিমধ্যে পরমাণু সমৃদ্ধ দুই দেশের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়ে গেছে। গ্যারিসন শহর রাওয়ালপিন্ডিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমরা উত্তেজনা বাড়াতে চাই না। আমরা যুদ্ধ বাড়াতে চাই না। তিনি বলেন, ভারতের দুই বিমানচালক আটক হয়েছেন। তাদের একজন হাসপাতালে, আরেকজন কারাগারে।
আসিফ গফুর বলেন, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। এছাড়া ভারতের দুটি যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে। কেবল নিজেদের শক্তি দেখাতেই পাকিস্তান হামলা চালিয়েছে। যেজন্য বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করা হয়েছে, বললেন পাক সামরিক মুখপাত্র। তিনি বলেন, পরিস্থিতির কারণে পাকিস্তানি বাহিনী প্রস্তুত ছিল। কাজেই বিমান দুটিকে তারা ফেলে দিয়েছে। এতে একটি বিমানের ধ্বংসাবশেষ তাদের অংশে গিয়ে পড়েছে, অন্যটা আমাদের অংশে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে বর্তমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতির আর অবনতি দেখতে চায় না তারা। দেশটি দায়িত্ব ও সংযমের সঙ্গে কাজ অব্যাহত রাখতে চায় বলেও জানিযেছেন তিনি। গতকাল (বুধবার) চীনের ওঝেন শহরে চীন ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে ত্রিদেশীয় বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। দুই দেশের মধ্যে যখন ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে ঠিক তখনি এ খবর আসে। সুষমা স্বরাজ আরও বলেছেন, পাকিস্তান ভিত্তিক জয়শে মোহাম্মদ আবারও হামলা চালাতে পারে এই আশঙ্কায় মঙ্গলবার পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সীমিত আকারে আক্রমণ চালানো হয়েছে। ওই হামলায় তিনশ’র বেশি সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলে এর আগে ভারত দাবি করেছে। তবে পাকিস্তান ঘটনাস্থল সাংবাদিকদের জন্য খোলা রাখে এবং যেসব বিদেশী সাংবাদিক সে এলাকা পরিদর্শন করেছেন তারা কোন ধরনের স্থাপনা ধ্বংসের আলামত দেখতে পাননি। তবে পাহাড়ি এলাকায় বেশ কয়েকটি গর্ত দেখতে পেয়েছেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আসিফ গফুর বলেছেন, ভারতীয় বিমান আকাশসীমা লঙ্ঘন করে পাকিস্তানে ঢুকেছিল সত্যি, কিন্তু তাড়া খেয়ে পালিয়ে গেছে এবং হতাহতের কোনো ঘটনাই ঘটেনি।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে ভারতীয় বাহিনীর গুলিতে আজাদ কাশ্মীরের চারজন নিহত ও ১১ জন আহত হয়েছেন। সীমান্তের শূন্যরেখায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ভারী মর্টারশেল হামলায় দুই ভারতীয় নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম। ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের পাঁচটি সীমান্ত ফাঁড়ি ধ্বংস করে দিয়েছে বলে দেশটির গণমাধ্যমের দাবি।
পাকিস্তানের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাণিজ্যিক বিমানের জন্য দেশের আকাশসীমা আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গতকাল (বুধবার) টুইটার বার্তার মাধ্যমে এ ঘোষণা দেয়া হয়েছে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিমান হামলার পাল্টা হামলার ঘটনায় যখন নিরাপত্তা পরিস্থিতি খুবই নাজুক পর্যায়ে রয়েছে তখন বাণিজ্যিক বিমান চলাচলের পথ বন্ধ করা হলো। এতে আশঙ্কা করা হচ্ছে- দু দেশের মধ্যে যুদ্ধ আরো বিস্তৃত হতে পারে। অবশ্য, পাক বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এ ঘোষণার আগেই আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের বেশিরভাগই পাকিস্তানের আকাশসীমা এড়িয়ে চলছিল।
