Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কেমিক্যাল পেলেই ফোন করুন ৯৫৫৬০১৪ নম্বরে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৬ এএম

পুরান ঢাকার সমস্ত কেমিক্যাল গোডাউন অপসারণে নেমেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। যতক্ষণ পর্যন্ত এই এলাকায় কেমিক্যালের অস্তিত্ব পাওয়া যাবে ততক্ষণ পর্যন্ত অপসারণ বা উচ্ছেদ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। সেই সঙ্গে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, সর্বস্তরের নাগরিকদের প্রতি অনুরোধ যদি কেউ গোডাউনে কেমিক্যাল স্টোর করতে দেখেন বা কেমিক্যাল রাখতে দেখেন আপনারা আমাদের কন্ট্রোল রুম ‘৯৫৫৬০১৪’ নম্বরে জানাবেন। যে কউ তার বাড়ির আশাপাশে পাড়া-মহলায় কেমিক্যাল রাখছে এমন দৃশ্য দেখেন তাহলে আমাদের কন্ট্রোল রুম, পুলিশ কন্ট্রোল রুম, কাউন্সিলর অফিসে, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে জানান, আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেব।
গতকাল শনিবার পুরান ঢাকার ওয়াহেদ ম্যানশনের কেমিক্যাল অপসারণের মাধ্যমে উচ্ছেদ অভিযানের উদ্বোধনকালে মেয়র একথা বলেন। একই সঙ্গে ওই দিনের অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাতের ভিডিও ফুটেজ আছে বলেও জানান মেয়র। পরে মেয়র নিজেই ওই ভবনে মজুদ থাকা কেমিক্যাল সন্দেহে সকল পদার্থ অপসারণ করেন।
তিনি বলেন, আমরা প্রতিটি বাড়ি পরিদর্শন করব, যেখানেই কেমিক্যালের অস্তিত্ব পাওয়া যাবে সেসমস্ত কেমিক্যাল অপসারণ করা হবে। অভিযানে কোনো বাড়িতে কেমিক্যাল গোডাউন পাওয়া গেলে সর্বপ্রথম বাড়ির মালিককে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করার ঘোষণাও দেন মেয়র। সাঈদ খোকন বলেন, ওয়াহেদ ম্যানশনের গোডাউনে যেসমস্ত কেমিক্যাল রয়েছে, সেই কেমিক্যাল অপসারণের মধ্য দিয়ে পুরনো ঢাকায় যত কেমিক্যাল গোডাউন আছে সমস্ত গোডাউন থেকে কেমিক্যাল অপসারণের কার্যক্রম শুরু করা হলো। এ সময় মেয়র বলেন, গত বুধবার এই ওয়াহেদ ম্যানশনে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এর আগে গত সোমবার আমরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কেমিক্যাল অপসারণ কাজ শুরু করি, দুঃখজনক হলেও সত্য মাত্র দুই দিনের মাথায় ঘটনাটি ঘটে। আমরা পুরো এলাকা থেকে কেমিক্যালগুলো সেসময় অপসারণ করতে পারিনি। কাজেই যতক্ষণ না পর্যন্ত পুরনো ঢাকার কেমিক্যাল গোডাউন আমরা অপসারণ করতে পারছি ততক্ষণ পর্যন্ত এই কাজ অব্যাহত থাকবে। নগরবাসীর জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে নগর কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞ।
অপসারণ কাজে সকলের সহযোগিতা চেয়ে মেয়র বলেন, স্থানীয় নাগরিক, ব্যবসায়ী প্রতিনিধিসহ সকল শ্রেণির নাগরিক রয়েছেন। এখানে হাজার হাজার বাড়িঘর রয়েছে যদি কোন একটি বাড়িতে ২০টি কেমিক্যাল কার্টুন ওঠায় তাহলে সেটা খুঁজে বের করা খুবই কঠিন কাজ। সাধারণ মানুষ তার নিরাপত্তার স্বার্থে যতক্ষণ পর্যন্ত বিষয়গুলোকে শক্ত নজরদারির আওতায় নিয়ে না আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষে এ কাজটি করা সম্ভব নায়।
পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে মেয়র বলেন, সেদিনের অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাতের ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে। সেই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত গ্যাস সিলিন্ডার থেকে। রাস্তায় রাখা একটি গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডারে বিষ্ফোরণের সূত্র ধরে পরবর্তিতে বেশ কিছু গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডার ছিল সেগুলো থেকে চেইন রিঅ্যাকশনের মাধ্যমে এটি ছড়িয়ে পড়েছিল।
কতগুলো বাড়িতে কেমিক্যাল রয়েছে এমন তালিকা আছে কি না জানতে চাইলে মেয়র বলেন, এখানে বিষ্ফোরক দ্রব্য অধিদপ্তরের কিছু তালিকা রয়েছে, আমাদের সঠিক তালিকা নেই। আমরা প্রতিটি বাড়িতে এক এক করে পরিদর্শন করব।
বাড়ির মালিকদের সর্তক করে মেয়র বলেন, এখনো যদি কারো বাড়িতে কোনো রকম কেমিক্যাল গোডাউন থাকে, আপনারা নিজ উদ্যোগে সেটা সরিয়ে নেবেন। আর যদি এই অভিযান পরিচালনার সময় কারো বাড়িতে কেমিক্যালের অস্তিত্ব পাওয়া যায় তাহলে সেই বাড়ির মালিককে আইনের আওতায় আনা হবে। এখনো যদি কারো বাসায় কেমিক্যাল গোডাউন রেখে থাকেন অনতিবিলম্বে নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে সেটা সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করুন।
উচ্ছেদ করার পর সেসব কেমিক্যাল কি করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, অপসারণ করে নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে যাব। এরপর চেক করা হবে যদি ২৯টি দাহ্য পদার্থের মধ্যে কোনোটি পাওয়া যায় তাহলে সেগুলো জব্দ করা হবে। আর যদি দাহ্যে পদার্থের মধ্যে না পড়ে তাহলে এর মালিককে বুঝিয়ে দেব নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার জন্য।
ওয়াহেদ ম্যানশনের কেমিক্যাল রাখা অবৈধ কি না এমন প্রশ্নর জবাবে মেয়র বলেন, পুরান ঢাকার সবগুলো কেমিক্যাল গোডাউনই অবৈধ। বাসাবাড়িতে কেমিক্যাল মজুদ করা আইনানুযায়ী এমনিতিই অবৈধ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কেমিক্যাল পেলেই ফোন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