Inqilab Logo

বুধবার ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বজ্রপাতে বাড়ছে মৃত্যু

প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৪৭ পিএম, ১৩ মে, ২০১৬

শফিউল আলম : আকাশে বিদ্যুৎ চমকায়। এর পরক্ষণেই মাটিতে নেমে আসে ভয়াল বজ্রপাত। বজ্রপাত বা বজ্রাঘাতে ঘটছে মৃত্যু। বজ্রপাত নিয়ে জনমনে ভয়-আতঙ্ক বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেননা ইদানিং বজ্রপাতে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বৃহস্পতিবার একদিনেই দেশের ১৬ জেলায় বজ্রপাতে অন্তত ৪২ জনের মৃত্যু ঘটেছে। গতকালও (শুক্রবার) বজ্রপাতে বেশ কয়েকজন মারা গেছে বিভিন্ন স্থানে। চৈত্র-বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে এদেশে সবচেয়ে বেশি হারে বজ্রপাত হয়। এতে করে অনেক মৃত্যুর কারণ ঘটে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বজ্রপাতের সংখ্যা, মাত্রা ও ব্যাপকতা বছর বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে মারাত্মক আকারে। বজ্রাঘাতে মানুষের মৃত্যুর হারও বাড়ছে। প্রকৃতির আপন নিয়মের ধারায় বজ্রপাত ও বজ্রসহ বৃষ্টিপাত নতুন কিছু নয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এর ব্যাপকতার কারণে বাংলাদেশে মূর্তিমাণ দুর্যোগের ভয়াবহতা নিয়েই আবির্ভূত হয়েছে বজ্রপাত। বজ্রাঘাতে মানুষ এমনকি খোলা মাঠে-ময়দানে খামারে বাথানের গবাদিপশুর প্রাণহানির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তবে দেশে প্রতিবছর কত মানুষ বজ্রপাতে মারা যায় এ সম্পর্কে কোন তথ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তর কিংবা অন্যকোন সরকারি বিভাগের কাছে নেই।
অবিরাম খরতপ্ত আবহাওয়ায় উৎকট ভ্যাপসা গরম, আবহাওয়া-জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবতনে রুক্ষতা-রুগ্নতা, সাগর ও ভূ-পৃষ্ঠের তাপমাত্রা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি এবং পরিবশে-প্রতিবেশে অব্যাহত মাত্রাতিরিক্ত দূষণকে আবহাওয়াম-লে বজ্রপাত বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে দায়ী করেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞমহল। একজন আবহাওয়াবিদ জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বায়ুম-লে তীব্র গতিসম্পন্ন শীতল ও উষ্ণ বায়ুমালার সংঘর্ষের শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে অধিকমাত্রায় ঘটছে বজ্রপাত। রুটিন দুর্যোগের তালিকায় লিপিবদ্ধ হয়ে দুর্যোগ হিসেবে এখনও নাম না উঠলেও একাধিক আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পুরোপুরি বৈশিষ্ট্য নিয়েই বৃদ্ধি পাচ্ছে বজ্রপাত বা বজ্রাঘাতের প্রবণতা। একইসঙ্গে কালবৈশাখী ঝড়, টর্নেডো এবং বজ্রঝড়ও বেড়েই চলেছে। আবহাওয়া অধিদফতরের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস তালিকায় গত কয়েক বছর ধরে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ‘বজ্র-ঝড়’। এ সম্পর্কে সতর্কও করা হচ্ছে। যদিও চীন, জাপান, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার মতো এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে বজ্রপাত ও বজ্র-ঝড়ের তাৎক্ষণিকভাবে অর্থাৎ দিনক্ষণ সুনির্দিষ্ট করে পূর্বাভাস প্রদান করা সম্ভব হয় না। সে ধরণের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এদেশে নেই।
