পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
হরেক রঙ-বেরঙের পাখি। পাখির লেজ, পাখির ঠোঁট, পালক-পাখা একেকটির একেক রকম। নামও বাহারি রকমের। চারদিকে পাখ-পাখালির কিচির-মিচির কলরব। পাখিদের এই রাজ্যে আনন্দে উদ্বেলিত শিশু-কিশোরদেরও কোলাহল। সবমিলে হৃদয় ও নজরকাড়া পরিবেশ। সন্তানদের আবদার মেটাতে অনেক অভিভাবক পাখি কিনেও নিয়ে যান।
গতকাল শনিবার দিনভর প্রাণিমেলা বসেছিল নগরীর চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু)। এবারসহ এটি চতুর্থ আয়োজন। আর সেটি হয়ে উঠেছিল বিচিত্র রকমের পাখ-পাখালির রাজ্য। প্রাণিমেলায় পাখির রাজ্যে ঘুরতে আসা বেশিরভাগই ছিল শিশু-কিশোর। তবে অন্য বয়সের দর্শকদের ভিড়েও ছিল না কমতি। দর্শকরা পাখির সাথে তোলেন সেলফি, সবার হাতে হাতে মোবাইল ফোনের ক্যামেরাগুলো একযোগে সচল হয়ে ওঠে। অনেকেই হাতে, কাঁধে ও গায়ের ওপর পাখিকে বসিয়ে তুলেছেন মনের মতো ছবি। দর্শকরা পুরোমাত্রায় আনন্দ-বিনোদনে অবগাহন করেন। শহুরে জীবনে কিছুটা হলেও ক্লান্তি মুছতে সহায়ক হয় প্রাণিমেলায় পাখির রাজ্য দর্শন।
সকাল ১০টা থেকে দিনব্যাপী প্রাণিমেলার আয়োজনে ছিল সিভাসুর উন্মুক্ত খেলার মাঠে। প্রাণিমেলায় পাখির রাজ্যে উল্লেখযোগ্য পাখ-পাখালির মধ্যে ছিল, বাজেরিগার, কুনোর, লরি, ককাটাইল, কাকাতুয়া, ম্যাকাও, ব্লু-হেডেড ম্যাকাও, কেকালিনা কাকাতুয়া, গ্রে-প্যারট, র্যাম্প, ক্রিমসন, ভেলিট কুনোর, রুবিনো, রোজিলা, মিলি রোজেলা, ক্লু-ক্রাউন কুনোর, রেডলরি, ক্যাটরিন লরি।
হরেক প্রজাতির কবুতরের মধ্যে প্রদর্শিত হয়, হাউজ পিজিওন, পোমারিয়ান পোটার, ফিন্ডব্যাক, সর্ট ফেইস, লং ফেইস, হোয়াইট টপ বোখারা, মন্টেনা, ফ্রেঞ্চ মন্ডেইন, মংক কোমরনা, মুক্ষী, সাটিন, পেন্সিল বল, রেন্টি, আর্চ অ্যাঞ্জেল, গ্রিজেল, বøু-চেক, কাচুরী, নোল্ডেন, ম্যাকপাই পোর্টার।
প্রাণিমেলায় বিভিন্ন পোষা প্রাণির সঙ্গে হরেক জাতের পাখ-পাখালির নাম, স্বভাব, লালন-পালন পদ্ধতি ইত্যাদি বিষয়ে মেলায় স্বেচ্ছাসেবকরা দর্শনার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন। মেলা থেকে অনেকে কিনে নিয়ে যান পছন্দের পাখি। বিশেষত শিশু-কিশোররা তাদের অজানা-অচেনা বিভিন্ন জাতের পাখি সম্পর্কে ধারণা লাভ করে বিমোহিত হয়। অনেকের চোখে-মুখে ছিল বিস্ময়ের ছাপ।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু), চট্টগ্রাম বার্ড ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন, অ্যানিম্যাল কেয়ার অব চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম হাইফ্লায়ার জোন, অ্যাসোসিয়েশন অব এভিয়ান ভেটেরিনারিয়ান বাংলাদেশ ও বার্ডস অ্যান্ড পেট এনিম্যাল ক্লিনিকস যৌথভাবে এ প্রাণিমেলা আয়োজন করে।
প্রাণিমেলায় প্রায় ৮০ প্রজাতির ৫শ’রও বেশি পাখি, টার্কি, খরগোশ, ১০ প্রজাতির ৪৫টি উন্নত জাতের কুকুর, ৫ প্রজাতির ১৬টি বিড়াল, ১০টি বিরল প্রজাতির খরগোশ এবং একশ প্রজাতির অ্যাকুয়ারিয়ামের মাছসহ বিভিন্ন জাতের পোষা প্রাণী প্রদর্শন করা হয়।
গতকাল সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে প্রাণিমেলা উদ্বোধন করেন সিভাসুর ভিসি প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন প্রফেসর মো. আবদুল হালিম, রেজিস্ট্রার মির্জা ফারুক ইমাম, বহিরাঙ্গণ কার্যক্রম পরিচালক প্রফেসর ড. এ কে এম সাইফুদ্দীন, পরিচালক (গবেষণা ও সম্প্রসারণ) প্রফেসর ড. কবিরুল ইসলাম খান, প্রফেসর ড. ভজন চন্দ্র দাস, প্রফেসর ডা. ওমর ফারুক মিয়াজী, ডা. মো. সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ। প্রাণিমেলা উদ্বোধনকালে ঢাকার চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে মোনাজাত ও তাদের রূহের মাগফেরাত কামনা করা হয়।
সিভাসু ভিসি প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ বলেন, পোষা পাখি ও প্রাণী পালনকে যারা পেশা হিসেবে নিতে আগ্রহী তাদের জন্য এ মেলা সহায়ক হবে। বিশেষ করে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবসা সম্প্রসারণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগও এরমাঝে রয়েছে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকগণ সৌখিন পাখির লিঙ্গ নির্ণয় করতে সক্ষম হওয়ায় মেলা প্রাঙ্গণেই ক্রেতারা স্ত্রীলিঙ্গ ও পুংলিঙ্গ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে বিভিন্ন ধরনের পাখি কেনার সুযোগ লাভ করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।