পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
আবাসন স্বপ্ন পূরণে সাধ ও সাধ্যের মধ্যে প্লট ও ফ্ল্যাট কিনতে রিহ্যাব মেলার চতুর্থ দিনে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছিলো। পাশাপাশি কোম্পানিগুলোর নানা অফার ও মূল্যছাড় মেলায় আগতদের নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে। ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন দামের অ্যাপার্টমেন্ট ও প্লট নিয়ে এসেছেন আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো। কেউ কিনছেন, কেউ আবার ঘুরেফিরে দেখছেন। মেলায় রয়েছে মান ও আয়তন যাচাই-বাছাই করে বুকিং দেওয়ার সুবিধা। গ্রাহকরা বলছেন, সংখ্যা বাড়লেও এখনো মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে প্লট ও ফ্ল্যাট। অবশ্য মেলায় ভালো সাড়াও মিলছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে মেলায় শুধু প্লট বা ফ্ল্যাটে মূল্য ছাড় নয়, ঋণের ক্ষেত্রেও বিশেষ সুবিধা মিলছে। বাড়ি নির্মাণ, ফ্ল্যাট ও প্লট কিনতে গৃহঋণে বিশেষ অফার দিচ্ছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।
‘স্বপ্নীল আবাসন সবুজ দেশ, লাল সবুজের বাংলাদেশ’ এই স্লোগানে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের আঙ্গিনায় মেলা বসেছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। মেলার চতুর্থ দিন শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় বিপুল মানুষের ভিড় ছিল। হাজার হাজার মানুষ মেলায় প্রবেশ করছে আবার বের হচ্ছে।
সরেজমিনে মেলায় গিয়ে দেখা গেছে, ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে চলছে ঠিকানা বিনিময়। অ্যাড্রেস ক্লিপে ক্রেতা ঠিকানা লিখে দিচ্ছেন, আর কোম্পানির ঠিকানা নিয়ে যাচ্ছেন। পরে ভেবে চিন্তে, বুঝে শুনে, সাইট ভিজিট করে ফ্ল্যাট বা প্লট কিনবেন।
প্রিয় প্রাঙ্গণ কোম্পানির অ্যাসিসটেন্ট ম্যানেজার মো. আমজাদ হোসেন বলেন, রিহ্যাব মেলা কোনো বেচাকেনার মেলা নয়। এ মেলা ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে বোঝাপড়ার মেলা। গ্রাহককে যতই বুঝাই কোনো গ্রাহকই পণ্য না দেখে কিনবে না। আর তা ছাড়া ঘরবাড়ি, জমিজমা ও ফ্ল্যাট না দেখে কেউ কিনবে না। সে কারণে মেলায় যে সব ক্রেতা আসেন কোম্পানির লোকজন তাদের প্রকল্প সম্পর্কে বোঝায়।
তিনি বলেন, কোন প্রকল্পে কী কী সুবিধা আছে তার বিস্তারিত বিবরণ দিচ্ছেন মেলায় বসা স্টলের কর্মকর্তারা। আর ক্রেতারা সাধারণতো নিজের ঠিকানা ফোন নম্বর লিখে দিয়ে কোম্পানির প্রসপেকটাস নিয়ে চলে যাচ্ছেন।
ক্রেতা হিসেবে মেলায় গেছেন রাজধানীর গোপীবাগের বাসিন্দা মাহবুব হোসেন। সরকারি চাকরি থেকে এবারই তিনি অবসর নিয়েছেন। সাধ্যের মধ্যে একটি ফ্ল্যাট কেনার জন্য ৫-৬ মাস ধরে বিভিন্ন রিয়েল স্টেট কোম্পানির কাছে যাচ্ছেন। কিন্তু দরদামে মিলছে না। মেলায় গেছেন যদি কোনো কোম্পানি মেলা উপলক্ষে ছাড় দিয়ে থাকে সে জন্য।
তিনি বলেন, কয়েকটি কোম্পানি কিছু ছাড় দিচ্ছেন কিন্তু তাদের প্রকল্প মিরপুর, কল্যাণপুর, শেখের টেক, উত্তরখান এলাকায়। ঢাকার প্রায় শেষ প্রান্তে যে সব প্রকল্প আছে সেখানে ফ্ল্যাটের দাম কিছুটা কম চাচ্ছে। তা ছাড়া ঢাকার মধ্যে যে সব প্রকল্প আছে সেখানে দাম অনেক বেশি।
বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানির কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ঢাকার অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাটের দাম কোটি টাকার উপরে। তবে মধ্যবিত্তদের জন্য আছে মিরপুর, খিলগাঁও, ক্যাণপুর, উত্তরখান ও গোপীবাগের মতো এলাকায়। এসব এলাকায় ৯০০ থেকে ১০০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ৪৫ লাখ থেকে ৫০ লাখের মধ্যে কেনাবেচা হয়। একই সঙ্গে মেলায় স্বল্প ও মধ্যবিত্ত ক্রেতার সংখ্যার উপস্থিতিই ছিল বেশি।
আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোহাম্মদ তানভিরুল ইসলাম জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বিক্রি বেশ ভালো। একই সঙ্গে ভালো মানের ক্রেতারা বেশি এসেছেন। তবে বেশিরভাগেরই মধ্যম মানের ফ্ল্যাটে আগ্রহ। কোন এলাকার ফ্ল্যাটে সাড়া বেশি জানতে চাইলে তিনি জানান, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, উত্তরা, পল্টন, শান্তিনগর এবং মগবাজার এলাকার ফ্লাটে চাহিদা বেশ ভালো। তবে অভিজাত এলাকার চাহিদা যে কম তাও নয়।
তিনি বলেন, ক্রেতারা মেলায় এসে আমাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করছেন। তারা যে ঠিকানা দিচ্ছেন সেটা ধরেই পরে আমাদের কর্মকর্তারা যোগাযোগ করবেন। ক্রেতারা সাইট ভিজিট করবেন। পছন্দ হলে তারপর দরদাম এবং ক্রয় কার্যক্রম।
পাঁচ দিনব্যাপী মেলা শুরু হয়েছে গত বুধবার। মেলার শেষদিন আগামীকাল রোববার। আবাসন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন রিহ্যাব মেলাটির আয়োজক। মেলার উদ্বোধন করেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। এ মেলায় আছে ২০২টি স্টল। এর মধ্যে ১৬৮টি আবাসনের, ২০টি নির্মাণ সামগ্রীর ও ১৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছে মেলা। মেলায় প্রবেশের জন্য দুই ধরনের টিকিটের ব্যবস্থা রয়েছে। একবার প্রবেশের জন্য ৫০ টাকার টিকিটের পাশাপাশি ৫ বার প্রবেশের জন্য মাল্টিপল টিকিটের মূল্য ১০০ টাকা। প্রবেশ টিকিটের অর্থ দুস্থদের কল্যাণে ব্যয় হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।