বছর বছর বজ্রপাতের হার ও তীব্রতা বেড়েই চলেছে। এখন প্রায় প্রতিদিনই একাধিক এলাকায় বজ্রপাত সংঘটিত হচ্ছে তার প্রচ- শক্তিমত্তা সহকারে। বজ্রপাতে হতাহত হচ্ছে বিশেষত খোলা জায়গায় চলাচলরত পথচারী, পল্লী-গ্রামের দিনমজুর, জেলে, মাঝি-মাল্লা, কৃষক-কিষাণীসহ অনেকেই। গবাদিপশুও মারা যাচ্ছে। সচরাচর চৈত্র মাস থেকে শুরু করে গ্রীষ্ম মৌসুমজুড়ে (চৈত্র-বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ) ও আষাঢ়ের প্রথমদিক পর্যন্ত আকাশে বজ্রপাতের আবহ সৃষ্টি হয়। সেই সঙ্গে তাপপ্রবাহ, বজ্রসহ কালবৈশাখী ঝড় বা বজ্র-ঝড়ও বেড়ে চলে। চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমে বজ্রপাতের মাত্রা গত তিন/চার বছরে তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গতবছর বজ্রপাতের হার আগের বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়।
চলতি মে মাসের দীর্ঘমেয়াদি আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানানো হয়, এ মাসে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে ২ থেকে ৩ দিন বজ্রসহ মাঝারি থেকে তীব্র আকারে কালবৈশাখী অথবা বজ্র-ঝড় এবং দেশের অন্যত্র ৩ থেকে ৪ দিন হালকা থেকে মাঝারি আকারে কালবৈশাখী অথবা বজ্রঝড় সংঘটিত হতে পারে। তবে বাস্তবে এ যাবত বজ্র-ঝড়, বজ্রপাত আঘাত হেনেছে তার চেয়ে অনেক বেশি হারে। গতকালও আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
কেন বজ্রপাত
বিশ্বজুড়ে বছরে এখন প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ বার বজ্রপাত হয়। এ অবস্থায় বজ্রপাতের হার বৃদ্ধি পেলে মানুষের হতাহত হওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যাবে। একজন সিনিয়র আবহাওয়াবিদ জানান, সাধারণত ভূমধ্যসাগর থেকে উৎসারিত শীতল জলীয়বাষ্প মধ্য-এশিয়াসহ পাকিস্তান, ভারত হয়ে বাংলাদেশের পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম দিক দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরভাগে প্রবেশ করে। সেই শীতল বায়ুমালা পূর্ব-প্রান্ত থেকে প্রবাহিত উষ্ণ বায়ুপ্রবাহের সংস্পর্শে আকস্মিক ও অতিদ্রুতবেগে এসে যদি সংঘর্ষ ঘটায় এর ফলে বজ্রপাত, বজ্র-ঝড় সংঘটিত হতে পারে। বাংলাদেশের ঊর্ধ্বাকাশে ৮০ কিলোমিটারের মধ্যে (ট্রপোস্ফেয়ার) বজ্র ও ঝড়ের কার্যকারণ ঘটে থাকে। তবে সেক্ষেত্রে পশ্চিম দিক থেকে আগত শীতল বায়ুমালার সাথে এখানকার উষ্ণ বায়ুপ্রবাহের সংযোগ ও সংঘর্ষ ঘটার মতো আবহ বা কার্যকারণ থাকতে হবে।
বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায়, শীতল ও উত্তপ্ত বায়ুর মধ্যকার দ্রুতবেগে সংঘাতের ফলে বজ্রপাত সৃষ্টি হওয়ার মতো আবহাওয়াম-লে বিরূপ আবহ তৈরি হয়েই আছে। ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগে দিনের বেলায় এখন প্রচ- গরম পড়ছে। তাপ বিকিরণ হচ্ছে প্রতিনিয়তই। গ্রীষ্ম মৌসুমে দাবদাহের তীব্রতা আরও অনেক বেশিহারেই হয়ে থাকে। গরম ও ঊর্ধ্বগামী জেট বায়ুপ্রবাহ যখন ঊর্ধ্বাকাশে কোন খালি (ভ্যাকুয়াম) জায়গার দিকে ছুটতে থাকে এবং শীতল বায়ুর সাথে তাৎক্ষণিক সংঘর্ষ হয় তখনই বজ্রপাত, কালবৈশাখী কিংবা বজ্রঝড় সৃষ্টি হয়। বজ্রপাতের জন্য ভূপৃষ্ঠ বা এর কাছাকাছি উপরিভাগ, ঊর্ধ্বাকাশ থেকে শুরু করে ট্রপোস্ফেয়ার-এর কাছাকাছি পর্যন্ত শুষ্ক ও গরম থাকতে হয়। বজ্রপাতের আবহ বা উপযুক্ত পরিবেশ-পরিস্থিতি একই সময়ে বিদ্যমান থাকার কারণেই এভাবে দেশের সর্বাধিক এলাকায় বজ্রপাত আঘাত হানে। বজ্রপাতে প্রাণহানিসহ অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতির জন্য মাত্র কয়েক সেকেন্ড সময়ই যথেষ্ট। তবে খুুবই একটি ছোট পরিসরের এলাকায় বজ্রপাতের আঘাত নেমে আসে। বাতাসের ঊর্ধ্বমুখী প্রবাহ যতই দ্রুততর হয়, বজ্রপাত তত বেশিমাত্রায় হয়ে থাকে। আর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি হলেও বজ্রপাতের ঘটনা বৃদ্ধি পায়।
