পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কক্সবাজার উপকূলে হঠাৎ করে যেন উপকূলীয় বন ধ্বংসের উৎসব শুরু হয়েছে। উপকূলের প্রাকৃতিক বন কক্সবাজারের মূল ভূখন্ডকে ঝড়-জলোচ্ছাস থেকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে প্রাচীর হিসেবে ভূমিকা রেখে আসলেও ভূমিগ্রাসীরা প্রাকৃতিক এই প্রাচীর কেটে সাবাড় করছেন।
জেলার চকরিয়া এলাকায় গত এক মাসে লক্ষাধিক বাইন ও কেওড়া গাছ কেটে তৈরি করা হয়েছে একাধিক চিংড়ি ঘের। ভূমি গ্রাসীদের বিরুদ্ধে কার্জকর পদক্ষেপ না থাকায় এভাবে চলে যাচ্ছে শত শত একর সারকারী ভূমি।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপকূলীয় এলাকায় চিংড়ি ঘের তৈরির জমির পরিমান ১২ হাজার ১১০ একর। এরমধ্যে তিন হাজার ১০১ একর জমিতে অবৈধ এসব চিংড়িঘের তৈরি করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন ও পরিবেশবাদীদের অভিযোগ, উপকূলীয় এলাকার বাইন ও কেওড়া গাছ কেটে এসব চিংড়ি ঘের তৈরি করা হয়েছে। বন বিভাগের দ্বায়িত্ব অবহেলা এবং স্থানীয় জেলা প্রশাসনের অনেকটা সহযোগিতায় এসব কাজ চলছে বলে অনেকের অভিযোগ। এই সুযোগে দখলবাজ প্রভাবশালীদের দাপটে ওই এলাকায় সরকারের হাত ছাড়া হয়েছে সাড়ে তিন হাজার একর প্যারাবন। কক্সবাজার শহর থেকে সমুদ্রপথে ৬০ কিলোমিটার দূরে চকরিয়ার চরণদ্বীপ মৌজার গোলচর ও চিলখালীর চর।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কয়েক হাজার একর প্যারাবনের লক্ষাধিক বাইন ও কেওড়াগাছ কেটে সেখানে বিশাল আকৃতির কয়েকটি চিংড়ি ঘের তৈরি করা হয়েছে। ঘের পাহারার জন্য তিন দিকে ১২টি ঘর তৈরি করে পাহারা বসানো হয়েছে।
পাহারাদারদের সাথে কথা বলে জানা গেছ, গত এক মাস ধরে তিন শতাধিক মানুষ প্যারাবনে ঢুকে অন্তত দেড় লাখ বাইন ও কেওড়াগাছ কেটে চকরিয়ার বিভিন্ন ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে বিক্রি করা হয়। স্থানীয় চকরিয়া ও কক্সবাজারের কয়েকজন প্রভাবশালী এই প্যারাবন নিধন করে চিংড়ি ঘের তৈরি করছে বলে জানা গেছে। ১০-১৫ বছর বয়সী বড় বড় গাছ কাটা হয় করাত দিয়ে। আর ছোট গাচ গুলোতে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে ধ্বংস করা হয়। স্থানীয় জে এম ঘাট এলকার অনেকেই বলেন, রাতের বেলায় পরিকল্পিতভাবে পেট্রোল ঢেলে এই প্যারাবন ধ্বংস করা হয়েছে। আগে প্যারাবনে হরিণ, বানর, বাদুড়, সাপ, বকসহ নানা পশু-পাখির বিচরণ দেখা যেত। প্যারাবনে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত এলাকায় কয়েক হাজার পরিবার।
স্থানীয় তরুণ কামাল আহমেদ (২৪) বলেন, কয়েক হাজার একরের প্যারাবনের লক্ষাধিক বাইন ও কেওড়া গাছ কেটে নিলেও বন বিভাগ নীরব ভূমিকা পালন করে। তারা একটি গাছও উদ্ধার করতে পারেননি।
উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা গোলাম মর্তুজার সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে হলে তিনি প্রভাবশালীদের ভয়ে এ প্রসঙ্গে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশরাফুল আফসার বলেন, ওই সব এলাকায় বাস্তবে কোন গাছ নেই বললে চলে। তাই জমিগুলো সরকারের নিয়ন্ত্রণে রাখতে, বেকার লোকজনের কর্মসংস্থানের সুবিধার্থে এবং সরকারের রাজস্ব আদায়ের লক্ষে নতুন করে কিছু জমি চিংড়ি ঘেরের জন্য ইজারা দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তিনি অবৈধ দখলে থাকা জমিগুলো উদ্ধারের জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেন। জেলা প্রশাসনের এ কর্মকর্তা বলেন, ইতিপূর্বে ১০ একরের অধিক জমি লীজ নেয়া জমিগুলো যাচাই-বাছাই করে অতিরিক্তি জমি সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা চিংড়ি সম্পদ উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা কমিটি।
পরিবেশবাদী সংগঠন ইয়ুথ এনভায়রণমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস) কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী ইব্রাহিম খলিল মামুন বলেন, চকরিয়া চরণদ্বীপ মৌজায দেড় হাজার একরের বেশি এই প্যারাবনে পাঁচ লাখ ৩৭ হাজারের বেশি বাইন ও কেওড়াগাছ ছিল। ইতিমধ্যে তিন লাখের বেশি গাছ কেটে চিংড়িঘের করায় উপকূলের ১০ লাখ মানুষ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। অথচ বন বিভাগের কার্যকর কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। এছাড়াও কক্সবাজার উপকূলে চিংড়ি চাষের জন্য জমি লীজ না দিতে হাইকোর্টের একটি নির্দেশনাও রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।