পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পুরান ঢাকার সরু রাস্তা প্রশস্ত করেত ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বেলা সাড়ে ১০টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চকবাজারের চুরিহাট্টায় অগ্নিদগ্ধ রোগীদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, পুরান ঢাকার সরু রাস্তা ও অলি-গলি নতুন করে করতে হবে। রাস্তাগুলো এতই সরু যে সেখানে আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢোকার কোনও উপায় নেই। এ সময় গণমাধ্যম কর্মীদের দ্বারা অহেতুক প্রশ্ন করে নির্বাচন কাজে ব্যঘাত তৈরির সমালোচনা করেন তিনি। এর আগে দগ্ধ ও আহত রোগীদের খোঁজ-খবর নেন এবং রোগী ও স্বজনদের সাথে চিকিৎসাসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন তিনি। পরে চিকিৎসকদের সঙ্গেও রোগীদের অবস্থা নিয়ে তিনি কথা বলেন ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুরান ঢাকায় এত গলি যে, আমরা হেলিকপ্টার দিয়েও পানি দিতে পারিনি। এটাও খেয়াল রাখতে হয়েছে যে হেলি কপ্টারের বাতাস থেকে যেন আগুন ছড়িয়ে না পড়ে। তাই নিরাপদ দূরত্ব থেকে হেলিকপ্টার দিয়ে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আগুন ছড়ানোর পেছনে কেমিক্যাল গুদামকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মোবাইল কোর্ট বসিয়ে অনেক কারখানা অপসারণ করেছি। কিন্তু সেগুলো আবারও গড়ে উঠেছে। অতি শীঘ্রই এসব গুদাম সরিয়ে নিতে হবে।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডের পর আমরা পুরান ঢাকার কেমিক্যাল গুদাম সরাতে চেয়েছিলাম। তার জন্য কেরানীগঞ্জে জায়গা করে প্রজেক্ট নিয়েছিলাম। আধুনিক গুদাম তৈরি করে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মালিকরা রাজি হয়নি। তিনি আরও বলেন, কেমিক্যালের সুরক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থার প্রয়োজন হয়। পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গুদাম না সরানো দুঃখজনক। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। এ কাজে তিনি সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান। ঢাকাবাসীর উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরের কোথাও এ ধরনের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটলে উৎসুক জনতা হওয়ার পরিবর্তে এক বালতি পানি অথবা কিছু বালু নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভাতে সহযোগিতা করুন। সাংবাদিকদের কারণে আগুন নেভানোর কাজ ব্যাহত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংবাদ কর্মীদের নানা প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ ব্যাহত হয়েছে। বিশেষ করে টিভি সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেই যাচ্ছেন। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এটা কী প্রশ্ন করার সময়? উত্তর আশা করেন কীভাবে? তারা কাজে যাবেন। অথচ তাদের আটকে রেখে প্রশ্ন করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে, তখন উদ্ধারকর্মীদের উদ্ধার কাজ না করতে দিয়ে তাকে ঠেকিয়ে রেখে প্রশ্নের পর প্রশ্ন করাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। এছাড়া আগুন ও দগ্ধদের ছবি তোলার বিষয়ে সংবাদকর্মীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের আরও বেশি সচেতন হতে হবে। যাতে আতঙ্ক ছড়িয়ে না পড়ে।
আগুন নেভানোর জন্য পানির উৎসের অপ্রতুলতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকায় এক সময় অনেক পুকুর ছিল। সেগুলো ভরাট করে ফেলা হয়েছে। এক সময় পুরান ঢাকার ধোলাই খাল ও আশপাশে অনেক খাল ছিল। কিন্তু বর্তমানে সেগুলোও দখল হয়ে গেছে। স্থানীয়রা এসব খাল-নদী ভরাট করে ফেলায় এসব এলাকায় দুর্ঘটনার সময় পানি পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, নেভানোর সময় যদি পানি না পাওয়া যায়, তাহলে ফায়ার সার্ভিসের কী করার আছে?
বার্ন ইউনিট সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে অনেক আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়েছি। আশা করি, যারা চিকিৎসাধীন আছেন তাদের চিকিৎসার কোনো অসুবিধা হবে না। যে ঘটনা ঘটেছে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। তাৎক্ষণিকভাবে যতটা সম্ভব আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সহযোগিতা দিয়েছি।
তিনি বলেন, কাল রবিবার (আজ) অফিস খুললে পার্লামেন্টে মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হবে। তিনি বলেন, এটা একটা বড় ধরনের দুর্ঘটনা, যা আমাদের সবাইকে ব্যথিত করেছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর যাতে না ঘটে সে জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বার্ন ইউনিট পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রীর সাথে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক স্বপন, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজী মো. সেলিম, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. সামন্তলাল সেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. আবুল কালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার রাতে পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টার ৬৪ নম্বর ওয়াহেদ ম্যানশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট প্রায় ১০ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই ঘটনায় গত শুক্রবার সকাল পর্যন্ত মোট ৬৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে ঢাকা জেলা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে। যদিও ঘটনার পর থেকে এখনো অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বার্ন ইউনিট ও ঢামেকের অন্যান্য বিভাগে অনেকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে শুধু বার্ন ইউনিটে ৯ জন চিকিৎসাধীন আছেন। যাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।