Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

রেমিট্যান্সে নতুন রেকর্ড

রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

নতুন বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ১৫৯ কোটি ডলারের রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা এক মাসের হিসেবে রেকর্ড। এর আগে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স এসেছিল ১৪৯ কোটি ২৪ লাখ ডলার; ২০১৪ সালের জুলাই মাসে।
এদিকে রেমিটেন্স বাড়ায় বাংলাদেশের বিশেী মুদ্রার ভান্ডারও (রিজার্ভ) সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে। গতকাল রোববার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩১ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার। ২০১৬ সালের পর রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলারের নীচে নামেনি।
বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিটেন্স সংক্রান্ত যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, ২০১৯ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ১৫৯ কোটি ডলারের রেমিটেন্স এসেছে। রেমিটেন্সের এই অংক গত বছরের জানুয়ারির চেয়ে ১৫ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং আগের মাস ডিসেম্বরের চেয়ে ৩২ দশমিক দুই শতাংশ বেশি।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে অর্থাৎ জুলাই-জানুয়ারি সময়ে ৯০৮ কোটি ১৩ লাখ (প্রায় ৯ দশমিক ০৮ বিলিয়ন) ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ে পাঠিয়েছিলেন ৮৩১ কোটি ২০ লাখ (৮.৩১ বিলিয়ন) ডলার। এ হিসাবে সাত মাসে রেমিটেন্স বেড়েছে নয় দশমিক ২৫ শতাংশ।
গত বছরে এক হাজার ৫৫৩ কোটি ৭৮ লাখ (১৫ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন) ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন তারা। এই অংক ২০১৭ সালের চেয়ে প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি।
রেমিটেন্স প্রবাহ আরও বাড়াতে মার্কিন ডলার-টাকার বিনিময় হার ৮৫ টাকা করার পরামর্শ দিয়েছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ভারত, চীন, ভিয়েতনামসহ অনেক দেশ মার্কিন ডলারের বিপরীতে তাদের মুদ্রার ব্যাপক অবমূল্যায়ন করেছে। বাংলাদেশেও হয়েছে; তবে এ দেশগুলোর তুলনায় খুবই কম।
তথ্য দিয়ে এই গবেষক বলেন, গত ছয় মাসে ভারতীয় মুদ্রা রূপির বিপরীতে ডলারের দর বেড়েছে সাত শতাংশের বেশি। সে তুলনায় বাংলাদেশী মুদ্রা টাকার বিপরীতে ডলারের দর বেড়েছে দশমিক ১৮ শতাংশ মাত্র। তিনি বলেন, রফতানি আয় এবং প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স বাড়াতে খুব শিগগিরই ডলারের দর ৮৫ টাকায় ‘স্থির’ করে দেয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি। তিনি জানান, আন্ত:ব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দর ৮৩ টাকা ৯৫ পয়সা হলেও ব্যাংকগুলো ৮৫ টাকা পর্যন্ত ডলার বিক্রি করছে।
টাকার বিপরীতে ডলারের তেজিভাব এবং হুন্ডি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের কারণে গত অর্থবছরের মতো চলতি অর্থবছরেও রেমিটেন্সে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে বলে মনে করছেন আহসান এইচ মনসুর। তবে গত অর্থবছরের মতো এবার হয়তো ১৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে না। ৭/৮ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি হবে হবে বলে জানান এই অর্থনীতির গবেষক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৮ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ১৩৭ কোটি ৯৭ লাখ ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। আর বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে এসেছিল ১২০ কোটি দুই লাখ ডলার।
২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি রেমিটেন্সের নিম্নগতি সরকারের নীতি-নির্ধারকদের কপালে ভাঁজ ফেলেছিল। রেমিটেন্স বাড়াতে মাশুল না নেওয়াসহ নানা ঘোষণাও দিয়েছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। কিন্ত এখন পর্যন্ত মাশুল কমানোর সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন হয়নি। স্থানীয় বাজারে ডলারের তেজিভাব এবং হুন্ডি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের কারণে গত অর্থবছর রেমিটেন্স বাড়ে। খরা কাটিয়ে বাংলাদেশ ২০১৭-১৮ অর্থবছর শেষ করে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে।
বর্তমানে এক কোটির বেশি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। তাদের পাঠানো অর্থ বাংলাদেশে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। বাংলাদেশের জিডিপিতে রেমিটেন্সের অবদান ১২ শতাংশের মত।



 

Show all comments
  • M.M. Atikol Islam ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩০ এএম says : 0
    তো প্রবাসীদের জন্য রাষ্ট কি করছে ??
    Total Reply(0) Reply
  • Farid Ul Haque ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩১ এএম says : 0
    প্রবাসিদের জন্য বাঁশ দিচ্ছে সরকার
    Total Reply(0) Reply
  • Rocqib Rocky ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩১ এএম says : 0
    সুবহানাল্লাহ
    Total Reply(0) Reply
  • Nasir Haidar ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৩ এএম says : 0
    আমরা বিদেশ থাকি বলেই দেশ কি বুঝতে পারী।দয়া করে আমাদের (পরবাশিদের) দেশে ফেরার সময় একটু একটু ভাল আচরণ করুন please please please.
    Total Reply(0) Reply
  • Shubhro Ahmed ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৩ এএম says : 0
    এখন রেমিটেন্স প্রকৃত কারণ হলো দু'টো- বিদেশে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে শ্রমিক যাচ্ছে আরো বেশী করে। এবং এখন টাকা আসছে আইনী পথে। বেআইনী পথ হুন্ডির মাধ্যমে নয়।
    Total Reply(0) Reply
  • Najrul Islam Sunny ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৩ এএম says : 0
    কালো টাকা সাদাকরণ প্রক্রিয়া যতদিন চলবে, রেমিটেন্সের পরিমাণ ততই বাড়বে,স্বাভাবিক।
    Total Reply(0) Reply
  • Tapu ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৪ এএম says : 0
    হায়রে টাকা, তুই না থাকলেও সমস্যা, থাকলেও সমস্যা। কারন তোর্ জোরেই হাসিনা আজ দেশ চালাছেচ।
    Total Reply(0) Reply
  • Shamim.faridpur ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৪ এএম says : 0
    রেমিটেন্স ই বাংলাদেশের উন্নয়নের মূল উৎস ।
    Total Reply(0) Reply
  • সব্যসাচী,আমেরিকা ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৫ এএম says : 0
    এত রেমিটেন্স পাঠাই কিন্তু পরিবারের জন্য উপহারের যেমন (পুরাতন আইফোন) এর উপর ট্যক্স কাটে শাহজালাল বিমান বন্দরে । আরও যে কত হেনস্তার শিকার হতে হয়। বহুবছর পরদেশে থেকে ক্লান্ত হয়ে দেশের মাটিতে পা দিতে গিয়ে বিমান বন্দরে স্বদেশীদের ব্যবহার কিযে কষ্ট দেয় যারা এর শিকার হয়েছেন তারা ছাড়া কেউ বুঝবেন না ।কেউকি নেই যে যে বিমান বন্দরে একটু মমতার, একটু সুন্দর ব্যবহার কারিদের নিয়োগ দেবে ? যাদের মুখে দেখব সততার স্বাগতমের হাসি? তবুও অনেক সুখে বুক ভরে যায় জন্মভুমি ভালবাসি সোনার এই বাংলাদেশে আসলে ।
    Total Reply(0) Reply
  • DELOWAR HUSSAIN ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৪ এএম says : 0
    Nice bangladesh
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রেমিট্যান্স

২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