Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হাসিনা ক্ষমতায় না থাকলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতো না-তোফায়েল আহমেদ

প্রকাশের সময় : ১৬ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না থাকলে পাকিস্তানের দোসর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এই দেশে হতো না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। গতকাল দুপুরে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি আয়োজিত ‘দেশরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।  তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিএনপি নেত্রী যুদ্ধাপরাধীদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে মন্ত্রিত্ব দিয়েছেন। তাদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের কলঙ্কিত করেছেন। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘাতক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে পুরো জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করছেন। তিনি ক্ষমতায় না থাকলে এই বিচার কোনোদিন হতো না।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যখন সপরিবারে হত্যা করা হয় তখন খাদ্যের রপ্তানি ছিলো ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার। তাকে হত্যা করে তখন এই অগ্রযাত্রাকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিলো। বর্তমানে দেশে ১৬ কোটি মানুষ হওয়ার পরেও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পরে আমরা বার্ষিক রপ্তানি করছি ২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আগে আমাদের দেশকে বলা হতো  বটমলেস বাস্কেট। এখন আমাদেরকে বলা হয় মিরাকেল। এটা প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের মহাসড়কে চলার বাস্তব উদাহরণ।
১৫ শতাংশ মূসক সম্পর্কে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, অর্থমন্ত্রী এবং আমি এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অনেকবার মিটিং করেছি। সব কথা সেমিনারে বলা ঠিক না। অর্থমন্ত্রী কমপিটেন্ট মানুষ। তিনি এগুলো বলবেন। আমি এটুকু বলি এমন কিছু আমরা করবো না, এমন কিছু করতে আমরা যাব না,  যেটা আমাদের বিনিয়োগের পথে অন্তরায় সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের ব্যাপারেও আমরা যতœবান এবং সচেতন। আমরা সঠিকভাবেই করবো। আমাদের প্রয়োজন হলে আমরা সময় নেব। কিন্তু ব্যবসায়ীদের ওপর একসঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আমরা চাপিয়ে দেব না।
তৈরি পোশাক খাতে গ্যাসের সংকট কমছে না এমন প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল বলেন, আশা করছি  দেশ থেকে অচিরেই গ্যাসের সংকট দূর হবে। গ্যাসের জন্য দেশে ইতোমধ্যে ১০৮টি কূপ খনন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিদেশি একটি কোম্পানী এ খননের কাজ করবে বলে জানান তিনি।
সেমিনারের মূল প্রবন্ধে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা মশিউর রহমান বলেন, উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হতে উন্নত দেশে পরিণত হবার প্রত্যাশা পূরণের জন্য সরকারের সার্বিক কর্ম-সম্পাদনা ও দক্ষতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। এ বৃদ্ধির ফলে কর্মদক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে। তাই দক্ষ কর্ম সম্পাদনের জন্য প্রয়োজন হবে পেশা ভিত্তিক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা। আর মানব সম্পদই হলো উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।  
তিনি বলেন, ২০১৬ সালে মাথাপিছু বাজার  মূল্য আয় ২ হাজার ৪৬৬ মার্কিন ডলার । তবে দেশের প্রবৃদ্ধির হার হবে ৭ দশমিক ০৫ শতাংশ। আমাদের প্রত্যাশা ২০৪০-৪১ সালে উন্নত আয়ের দেশে বাংলাদেশ পৌঁছাবে। তখন মাথাপিছু আয় হবে ১২ হাজার ৭৩৭ মার্কিন ডলার। গত ২০১৪ অর্থ-বছরে মাথাপিছু আয় ছিল ১ হাজার ১৮৪ মার্কিন ডলার। ২০১৫ ও ২০১৬ অর্থ-বছরে মাথাপিছু আয় বেড়েছে যথাক্রমে ১১ ও ২৪ শতাংশ। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, ২০১০ সালের ভিত্তিতে দেখা যায় ৩১ দশমিক ০৫ শতাংশ  লোক দারিদ্র্য সীমার নিচে এবং ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ লোক হত দারিদ্র্য সীমার নিচে ছিল। ২০১৪ ও ১০১৫ সালে দারিদ্র্য সীমার নিচে জনসংখ্যা হ্রাস পাবে যথাক্রমে ২৫ দশমিক ০ শতাংশ এবং ২৪ দশমিক ৮ শতাংশ হত দারিদ্র্য সীমার নিচে জনসংখ্যা হ্রাস পাবে ১৩ দশমিক ২ শতাংশ। তবে ২০২০ সালে নাগাদ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী জনসংখ্যা হবে ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ হত দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী জনসংখ্যা হবে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ।   
বিজিএমইএ’র ভাইস প্রেসিডেন্ট (অর্থ) মো. নাছির বলেন, বাংলাদেশে পোশাক শিল্প আগের তুলনায় অনেক রফতানিমুখী হয়েছে। তবে পোশাক শিল্পে গ্যাসের স্বল্পতা আছে। প্রতিবছর ২০ লক্ষ লোক পোশাক শিল্প কর্মসংস্থানে প্রবেশ করছে। গ্যাসের সমস্যা সমাধান করতে না পারলে তাদের কাজের ব্যাঘাত ঘটবে। দেশে প্রায় ২০০ ফ্যাক্টরিতে গ্যাসের সমস্যা রয়েছে। আমরা চাই অতি দ্রুত এ সমস্যা সমাধান হোক।
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে কোন সরকার শতভাগ কাজ করতে পারে না। দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকার সাধারণত ৯০ ভাগ কাজ করে থাকে। বাকি ১০ ভাগ নিয়ে তাই সমালোচনা হতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশে প্রশংসার চেয়ে সমালোচনা হয় বেশি। সমালোচনার সংস্কৃতি উন্নয়নের পথে বড় বাধা। দেশ উন্নয়নের দিকে ধাবিত হলেই আইএস, জঙ্গিবাদ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মিথ্যা প্রচারণা চালানো হয়। বিদেশিদের হত্যা করা হয়। প্রকৃতপক্ষে এগুলো দেশি-বিদেশি চক্রান্তের অংশ।
প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির চেয়ারম্যান এবং প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমামের সভাপতিত্বে এ সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন- উপ-প্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক কাজী মারুফুল ইসলাম, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের মহাসচিব ইকবাল আর্সলান, বিজিএমইএ’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাসিনা ক্ষমতায় না থাকলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতো না-তোফায়েল আহমেদ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