পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আসলাম পারভেজ, হাটহাজারী : দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র চট্টগ্রামের হালদা নদী। এ নদীতে সাধারণত চৈত্র-বৈশাখ মাসে পূূর্ণিমায় প্রবল বর্ষণ আর মেঘের গর্জনের কোনো এক মুহূর্তে হালদা নদীতে রুই, কাতলা, মৃগেল ও কার্পজাতীয় মা মাছ ডিম ছাড়ে। বিশেষজ্ঞদের অভিমত চৈত্র মাস হালদা নদীতে ডিম ছাড়ার খুবই উৎকৃষ্ট সময়। এ ডিমের পোনা দ্রুত বর্ধনশীল। বাংলা বছরের শেষ মাস থেকে বিশেষ করে ফাল্গুন মাসের শেষ দিকে সাংগু, মাতামুহুরী, কর্ণফুলীসহ বিভিন্ন শাখা নদী ও খাল থেকে মা মাছ হালদা নদীতে চলে আসে।
পোনা সংগ্রহের সনাতন কূয়া, হ্যাচারী, নৌকা, জাল ও ডিম সংগ্রহের সকল সরঞ্জাম ইতিমধ্যে প্রস্তুত। এখন মেঘের গর্জন, পাহাড়ী ঢল ও প্রবল বৃষ্টিপাতের মধ্যে মাতৃ মাছ ডিম ছাড়তে পারে। মেঘের গর্জন, ভারী বৃষ্টি, পাহাড়ী ঢল ও শীতল আবাহাওয়ায় ডিম ছাড়ার উপযোগী পরিবেশ। তখনি হালদায় ডিম ছাড়বে মা মাছেরা। আর সে শুভসন্ধিক্ষণে রেণু সংগ্রহের উৎসবে মেতে উঠবে হালদার দু-পাড়ের পোনা আহরণকারীরা।
ডিম সংগ্রহকারীরা জানান, ডিম ছাড়ার এখন তো প্রকৃত সময়, কিন্তু অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে তাই মা মাছেরা রেণু ছাড়তে পারে। ডিম আহরণের সকল সরঞ্জাম ইতিমধ্যে প্রস্তুত রাখা আছে। আমরা সে অপেক্ষায় প্রহর গুনছি।
এশিয়ার প্রাকৃতিক একমাত্র মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র চট্টলার এই হালদা নদী। এটি বিশ্বের একমাত্র জোয়ার-ভাটার নদী যেখানে রুই জাতীয় মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ ক্ষেত্র। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও মা মাছগুলো সাংগু, মাতামুহুরী ও কর্ণফুলীর থেকে হালদা নদীতে এসেছে। মাছের পেট ভর্তি ডিম নিয়ে চৈত্র মাসের অমাবস্যা ও পূর্ণিমা অতিক্রম করে বাংলা বছরের প্রথম মাস বৈশাখের অমাবস্যা তিথিসহ এই তিনটি বড় তিথি চলে গেছে। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় মা মাছ ডিম ছাড়েনি। নদীতে ডিম ছাড়তে বজ্রসহ প্রবল বর্ষণ প্রয়োজন। বর্ষণের ফলে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলের বেগ প্রবল হলে মা মাছগুলো উজানে এসে ডিম ছাড়ে। কিন্তু এবার গেল চৈত্র মাস ও বৈশাখের দু’য়েকদিন রাতে সামান্য বৃষ্টি হলেও প্রবল বর্ষণ হয়নি। গরমের তীব্রতায় এ ধরনের বর্ষণে আবাহাওয়া শীতল হয়নি। তাই প্রবল বর্ষণসহ হালদা নদীতে ঢলের বেগ না থাকায় মা মাছ বৈশাখের অমাবস্যাতেও ডিম ছাড়েনি। তাছাড়া দীর্ঘ অনাবৃষ্টির কারণে হালদা নদীর সাথে সম্পৃক্ত পাহাড়ী ছড়া থেকে সৃষ্ট বিভিন্ন উপ-খাল অনেকদিন যাবৎ পানিবিহীন থাকায় সম্প্রতি হালকা বৃষ্টিপাত হলেও তা উপ-খালগুলো চুষে নিয়েছে। এ তিথিতে প্রবল বর্ষণের মধ্যে মা মাছ হালদা নদীতে ডিম ছাড়বে। ইতোমধ্যে নদীতে মা মাছের আনা গোনা দেখা গেছে বলে ডিম আহরণকারীরা জানিয়েছেন।
হাটহাজারী গড়দুয়া এলাকার ডিম সংগ্রহকারীরা জানান, ডিম ছাড়ার সময় গত বছরের তুলনায় প্রায় অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। এখন সময় আছে বৈশাখের পূর্ণিমা। উপযুক্ত পরিবেশ অর্থাৎ পানির ঢল ও ব্রজসহ প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে যে কোন সময় হালদায় মা মাছ ডিম ছাড়তে পারে। ডিম সংগ্রহরে জন্য আমাদের সকল প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। প্রবল বর্ষন ও পাহাড়ী ঢলে মা মাছেরা কাঙ্খিত পরিমাণ ডিম না ছাড়লেও অন্ততপক্ষে সামান্য পরিমাণ হলেও ডিম ছাড়বে বলে তিনি জানান। সাম্প্রতি হালদা নদীতে প্রথম দপায় প্রবল বর্ষণ ও মেঘের গর্জন ছাড়াই মাতৃ মাছ ডিম ছেড়েছিল। তাই গতকাল রাত ও আজ বিকালে মেঘের গর্জন ও বৃষ্টির মধ্যে হালদা নদীতে দ্বিতীয় দফায় মা মাছ ডিম ছাড়তে পারে বলে জানান হালদা পাড়ের ডিম সংগ্রহকারীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।