আবহাওয়া বিজ্ঞান অনুযায়ী, গ্রীষ্মকালে দিনের বেলায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। এ সময় বাতাস উত্তপ্ত হয়ে উপরে উঠতে থাকে। জলীয়বাষ্পও ঊর্ধ্বাকাশের দিকে উঠতে থাকে। মেঘের ভেতরে জলীয়বাষ্প ঢুকতে শুরু করে। এতে করে বেশিহারে উলম্ব মেঘের সৃষ্টি হয়। আপ ও ডাউন ড্রার্ফ বাতাসের মধ্যে চলতে থাকে। এ অবস্থা থেকে সৃষ্টি হয় বজ্রগর্ভ মেঘ। এ মেঘের উপরিভাগে পজেটিভ ও নিচের ভাগে নেগেটিভ বিদ্যুৎ তৈরি হয়। পজেটিভ-নেগেটিভ মেঘ থেকে বিদ্যুৎ সঞ্চালনকালে বজ্রের সৃষ্টি হয়। পজেটিভ ও নেগেটিভ মেঘের মিলনকালে বাতাসের উত্তাপ ২০ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩০ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হয়ে থাকে। তখন মেঘের ভেতরে থাকা অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন গ্যাসের সম্প্রসারণ ঘটে। এতে মেঘের গর্জন তৈরি হয়। এরপর প্রচ- ঝলকানি দিয়ে পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ে বজ্র। এর গতিপথের সামনে মানুষ কিংবা অন্যকোন প্রাণী পড়লে নির্ঘাত মৃত্যু। বজ্রপাত থেকে বাঁচা কঠিন। তবে বজ্রাঘাত এড়িয়ে মৃত্যুহার লাঘব করা যায়।
সতর্কতা-সচেতনতার তাগিদ
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায়, পূর্ণশক্তিতে একটি বজ্রপাত আঘাত হানলে তার শক্তিমাত্রা জাপানের হিরোশিমা নাগাসাকিতে নিক্ষিপ্ত পারমাণবিক বোমার শক্তির সমতূল্য হতে পারে। আর সর্বনিম্ন ক্ষমতারও একটি বজ্রপাত যখন ভূপৃষ্ঠে আঘাত হানে এর শক্তিমাত্রা ও বিক্রিয়া ৩৩ কেভি বৈদ্যুতিক শক্তির সমমানের বল বা শক্তিমাত্রা বহন করে। খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে গ্রীক দার্শনিক এরিস্টটল যে বিবরণী দিয়ে গেছেন তাতে মেঘে মেঘে সংঘর্ষকে বজ্রপাতের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বজ্রপাত নিয়ে সুদূর অতীতকাল থেকে নানামুনির নানা মতের সঙ্গে হরেকরকম অমূলক কুসংস্কার যেমন রয়েছে, তেমনি প্রকৃতির আপন নিয়মে ঘটে চলা বজ্রপাতের কারণ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও বর্তমানে রয়েছে। মাত্র কয়েক সেকেন্ডেই যেখানে বজ্রপাতের আঘাতে প্রাণহানির আশঙ্কা এবং ক্রমবর্ধমান হারে বজ্রপাতের আঘাতের প্রেক্ষিতে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞগণ ভয়-আতঙ্কের চেয়ে বজ্রপাতের কবল থেকে আত্মরক্ষার সর্বাত্মক চেষ্টা, ব্যক্তিগত পর্যায়ে সচেতনতা এবং সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগে ব্যাপকভাবে পূর্ব-প্রস্তুতি ও সতর্কীকরণ তৎপরতার ব্যাপারে জোরালো তাগিদ দিয়েছেন। বিশেষ করে প্রাক-বর্ষা মৌসুমে (চৈত্র-বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে) বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সময় কিংবা আকাশে বিদ্যুৎ চমকানোর সময়ে খোলা জায়গায় কিংবা মাঠে-ঘাটে, ময়দানে, বিলে, নদীতে চলাচল পরিহার করা জরুরি।
