পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাবেক প্রধানিমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারর্পাসন খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে নাইকো মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে আসামিপক্ষের আবেদনের শুনানির অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার রাজধানীর নাজিমুদ্দিন রোডে পুরোনো ঢাকা কেন্দ্রীয় করাগারে স্থাপিত বিশেষ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে দুদকের দায়ের করা নাইকো মামলায় চতুর্থ দিনের মতো শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে হুইল চেয়ারে করে খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করা হয়। দীর্ঘ সময় আদালতে বসে থাকলেও কোনো কথা বলেননি সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। শুনানি শেষে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করেন আদালত।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে এ মামলার এফআইআর ও চাজশিটের ডকুমেন্ট, মামলায় জব্দ করা আলামত, কেস ডকেট, মামলার অনুমোদনের কাগজপত্র চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান ও এ জে মোহাম্মদ আলী। তারা আদালতে বলেন, এই মামলার এফআইআর ও চার্জশিটে যেসব ডকুমেন্ট সিজ করা হয়েছে আমরা তার কপি পাওয়ার আধিকারী। তারা বলেন, আসামীকে ডকুমেন্ট না দিয়ে চার্জ শুনানি করা যায় না। চার্জ শুনানির জন্য ডকুমেন্ট পাওয়া আসামীর রাইট।
আব্দুর রেজ্জাক খান বলেন, সার্টিফায়েড কপি পেলে যথাযথ বক্তব্য উপস্থাপন করব। আর ডকুমেন্ট পর্যালোচনার সুযোগ পাব। তখন বিচারক বলেন, বিধি অনুযায়ী সার্টিফায়েড কপি পাবেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, তারা ডকুমেন্ট পাওয়ার জন্য আবেদন করেনি। আদালতে দরখাস্ত না দিয়ে চার্জ শুনানি চলছে। এটা মামলাকে বিলম্বিত করা ও ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে করা হচ্ছে। জবাবে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলেন, ডকুমেন্ট পাওয়ার জন্য আমরা আবেদন দিয়েছি। এই কাগজপত্র আদালতে না থাকায় আমাদের সরবরাহ করা হয়নি। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত বিষয়টি আদেশের জন্য রাখেন। এদিকে এ মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ নিজেই শুনানি করেন।
বেলা ১২টা ৩৪ মিনিটে খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে বিশেষ আদালতে হাজির করা হয়। ওই সময় তার সঙ্গে গৃহকর্মী ফাতেমাও ছিলেন। তিনি গোলাপী রঙের শাড়ি পরিহিত ছিলেন। হুইল চেয়ারে বসা খালেদা জিয়ার পা থেকে কোমড় পর্যন্ত সাদা কাপড়ে ঢাকা ছিল। দীর্ঘ সময় আদালতে বসে থাকলেও কোনো কথা বলেননি। বেলা ২টায় তাকে আদালত থেকে নিয়ে যাওয়ার সময় মুখ কিছুটা কাপতে দেখা যায়।
খালেদা জিয়াকে আদালত কক্ষের নির্ধারিত স্থানে আনার পর উপস্থিত আইনজীবীরা তার সঙ্গে দেখা করেন। খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন তার আইনজীবী সিনিয়র অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন, আইনজীবী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রমুখ। এরপর পুলিশ সদস্যরা তার চারপাশে দাঁড়িয়ে যান। তখন আইনজীবীরা তাদের নির্ধারিত স্থানে ফিরে আসে। বেলা ১২টা ৩৬ মিনিটে আদালত বসে।
অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদনের শুনানিতে মওদুদ আহমদ বলেন, এটি একটি রাজনৈতিক মামলা। নাইকো চুক্তিটি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময় হয়েছিল। পরবর্তীতে বিএনপি সরকারের সময় তার শুধু ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়েছিল। শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে এ মামলা করা হয়েছে।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, যারা অপরাধ করছে, তাদের বিচার হচ্ছে না, বিচার হচ্ছে আমাদের। আমরা তো শুধু চুক্তির ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারই নাইকোর সঙ্গে চুক্তি করেছিল। আমরা শুধু ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছি। যারা করেছে তারা আজ আসামির বাইরে।
এরপর বিচারক আসামি এ কে এম মোশাররফ হোসেনের পক্ষে চার্জ শুনানি করতে বলেন। কিন্তু তার আইনজীবী অসুস্থ ছিলেন। এজন্য সময় আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। খন্দকার শহীদুল ইসলামের পক্ষে তার আইনজীবী সময় চাইলে আদালত তা নামঞ্জুর করে তার পক্ষে চার্জ শুনানির কার্যক্রম শেষ হয়েছে বলে আদেশ দেন। তার শুনানি অসমাপ্ত অবস্থায় আদালত ১২ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
এদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন খালেদা জিয়ার সাথে মামলার বিষয়ে কথা বলার জন্য সময় চাইলে আদালত এ বিষয়ে আদেশ দেন। আদালতের কার্যক্রম শেষে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তার সাথে কথা বলেন।
আদালতে উপস্থিত ছিলেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী আবদুর রেজ্জাক খান, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোজাম্মদ আলী, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, আহমদ আযম খান, বোরহান উদ্দিন, আমিনুল ইসলাম, জয়নুল আবেদীন মেজবা, জাকির হোসেন ভূইয়া, জুলফিকার আলী জুনু প্রমুখ। আর দুদকের পক্ষে মোশাররফ হোসেন কাজল। গত ৩ জানুয়ারি খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে বিশেষ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু হয়। এরপর ১৩ জানুয়ারি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও অন্যান্য আসামীর পক্ষে শুনানি শেষে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম মুলতবি করা হয়। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্ব খালেদা জিয়াসহ অন্যদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুদক । এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ মোট আসামি ১১ জন। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।