Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

আন্তর্জাতিক সহায়তা পেলে গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ কমিয়ে আনা সম্ভব -পরিবেশ বন মন্ত্রী

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

পরিবশে, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, আন্তর্জাতিক সহায়তা পেলে বাংলাদেশের পক্ষে গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ ২০৩০ সালের মধ্যে ১৫ শতাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে পরিবহন বিদ্যুৎ ও শিল্পখাতে গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ ৫ শতাংশে কমিয়ে আনার জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে যদিও এটি বাংলাদেশের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। গতকাল সিরড্যাপ মিলনায়তনে ‘কার্বণ নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের কর্ম পরিকল্পনা’ শীর্ষক প্রকাশনার মোড়ক উম্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, প্যারিস চুক্তির আওতায় ২০১৫ সালে ইউনাইটেড নেশন্স ক্লাউমেট চেঞ্জ কনভেনশনে ( টঘঋঈঈঈ) বাংলাদেশ গ্রিণ হাউজ গ্যাস নিঃসরণের প্রতিশ্রæতি ব্যক্ত করেছে। সেই অনুযায়ী পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়সহ দেশি বিদেশী বিশেজ্ঞদের সহযোগিতায় রোড ম্যাপ এন্ড এ্যাকশান প্লান ফর ইপ্লিমেনটিং বাংলাদেশ এনডিসি, ট্রান্সপোর্ট,পাওয়ার এন্ড ইন্ডাস্ট্রি প্রনয়ণ করা হয়েছে। এ রোডম্যাপে বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিন হাউজ গ্যাস ৫ শতাংশে কমিয়ে আনার প্রতিশ্রæতি ব্যক্ত করেছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সহায়তা পেলে এর পরিমাণ আরো বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত গ্রিন হাউজ গ্যাস কমানো সম্ভব। এজন্য তিনি উন্নত দেশসমূহের সহযোগিতা কামনা করেন।
পরিবেশ মন্ত্রী মো: শাহাব উদ্দিন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সুরক্ষা প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভিত্তিক ১০টি কর্মসূচির একটি। তাই বর্তমান সরকার ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং পরিবেশ সুরক্ষা ও উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পরিবহন, বিদ্যুৎ শিল্পখাত থেকে নিঃসরণ কমানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আমাদের বাধ্যবাধকতা না থাকা সত্তে¡ও আমরা গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমানোর প্রতিশ্রæতি ব্যক্ত করেছি।
বিকালে জাতীয় সংসদে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমের এক প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী জানান, সবুজ বেষ্টনী সৃষ্টির মাধ্যমে সমুদ্র উপক‚ল রক্ষা, জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং কার্বন নিঃসরণের ক্ষতিকর প্রভাব কমানোর লক্ষ্যে ১৪৩ মিলিয়ন বৃক্ষ রোপণ এবং ৫ হাজার ১২১ হেক্টর বনভ‚মি বনায়নের আওতায় আনা হয়েছে। জ্বালানী কাঠের ব্যবহার কমাতে ১২ হাজার ৮১৩টি বায়োগ্র্যাস প্লান্ট স্থাপন এবং ৯ লাখ ২৮ হাজার উন্নত চুলা বিতরণ করা হয়েছে।
একই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্থ দেশ সমূহের মধ্যে অন্যতম, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। জলবায়ু পরিবর্তন জনিত বিশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, শিল্প বিপ্লবের পর হতে এ পর্যন্ত তাপমাত্রা প্রয় এক ডিগ্রী সেন্ট্রিগেট বৃদ্ধি পেয়েছে। উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশসমূহ গ্রীণ হাউস গ্যাসের নিঃসরণ না কমালে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ৩ ডিগ্রী সেন্ট্রিগেটের উপর হতে পারে। তিনি জানান, বায়ুমন্ডলে যে গ্রীন হাউস গ্যাসের উপস্থিতির কারণে বৈশ্বিক উঞ্চায়ন ঘটে তার পরিমাণ ২৮০ পিপিএম থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৪০০ পিপিএম এর উপরে গিয়েছে ধারণা করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের গড় বার্ষিক তাপমাত্রা গত ১৪ বছরে (১৯৮৫-৯৮) মে মাসে ১ ডিগ্রী এবং নবেম্বর মাসে দশমিক ৫ ডিগ্রী সেন্ট্রিগেট বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের গড় বৃষ্টিপাতও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষত স্বল্প সময়ে বেশি বৃষ্টিপাত শহরাঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করেছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দপ্তর সংস্থার সমন্বয়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় নানাবিধ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে বলে জানিছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