এর আগে, বিমানবন্দরের একজন কর্মকর্তা ডন নিউজ টিভিকে জানিয়েছেন, পেশোয়ারের বাচা খান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বাণিজ্যিক বিমান চলাচল শুরুর আগ পর্যন্ত বিমানবন্দরটি সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হবে। এ বিষয়ে বিমানবন্দরে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। ওই কর্মকর্তা জানান, বাণিজ্যিক বিমানের সমস্ত ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। লাহোর ও করাচি বিমানবন্দরের ব্যাপারেও একই ধরনের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। করাচি থেকে দিল্লিগামী একটি ফ্লাইট বাতিলের খবর দিয়েছে ডন নিউজ। এছাড়া, লাহোর থেকে ব্রিটেনের ম্যানচেস্টারগামী একটি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। ভারতও কাশ্মিরের শ্রীনগর, জম্মু ও লেহ বিমানবন্দরে বেসামরিক বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।
এদিকে ভারত স্বীকার করেছে, পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দফতর থেকে প্রকাশিত ভিডিওচিত্রে উপস্থাপিত ব্যক্তি তাদের বিমান বাহিনীর সদস্য। সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভিডিওতে আহত পাইলটের উপস্থাপনকে ‘কুরুচিপূর্ণ’ আখ্যা দিয়েছে। পাকিস্তানের হাই কমিশনারকে ডেকে তারা সতর্ক করেছে, কোনভাবেই যেন ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ওই সদস্যের কোনও ক্ষতি না করা হয়।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মানবিকতা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আইন আর জেনেভা কনভেনশন উপেক্ষা করে আহত সেনার কুরুচিপূর্ণ উপস্থাপনের জোরালো নিন্দা জানাচ্ছে ভারত। পাকিস্তানকে (হাই কমিশনারকে ডেকে) তাদের হেফাজতে থাকা অবস্থায় ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর ওই সদস্যের যেন কোনও রকমের ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।’ ভারতের পক্ষ থেকে তাদের আটক পাইলটকে দ্রুত মুক্তি দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
তবে পাকিস্তানের হাতে আটক ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য অভিনন্দন প্রতিপক্ষের সেবায় মুগ্ধ। ডন অনলাইনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘হাতে চায়ের কাপ। সেনাদের সঙ্গে গল্প করছেন। বলছেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী খুব ভালোভাবে আমার যত্ম নিচ্ছে। ভারত-পাকিস্তান পরস্পরের হামলার ঘটনায় পাকিস্তান যে ভারতীয় পাইলটকে আটক করে বলে জানিয়েছে তাকে একটি ভিডিওতে এভাবেই কথা বলতে দেখা যায়।
বুধবার ভারতীয় দুটি বিমান পাকিস্তানের আকাশসীমায় অনুপ্রবেশের পর পাকিস্তান তা ভূপাতিত করেছে বলে দাবি করছে দেশটির সেনাবাহিনী। পাকিস্তানে আটক ভারতীয় ওই পাইলটের নাম অভিনন্দন। বর্তমানে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হেফাজতে আছেন।
পাকিস্তানের দৈনিক ডনের অনলাইনের প্রতিবেদনে সেই পাইলটকে উদ্ধৃত করে বলা হচ্ছে, ভারতীয় বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার অভিনন্দন বলেন, ‘আমি এই ঘটনাটিকে রেকর্ডের খাতায় ফেলব আর আমি দেশে ফিরে যাওয়ার পরেও আমার এমন বক্তব্য পরিবর্তন করব না।’
অভিনন্দন বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী বেশ ভালোভোবেই আমার সঙ্গে আচরণ করছে। তারা প্রত্যেকেই ভদ্রলোক। যে ক্যাপ্টেন আমাকে উদ্ধার করেছেন তিনি থেকে শুরু করে সবাই যে আচরণ করেছে আমি আমার দেশের সেনাবাহিনীর কাছ থেকেও এমনটা প্রত্যাশা করি।
তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রশংসা করে আরো বলেন, আমি আপনাদের ব্যবহারে মুগ্ধ। তবে তিনি কোন বিমানটি চালাচ্ছিলেন তা জানতে চাইলে পাকিস্তানের এক মেজরকে বলেন, আমি কি এসব কথা বলতে পারি? মেজর, আমি দুঃখিত। তবে চা বেশ ভালো হয়েছে।
