পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস (সিএনজি) সিলিন্ডারের মাধ্যমে অবৈধভাবে বাসাবাড়িতে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বাসা-বাড়ির মালিকেরা সিলিন্ডার করে সিএনজি স্টেশন থেকে গ্যাস নিয়ে ব্যবহার করছেন। সিএনজি স্টেশনের মালিকদের সহায়তায় কুমিল্লায় এভাবে গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে। তা ছাড়া অরক্ষিতভাবে গ্যাস সিলিন্ডার বহন করার ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও থেকে যাচ্ছে। সময়ের বিবর্তনে এবং মানুষের প্রয়োজনের তাগিদে সিলিন্ডার গ্যাসের গ্রাহক সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে বলে গ্যাস পরিবেশক সূত্রে জানা গেছে। বর্তমানে কুমিল্লার হোটেল রেষ্টুরেন্ট সহ বাসা বাড়িতে রান্নার কাজে যানবাহনের ব্যবহৃত সিলিন্ডার ভর্তি গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার আশংকা জনক ভাবে বেড়ে চলছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে যানবাহনের গ্যাস বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত গ্যাসের সিলিন্ডার আসলে কতটা নিরাপদ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সড়ক মহাসড়কের যানবাহনের অনিরাপদ ও মেয়াদ উত্তীর্ণ সিলিন্ডার বাসাবাড়িতে লাগানো কোন ভাবেই ঠিক নয়। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যায়। বাসাবাড়িসহ অন্য কাজে যেসব সিলিন্ডার ব্যবহার হচ্ছে তার জন্য সচেতনতার প্রয়োজন।
সরেজমিনে ঘুরে বিভিন্ন সুত্রে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, দেশে পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহের অপ্রতুলতায় দেশী বিদেশী ৫টি কোম্পানী সিলিন্ডার ভর্তি গ্যাস বাজার জাত করছে। জ্বালানীর সুবিধার জন্য দিন দিন দেশে সিলিন্ডার ভর্তি গ্যাসের চাহিদা ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাজারে বিক্রি হওয়া প্রতিটি সিলিন্ডার ভর্তি ১২ কেজি ওজনের গ্যাসের সর্বোচ্চ মূল্য ১১শ’ টাকা। অপেক্ষাকৃত ছোট পরিবারে মাসে একটি সিলিন্ডার প্রয়োজন মেটালেও বড় সংসারে দুটি সিলিন্ডারের প্রয়োজন হয়। এ ক্ষেত্রে তাদের গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা। তাছাড়া বানিজ্যিক খাতে ব্যবহৃত প্রতিষ্ঠানের মালিকদেরও পাইপ লাইনে সরবরাহকৃত গ্যাসের ব্যবহারে অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করতে হয়। এদিকে প্রায় দুই বছর যাবত কুমিল্লা বাখরাবাদের অধীনে আবাসিক গ্যাস সংযোগ না দেওয়ায় তীব্র জ্বালানী সংকটের মুখে বহু পরিবার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বিকল্প হিসেবে এদের অনেকে ব্যবহার করছেন বিকল্প জ্বালানী বা একই চুলোয় একাধিক পরিবারের রান্নার কাজ। এদিকে যখন জ্বালানী ব্যবহারে এ অবস্থা তখন এক শ্রেণীর অবৈধ সিএনজি কনভারশন ওয়ার্কসপের মালিকরা অবৈধ প্রক্রিয়ায় যানবাহনে ব্যবহৃত সিলিন্ডার ভর্তি রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস সরাসরি রান্নার কাজে ব্যবহারের সুযোগ করে দিচ্ছে। ফলে দিন দিন জেলার বিভিন্ন স্থানে এ অবৈধ গ্যাসের ব্যবহার দ্রæত গতিতে বাড়ছে। দায়িত্বশীল সুত্র জানায়, বাজারে রান্নার কাজে ব্যবহৃত ১২ কেজি ওজনের সিলিন্ডার ভতি গ্যাসের মূল্য যেখানে ১১শ’ টাকা সেখানে যানবাহনে ব্যবহৃত প্রতি কিউবিক মিটার গ্যাস মাত্র ২৫ টাকা মল্যমানে ১২ কেজি ওজনের সিলিন্ডার ভর্তি গ্যাস মাত্র ৩শ’ টাকায় ক্রয় করা সম্ভব হচ্ছে। এতে ব্যবহার কারী বিরাট অংকের অর্থের অপচয় থেকে বেঁচে যাচ্ছে। ফলে এই অতিরিক্ত অর্থ বাঁচাতে দিন দিন অনেকেই এই অবৈধ প্রক্রিয়ায় গ্যাস ব্যবহারের দিকে ঝুকে যাচ্ছে। এতে অর্থের সাশ্রয় হলেও মারাতœক দূর্ঘটনার আশংকা থেকেই যাচ্ছে। যে কোন সময় ভয়াবহ র্দূঘটনায় ব্যাপক যানমালের ক্ষতির পাশাপাশি সরকার ও বিপুল অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে প্রতিদিন। সূত্র আরো জানায়, কনভারশন করার প্রক্রিয়ায় জড়িতদের সাথে জেলার বেশ কিছু সিএনজি ফিলিংষ্টেশনের মালিকপক্ষ এসব অপকর্মের সাথে জড়িত।