এদিকে বজ্রপাত থেকে আত্মরক্ষার কৌশল সম্পর্কে মানুষকে সজাগ-সচেতন করার উদ্যোগ বাংলাদেশে নেই। কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশেই বজ্রপাত সম্পর্কে জনগণকে জানানো এবং সতর্ক করা হয়। বজ্রপাতের কয়েক সেকেন্ড স্বল্প সময়কালেই বাঁচার কৌশল সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করে তোলা হলে প্রাণহানির হার কমানো সম্ভব বলে আবহাওয়াবিদরা মনে করেন। আকাশে ঘনকালো মেঘ জমতে দেখলেই মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়া উচিৎ। পাকা বাড়িতে আশ্রয় নেয়া অধিক নিরাপদ। চলন্ত গাড়িতে থাকলে জানালার কাঁচ বন্ধ করে থাকতে হবে। ফাঁকা মাঠ, গাছের নিচে, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ও খুঁটির নিচে আশ্রয় নেয়া বিপজ্জনক। বজ্রপাতের সময় পুকুর, নদী, দীঘির মতো পানির সংস্পর্শে থাকা আরো বিপজ্জনক। কেননা আকাশে বিদ্যুৎ চমকানোর সাথে সাথে মাটি স্পর্শ করে। মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত উত্তর, উত্তর-পশ্চিম, দক্ষিণ-পশ্চিম ও পশ্চিম আকাশে মেঘ জমে বিদ্যুৎ চমকাতে থাকলে এবং গুড়গুড় গর্জন শুরু হলে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে হবে।
জলবায়ু পরিবর্তনে বজ্রপাত বৃদ্ধি
আবহাওয়া-জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা জানান, বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাবে চলতি শতকের শেষ নাগাদ বজ্রপাতের হার প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের একদল বিজ্ঞানী একথা জানিয়েছেন। আকাশে বিদ্যুৎ চমকানো থেকে বজ্রপাত হয়। আর তার আঘাতে মানুষের মৃত্যু থেকে শুরু করে অস্ট্রেলিয়ার মতো অনেক দেশে দাবানলের সূত্রপাত পর্যন্ত হতে পারে। আবহাওয়া-জলবায়ুর বিরূপ পরিবর্তনের ফলে বজ্রপাতের হার বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের একদল বিজ্ঞানী এমনটিই দাবি করেছেন। তারা বলেছেন, চলতি শতকের শেষ নাগাদ বজ্রপাতের হার ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে। নেচার সাময়িকীতে বজ্রপাত সম্পর্কিত গবেষণা প্রতিবেদনে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ এবং মেঘের তারতম্যের ভিত্তিতে বলা হয়, বজ্রপাতের হার বা প্রবণতা বছর বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গবেষকরা জানান, পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা প্রতি এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির ফলে বজ্রপাতের হার প্রায় ১২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। চলতি শতকের শেষে তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেলে তখন বজ্রপাত ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। বিশ্বজুড়ে বছরে এখন প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ বার বজ্রপাত হয়। এ অবস্থায় বজ্রপাতের হার বৃদ্ধি পেলে মানুষের হতাহত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়বে। এ ছাড়া বনভূমি এবং প্রাণিবৈচিত্র্যের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। শুষ্ক বনাঞ্চলে দাবানলের আশঙ্কা আরও বাড়বে। সেখানকার পাখিসহ বিলুপ্তপ্রায় নানা রকমের প্রাণীর প্রজাতি ধ্বংসের মুখে পড়বে।



 

Show all comments
  • সুজন ১৪ মে, ২০১৬, ১১:৫২ এএম says : 0
    হে আল্লাহ তুমি আমাদের প্রতি রহমত নাযিল করো।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বজ্রপাতে বাড়ছে মৃত্যু
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