পাকিস্তান ভারতীয় বিমানবাহিনীর দুটি বিমান ভূপাতিত আর দুইজন পাইলটকে আটক করার পর পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রকট আকার ধারণ করেছে। পাইলট আটকের পর পাকিস্তান একটি ভিডিও প্রকাশ করে। তবে প্রথমে ভারতের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিমান ভূপাতিত আর পাইলট আটকের কথা অস্বীকার করে। তবে পরবর্তীতে ভারত একটি মিগ-২১ যুদ্ধবিমান ও একজন পাইলটের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
পাকিস্তানের ওপর গত মঙ্গলবার ভারতীয় হামলার নিন্দা করেছে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি। পাশাপাশি, দুপক্ষকেই ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। টুইটার বার্তার মাধ্যমে ওআইসি বলেছে, “এ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য পাকিস্তানের ওপর ভারতীয় হামলার নিন্দা করেছেন মহাসচিব।” পাশাপাশি দু’পক্ষকে সর্বোচ্চ ধৈর্য ধরার পারমর্শ দিয়ে ওআইসি বলেছে, হামলা অব্যাহত থাকলে ওই অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তা বিপদাপন্ন হতে পারে।
ওআইসি ভারত ও পাকিস্তানকে দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে আরো বলেছে, শক্তির ব্যবহার বাদ দিয়েই দু দেশকে শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। এছাড়া, চলমান উত্তেজনা নিরসনের জন্য ভারত ও পাকিস্তানকে সংলাপে বসার আহ্বানজানিয়েছে ওআইসি।
ভারতীয় বিমানবাহিনীর পাকিস্তান সীমান্তে প্রবেশ করে বোমা বর্ষণের নিন্দা জানিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সহায়তা সংস্থা ‘সার্ক’-এর মহাপরিচালক। গতকাল বুধবার দক্ষিণ এশিয়ার সার্কের মহাপরিচালক ড. মো. ফয়সাল ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার গৌরভ আলুওয়ালিয়া তলব করেন। ২০০৩ সালের যুদ্ধবিরতির চুক্তিকে সম্মান জানানোর জন্য ভারতকে ড. ফয়সাল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন ও অন্য ঘটনা তদন্তের আহ্বান জানান। তিনি চান, ভারতীয় বাহিনী যুদ্ধবিরতির নির্দেশনাকে সম্মান দেখাবে। ওই চিঠিতে তিনি বলেন, শান্তির জন্য নিয়ন্ত্রণরেখা মেনে চলবে। ড. ফয়সাল ভারত ও পাকিস্তানকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, উভয় দেশ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রেজ্যুলেশন মেনে চলবে।
ভারতীয় হামলার ঘটনায় দ্বিধাহীনভাবে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে তুরস্ক। তারা পাকিস্তানকে অকুণ্ঠভাবে সমর্থন দেবে বলে জানিয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মোহাম্মদ কুরাইশির সঙ্গে এক ফোনালাপে সহানুভূতি জানিয়ে তাদের সমর্থনের কথা বলেছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাওলুদ জাইশ আওগালু। রেডিও পাকিস্তানের বরাতে এই খবর জানিয়েছে দ্য ডন ।
তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আবুধাবিতে ওআইসির আসন্ন বৈঠকে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দেয়া হলে তার বিরোধিতা করবে তুরস্ক। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেসও তাকে ফোন করে বর্তমান পরিস্থিতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে জানান পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
গত ১৪ ফেব্রয়ারি কাশ্মীরের পুলওয়ামায় ভয়াবহ আত্মঘাতী জঙ্গি হামলায় ভারতের কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীর (সিআরপিএফ) কমপক্ষে ৪৬ সদস্য নিহত হয়েছেন। ওই হামলার দায় স্বীকার করে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী জয়শে মোহাম্মদ। এরপর থেকেই ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া, ডন, এনডিটিভি, বিবিসি, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।