এদিকে কুমিল্লায় যানবাহনের জ্বালানী সরবরাহে সিএনজি ফিলিং ষ্টেশনগুলো থেকে একটি অসাদূ চক্র প্রতিদিন অটোরিক্সা, ট্রলি, ভ্যান বা নসিমনে করে সিলিন্ডার ভর্তি গ্যাস নিয়ে অবৈধভাবে বৈদ্যুতিক জেনারেটর ব্যবহার করছে। এতে করে যে কোন মূহুর্তে ঘটে যেতে পারে ভয়াবহ দূর্ঘটনা। সরেজমিন ঘুরে বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, দেশে তীব্র জ্বালানী সংকটের মুখে বিগত বেশ কিছুদিন যাবত বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বন্ধ রেখেছে সরকার। ইতিমধ্যে পুরো জেলা জুড়ে হাজার হাজার ইউনিট বাড়ি নির্মিত হয়েছে। নির্মানাধীন রয়েছে আরো শত শত ঘর বাড়ি। ফলে জেলায় বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগের জন্য এ সময়ে আবেদন পড়েছে যথাক্রমে ২ ও ৪ হাজার গ্রাহকের। এ অবস্থায় গ্যাস, বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে গ্রাহকরা বিভিন্ন অবৈধ প্রক্রিয়ায় নিজেদের জড়িয়ে ফেলছে। বেছে নিচ্ছে অবৈধ সংযোগ। সিলিন্ডার পূর্ণ এলপি গ্যাস ও জেনারেটরে রান্না ও বৈদ্যুতিক আলোর চাহিদা পূরন ব্যয়বহুল। এই অতিরিক্ত ব্যায়ের চিন্তা করে অসাদূচক্র ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের দু’পাশে গড়ে উঠা সিএনজি ফিলিং ষ্টেশন গুলো থেকে যানবাহনে ব্যবহৃত কমমূল্যের সিলিন্ডার ভর্তি গ্যাস বানিজ্যিকভাবে পরিচালিত হোটেল বিভিন্ন আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে ব্যবহার শুরু করে। সূত্র জানায়, এ কাজে সিএনজি ফিলিং ষ্টেশনের অসাধু চক্রের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে বাখরাবাদ গ্যাস সিষ্টেমস্ কোম্পানী লিমিটেডে’র দূর্নীতিপরায়ন কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী। যানবাহনের জ্বালানী কাজে ব্যবহৃত গ্যাস বাজারে রান্নার কাজে ব্যবহৃত গ্যাসের তুলনায় অধীক সাশ্রয়ী হওয়ায় দিন দিন এই অবৈধ ব্যবহারে গ্রাহক ঝুঁকে পড়ছে । সরেজমিন অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, হোটেলগুলোতে বানিজ্যিক সংযোগ হওয়ার মালিকদের অধিক অর্থ সরকারকে প্রদান করার চিন্তা থেকে রেহাই পেতে প্রতিযোগীতা দরে যানবাহনের সিলিন্ডার ভর্তি গ্যাস ব্যবহার বাড়ছে জেলায় অস্বাভাবিক ভাবে। প্রতিদিন সন্ধ্যার পরেই সাধারন অটোরিক্সা, নসিমন, ট্রলিতে করে সিলিন্ডার নিয়ে এসে সিএনজি ফিলিং ষ্ট্রেশনগুলো থেকে গ্যাসভরে নিচ্ছে। এতে করে বাড়তে থাকে রান্নার কাজে যানবাহনের জ্বালানী ব্যবহার। স¤প্রতি অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য। কুমিল্লার বিভিন্নস্থানে বিদ্যুৎ সমস্যা মোকাবেলায় এখন অনেকেই জেনারেটরের জ্বালানী হিসেবে সিএনজি গ্যাস ব্যবহার করছে। কুমিল্লা শহরসহ জেলার চান্দিনা, বুড়িচং, দেবিদ্বার, মুরাদনগর, সদর দক্ষিণের পদুয়ার বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে এ ব্যবহার চোখে পড়ার মত। যানবাহনের জ্বালানী গ্যাস রান্না ও বৈদ্যুতিক জেনারেটরের কাজে ব্যবহারের ফলে ভয়াবহ দূর্ঘটনার আশংঙ্কা করছে বিশেষজ্ঞরা। তবে বাখরাবাদ কর্র্তৃপক্ষের যেন কিছুই করার নেই।
এব্যাপারে বাখরাবাদ গ্যাস সিষ্টেমস কোম্পানী লিঃ দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আমরা এরকম জ্বালানী ব্যবহারের কোন অনুমতি দেয়নি। মানুষের বাসা বাড়ি কিংবা হোটেল রেষ্টেুরে›টে খোঁজ খবর নেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব না। আমাদের সে লজিষ্টিক সার্পোট নেই। যদি কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাই তবে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো। তবে তিনি স্বীকার করেন, বিষয়টি খুবই বিপদজনক। সরকার ও রাজস্ব হারাচ্ছে বিপুল অংকের টাকা ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।