পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ লুটের ঘটনায় ফের নিজেদের দায় প্রত্যাখ্যান করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্ক। রিজার্ভ ব্যাংক বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাঠানো নির্দেশনাগুলো সঠিক (অথেনটিক) হওয়ায় অর্থ ছাড় করা হয়েছে। মোট ৩৫টি আদেশের মাধ্যমে অর্থ ছাড় করার জন্য আদেশ পাঠানো হয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। ৫টি আদেশের বিপরীতে ১০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থ স্থানান্তরের আদেশে প্রক্রিয়াগত কোনো সমস্যা ছিল না। বাকি ৩০টি আদেশ সঠিক পদ্ধতিতে না করায় তা আটকে দেয়া হয়। আটকে দেয়া আদেশগুলোতে ৯৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার স্থানান্তরের জন্য বলা হয়েছিল। এতে নিউ ইয়র্ক ফেডের কোনো দায় নেই। এ কারণে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি থেকে বেঁচে গেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য ক্যারোলিন ম্যালোনির কাছে লেখা এক চিঠিতে নিউ ইয়র্ক ফেডের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট থমাস বাক্সটার এ দাবি করেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে ১০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরি করেছে সংঘবদ্ধ দেশী-বিদেশী একটি চক্র। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক দাবি করছে, এর মধ্যে ১৯ দশমিক ৯৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার শ্রীলংকা থেকে ফেরত আনা গেছে। আর ৮১ মিলিয়ন ডলার রয়েছে ফিলিপাইনে।
কিন্তু এই প্রথম ফেডারেল রিজার্ভ বলছে, সেদিন ৯৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ৭ হাজার ৬০৮ কোটি টাকা স্থানান্তরের জন্য আদেশ দেয়া হয়েছিল। ফিলিপাইনের পত্রিকাগুলো বলছে, সেদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে এত পরিমাণ অর্থ না থাকায় ফেডারেল রিজার্ভের সন্দেহ হয়। পরে সেই অর্থের ছাড় আটকে দেয় ফিলিপাইন। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছুই বলেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক দাবি করছে, অর্থ ছাড়ে ৩৫টি আদেশ পাঠানো হয়েছিল ফেডারেল রিজার্ভে। কিন্তু তদন্ত দল কম্পিউটারের ফরেনসিক তদন্ত করে দেখতে পায় আদেশ গিয়েছিল ৭০টি। এসব আদেশে টাকা স্থানান্তরের নির্দেশ ছিল প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার। এ পরিমাণ অর্থ ফেডারেল রিজার্ভে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে সে দিন ছিল না। এ কারণে লেনদেনে সন্দেহ হয় ফেডারেল রিজার্ভের।
বিশ্বের প্রায় সব রাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রায় অর্থ জমা রাখে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সব অর্থ এক জায়গায় না রেখে বিভিন্ন মুদ্রায়, বিভিন্ন জায়গায় রাখা হয়। আমদানি-রফতানি বিল পরিশোধ, সরকারি কাজের বিলসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে দেশ থেকে অর্থ না পাঠিয়ে এসব অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থ দিয়ে পরিশোধ করা হয় সব দায়। নিউ ইয়র্ক ফেডেও বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সেই অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৪ ফেব্রুয়ারি ১০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সরিয়ে নেয় একটি চক্র। এর মধ্যে ৮১ মিলিয়ন ডলার যায় ফিলিপাইনে। বাকি ২০ মিলিয়ন ডলার পাঠানো হয় শ্রীলংকায়। তবে প্রতিষ্ঠানের নামের বানান ভুল হওয়ায় সেই অর্থ ছাড়ের আদেশ আটকে দেয় শ্রীলংকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আন্তর্জাতিক অর্থ জগতে এত বড় একটি ঘটনা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। সুইফট সিস্টেম ও নিউ ইয়র্ক ফেডের দায়িত্ব নিয়ে আলোচনার জন্ম দেয়। প্রশ্ন ওঠে কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি নিরাপত্তা ব্যবস্থার ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের এ ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয় নিয়ে। এরই প্রেক্ষিতে নিউ ইয়র্ক ফেড এ ঘটনা কিভাবে দেখছে তা জানতে মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য ক্যারোলিন ম্যালোনি গত ১৪ এপ্রিল আইনি চিঠি দেয় ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্ককে। সেই চিঠির উত্তর দিয়েছে নিউ ইয়র্ক ফেড। চিঠিতে বাক্সটার বলেন, গত ৪ ফেব্রুয়ারি সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন অনুসরণ করায় পাঁচটি আদেশে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ স্থানান্তরের অনুমতি দেয়া হয়েছিল। বাকি ৩০টি অনুরোধ সঠিক পদ্ধতিতে না করায় তা আটকে দিয়ে মোট ৯৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরির হাত থেকে রক্ষা করা হয়। ফেডের এই কর্মকর্তা চিঠিতে আরো বলেন, নিউ ইয়র্ক ফেডের লেনদেন প্রক্রিয়াটির পদ্ধতি এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গ্রাহকের চাহিদামতো কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্থ স্থানান্তর করা হয়। কার কাছে অর্থ পাঠানো হচ্ছে তাও বিচার-বিবেচনা করা হয়। কিন্তু অর্থ ছাড় করতে সুইফটের মেসেজের মাধ্যমে সঠিকভাবে আদেশ এলে তা বন্ধ করা হয় না। তবে প্রতারণা ঠেকাতে অন্যান্য ব্যাংকের মতো আমরাও সুইফট কোড যাচাই করি দেখি। সুইফট থেকে নিশ্চিত বার্তা এলে তা যাচাইয়ে অন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয় না। তিনি আরো বলেছেন, বিদেশী অ্যাকাউন্টগুলো বেশির ভাগ সময়ই নিউ ইয়র্ক ফেডকে অর্থ স্থানান্তরের আদেশগুলো ম্যানুয়ালি নয় বরং স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার মাধ্যমে পাঠিয়ে থাকে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন ফেডের এই কর্মকর্তা। অপরদিকে, সুইফট কর্তৃপক্ষও এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানিয়ে দিয়েছে, সুইফট সিস্টেম হ্যাক হয়নি। এতে তাদের কোনো দায় নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।