পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধনামন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ স্বপ্ন বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কম্পিউটারের উপর থেকে ট্যাক্স তুলে দেওয়ার ফলে মানুষের মধ্যে একটা আকাঙ্খা এবং শিক্ষার প্রসার শুরু হয়। ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়েছিলাম, আর আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। এখন সারাদেশেই ইন্টারনেট সার্ভিস। ব্রডব্যান্ডে প্রায় ৯০ভাগ এলাকা কভার করেছি। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে পেরেছি। এতোদূর আসতে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত অনেক চড়াই-উৎড়াই পার হয়েই আসতে হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল রাজধানীর প্যান পাসিফিক সোনারগাঁ হোটেলে অনাবাসী (এনআরবি) প্রকৌশলীদের প্রথম সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) ও ব্রিজ-টু বাংলাদেশ (বিটুবি) যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশের প্রকৌশলীদের এ মাটিরই সন্তান আখ্যায়িত করে দেশের চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ডে অবদান রাখার আহবান জানান। তিনি বলেন, অনাবাসিক প্রকৌশলীগণ দেশের তথ্য প্রযুক্তি, কৃষি, শিল্পোৎপাদন, যোগাযোগ এবং সমুদ্র সম্পদ আহরণে ব্যাপক ভূমিকা পালন করতে পারেন। তারা পলিসি লেভেল চ্যালেঞ্জ এবং ইনস্টিটিউশন লেভেল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দেশের চলমমান উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিতে পারেন। বাংলাদেশের উন্নয়নটা কেবল শহর কিংবা রাজধানী ভিত্তিকই নয়, সরকার পুরো গ্রামভিত্তিক উন্নয়ন করতে চায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আপনারা যারা বিদেশ থেকে এসেছেন, বাংলাদেশের কোন না কোন গ্রামেই আপনাদের বাড়িঘর, সেখানে আপনাদের শিকড় রয়ে গেছে। শিকড়ের সন্ধান করে আপনাদের যার যার অঞ্চলের কিভাবে উন্নয়ন করতে পারেন, আপনাদের কাছে সে অনুরোধ আমি করবো। আপনারা সেদিকটাতেও একটু বিশেষভাবে নজর দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি হয়ত বাংলা সাহিত্যের ছাত্রী, কিন্তু একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারের মা। আমরা আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলছি। দেশে কম্পিউটার ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থা, এর উপর থেকে ট্যাক্স তুলে দেওয়া, এসব আমার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শে হয়েছে। সে তো একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার।
কোন অবস্থা থেকে তিনি শুরু করেন তার ব্যাখ্যায় কিছু অভিজ্ঞতা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমি এসে দেখলাম কম্পিউটার কেউ ব্যবহারেই করে না। কম্পিউটার তখন একটা টেবিলে সাজানো থাকত। আরও দুঃখের কথা বলি, আমি ওয়াশিংটনে আমাদের চ্যান্সেরি ভবন করে দিলাম। সব কিছু করে দিলাম। কিন্তু একটা সময় আমাদের একটা সমস্যা এসেছিল, আমাদের গার্মেন্টেস নিয়ে এবং জিএসপি নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে। তখন একটা জিনিস যে কম্পিউটারে টাইপ করে ই-মেইলে পাঠাবে, সে কম্পিউটার ব্যবহার করার লোক আমার অ্যাম্বাসিতেও ছিল না। এইরকম একটা অবস্থা আমাদের ছিল। তারপরে যেটা করেছি, সেটা এখন আর বলার দরকার নেই, আক্ষেপ করে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
অনাবাসী বাংলাদেশি প্রকৌশলীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি কখনো ব্রেন ড্রেন কথাটি বলিনি। আমি বলেছি, বিদেশে গেলে জ্ঞান অর্জন হয় আর সেই জ্ঞানটা একটা সময় দেশের কাজে আসেই। আমরা যদি বিশ্বকে না দেখি, বিভিন্ন দেশে না যাই তাহলে আমরা বিশ্বকে জানবো কি করে? বিশ্বের অন্য স্থানে কোথায় কী হচ্ছে? কীভাবে উন্নয়ন হচ্ছে? সেটাও জানা এবং জ্ঞান অর্জনের বিষয়। সেই জ্ঞান অর্জনের সুযোগটা আপনারা অর্জন করেছেন।
প্রকৌশলীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আপনারা বাংলাদেশের উন্নয়নে শরিক হতে চান, কাজে লাগাতে চান আপনাদের সেই অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা। আমি আপনাদেরকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আপনারা শিক্ষা গ্রহণ করতে যান। অনেকে বিদেশে থেকে যান। অনাবাসী হয়ে যান। সেখানেও কিন্তু একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়। আপনারা যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেন সেটাও অনেক বড় কিছু। রফতানির ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের একটা জিনিস চিন্তা করতে হবে। আমরা গার্মেন্টেস শিল্প বিশ্বে দ্বিতীয়, এটা ঠিক। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, একটা জিনিস রফতানির উপর নির্ভর করে দেশ চলতে পারে না। আমাদেরকে রফতানিকে বহুমুখীকরণ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা অত্যন্ত মেধাবী। সর্বক্ষেত্রে তারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে আজ বাংলাদেশ সারাবিশ্বে ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছি। অর্থনৈতিক অগ্রগতির সূচকে বিশ্বে শীর্ষ ৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন- সম্মেলনের প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী। সূচনা বক্তব্য দেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মনোয়ার আহমেদ। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের কনভেনর ব্রিজ-টু-বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আজাদুল হক।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।