পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সায়ীদ আবদুল মালিক : কালবৈশাখি ঝড়-বৃষ্টিতে রাজধানীতে জনদুর্ভোগ বেড়েছে। গত দু’দিনের ঝড়-বৃষ্টির দুর্ভোগের সাথে যোগ হয়েছে প্রাণঘাতী বজ্রপাত। সারা দেশে গত দু’দিনের বজ্রপাতে এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক প্রাণ ঝরেছে, আহত হয়েছে আরও শতাধিক। দু’দিনের বৃষ্টিতে ভেসে গেছে রাজধানীর অলিগলি। আর এতে নগরবাসী পড়েছে পানিবদ্ধতাসহ যানজটের ভোগান্তিতে। গতকাল শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন হলেও মানুষ নানা প্রয়োজনে রাস্তায় নেমেই পড়েছে দুর্ভোগে। কোথাও যানজট আবার কোথাও যানবাহনের সঙ্কট। বৃষ্টির কারণে রাস্তায় পানি জমে কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও কাদাপানি মিলে একাকার অবস্থা।
ভুক্তভোগীদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থার সংস্কার কাজ হচ্ছে না। আবার কোন কোন এলাকায় পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থাও নেই। যে কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই রাজধানীর প্রধান সড়ক থেকে অলিগলি সর্বত্রই পানিতে ডুবে যায়। রাজধানীর ডিএনডি বাঁধসহ বহু এলাকায় একটু বৃষ্টি হলেই হাঁটু পানি জমে যায়। এতে বৃষ্টির পানি জমে থাকে দিনের পর দিন। হাঁটু পানিতেই চলাচল করতে হয় ওইসব এলাকার মানুষকে। পুরান ঢাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা সবচেয়ে অপ্রতুল। হালকা বৃষ্টি হলেই ড্রেন ভরে রাস্তায় জমে যায় পানি। দুর্গন্ধযুক্ত ও পচা পানিতেই চলতে হয়ে পুরান ঢাকাবাসীকে। একই অবস্থা রাজধানীর অন্যান্য এলাকারও। এ ছাড়াও নগরীতে বর্তমানে প্রায় ৭৫০টি ছোট বড় সড়কে চলছে মেরামত ও সড়ক উন্নয়নের কাজ। অন্যদিকে বিভিন্ন সেবা সংস্থার রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজতো রয়েছেই। এ জন্য রাস্তায় খানা-খন্দকের সৃষ্টি হয়ে পানি জমে যায়। রাস্তার এসব গর্তে যানবাহন পড়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।
ঢাকা ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুল আলম চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, গত দুইদিন রাজধানীতে যে বৃষ্টি হয়েছে তা অল্প সময়ে অনেক বৃষ্টি। যে কারণে পানি নিষ্কাশন হতে কিছুটা সময় লেগেছে। অন্যদিকে সেগুনবাগিচা খালের মুগদা-মানিকনগর অংশে বাঁধ দিয়ে উন্নয়ন কাজ চলার কারণেও পানি সঠিক গতিতে নিম্নাঞ্চলের দিকে যেতে বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে আকাশ কখনও ঘোলাটে মেঘের আড়ালে ঢাকা পড়ছে। আবার কখনও আকাশ থেকে ঝরে পড়ছে থেমে-থেমে বৃষ্টি। এরই মধ্যে গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে হয়েছে হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার বৃষ্টি।
কোথাও কোথাও মুষলধারেও বৃষ্টি হয়েছে। যে কোনো মুহূর্তেই এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে ওঠতে পারে। তবে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আগামী সোমবার পর্যন্ত।
গতকাল শুক্রবার আবহাওয়া অধিদফতর ও আকু ওয়েদার সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস ইনকিলাবকে জানান, পূবালী ও পশ্চিমা বাতাসের প্রভাবে প্রকৃতির এই নাটকীয়তা। যে কোনো সময় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, পাবনা, ফরিদপুর, বগুড়া, মাদারীপুর ও চট্টগ্রাম নদীবন্দরগুলোতে বন্দরে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত অব্যাহত রয়েছে। তবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রাবন্দর সমুদ্রবন্দর থেকে সব ধরনের সংকেত উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বৃষ্টির কারণে যানবাহন সঙ্কটে পড়ে ভোগান্তির শিকার হন নানা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষদের। রামপুরা, বাড্ডা, শান্তিনগর, শাহজাহানপুর, মালিবাগ, মৌচাক, মিরপুর ও পল্টন এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যায়। রাজধানীর মালিবাগ মগবাজার এলাকায় ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজের জন্য মগবাজার, মালিবাগ, তেজগাঁও, রাজারবাগ, মালিবাগ রেলগেট ও রামপুরা সড়কে যানবাহন চলাচলে মারাত্মক বিঘœ ঘটছে। রাস্তায় বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। এমনকি রিক্সা নিয়েও এসব সড়কে চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়ে। বৃষ্টির কারণে রাজধানীর এসব সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। কয়েকটি স্থানে বাস, ট্রাক এমনকি রিক্সা গর্তে পড়ে যেতে দেখা গেছে।
সামান্য এ বৃষ্টিতে গতকাল ব্যাংক পাড়া মতিঝিলের বনশিল্প ভবন ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের আশপাশের এলাকা, শান্তিনগর, আরামবাগ, ফকিরাপুল, কাকরাইল দেখা গেছে হাঁটু পানি। সময় মত পানি নেমে না যাওয়ায় প্রধান প্রধান সড়কে পানি জমে যায়। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে পানিবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় গাড়ি চলাচলেও সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও সড়কের ম্যানহোলের ঢাকনা না থাকায় অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়েছে। আবার পানিবদ্ধতার কারণে কোথাও কোথাও যানবাহন বিকল হয়ে পড়ে থাকতেও দেখা গেছে।
গত দুইদিনের বৃষ্টিতে রাস্তা তলিয়ে গেছে মালিবাগ চৌধুরীপাড়া থেকে কাকরাইল মোড়ের আগ পর্যন্ত। বৃষ্টিতে পথচলায় ছন্দ হারিয়েছেন পথচারী ও গাড়ির যাত্রীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গ্রীষ্মের কাল বৈশাখির বৃষ্টিতে রাজধানীর একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চলাচল অস্বাভাবিক হয়ে গেছে। রাস্তা পানিতে ডুবে গেছে। ইঞ্জিনে পানি প্রবেশ করায় পথের মাঝে বন্ধ হয়ে রয়েছে একাধিক গাড়ি। রাস্তায় পানি থাকায় হাতে জুতা নিয়ে পথ চলতে হচ্ছে সবাইকে। কেউ কেউ মাঝে মাঝে পা তুলে জুতার পানি বের করছেন। মালিবাগ মৌচাক সড়কে ফ্লাইওভারের কাজ চলায় অনেক গর্ত থাকায় গাড়ি চালাতে ভয় পাচ্ছেন বলে জানান চালকরা।
অনেক প্রাইভেটকারও অচল হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। অচল হয়ে যাওয়া একটি প্রাইভেটকারকে ধাক্কা দেওয়ার জন্য তিনশ’ টাকা দিয়ে দু’জনকে ভাড়া করে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।